Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনা মোকাবিলায় বরাদ্দ কমছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১০ জুন ২০২২ ০৯:৫৬

ঢাকা: দেশের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপন করা হয়েছে জাতীয় সংসদে। ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার এই বাজেট প্রস্তাবনায় বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে। বিগত দুই অর্থবছরের বাজেটে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ মোকাবিলায় থোক বরাদ্দ রাখা হয় ১০ হাজার কোটি টাকা। তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তা কমিয়ে করা হয়েছে ৫ হাজার কোটি টাকা।

একইসঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেটে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখা পণ্যসামগ্রীর উৎপাদন ও প্রস্তুত করার কাঁচামাল আমদানির ওপর বিদ্যমান শুল্ক ও কর মওকুফের সুবিধা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন হলে দেশে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখা পণ্য সামগ্রীর (টেস্টিং কিট, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী বা পিপিই এবং করোনার সংক্রমণ শনাক্ত করা (আরটি-পিসিআর) কিটের দাম বাড়তে পারে।

জাতীয় সংসদে গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ জুন) ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনা উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন তিনি।

এ সময় তিনি জানান, প্রস্তাবিত বাজেটে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন ব্যয় মিলে বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালের প্রথমার্ধ থেকে এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ অতিমারির প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউয়ের প্রকোপে সারা বিশ্ব সংকটাপন্ন সময় অতিক্রম করছে ও ২০২২ এর প্রথমার্ধে এসেও বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিরাজ করছে। বাংলাদেশ এ অতিমারি থেকে জীবন-জীবিকা সুরক্ষাকল্পে স্বাস্থ্যখাত শক্তিশালী করাসহ সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতের যেকোনো জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য বিগত দুই বাজেটেই আমরা ১০ হাজার কোটি টাকা করে থোক বরাদ্দ রেখেছিলাম। যদিও দেশে করোনা সংক্রমণ বর্তমানে অনেকটাই স্তিমিত হয়ে এসেছে, কিন্তু এর সম্ভাব্য পুনরাবির্ভাবের আশঙ্কা এখনো রয়ে গেছে, কারণ বিশ্বের অনেক দেশেই এখনো এ অতিমারির প্রকোপ বিরাজমান। সুতরাং কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও তজ্জনিত কারণে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সংঘটিত ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে আগামী অর্থবছরেও স্বাস্থ্যখাতের জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।

তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় বিশেষ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে টেস্টিং কিট, বিশেষ ধরনের মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক ও পিপিই উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল এবং করোনাভাইরাস শনাক্ত করার আরটি-পিসিআর কিট প্রস্তুত করতে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানির ওপর প্রযোজ্য সমুদয় শুল্ক-কর মওকুফ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী দিক-নির্দেশনায় দেশে এখন করোনা পরিস্থিতির সমূহ উন্নতি ঘটেছে দাবি করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এসব পণ্যের ওপর প্রদত্ত বিদ্যমান রেয়াতি সুবিধা আগামী ৩০ জুনের পর রহিত করা হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ এর মতো জটিল অতিমারি মোকাবিলা, দ্রুত সাড়া দেওয়া ও নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ, গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং প্রাতিষ্ঠানিক, কারিগরি দিক ও দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রে সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়টি সরকার গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছে। বিগত দুটি বাজেটেই কোভিড-১৯ মোকাবিলা ও স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য বিপুল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

প্রস্তাবিত এই বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান রেয়াতি সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রস্তাবনাও করেন অর্থমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, দেশে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। তবে সংশোধিত হয়ে এই বাজেটের আকার কমে দাঁড়ায় ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ।

সারাবাংলা/এসবি/এনএস

২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট করোনা মোকাবিলা জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর