তুলশীগঙ্গার তীরে বসেছে ঘুড়ির মেলা
১০ জুন ২০২২ ১৯:৩৭
জয়পুরহাট: জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার তুলশীগঙ্গা নদীর তীরবর্তী সন্ন্যাসীতলায় মন্দিরের পাশে বসে দুই দিনব্যাপী ঘুড়ির মেলা। গ্রামীণ এ মেলা সন্ন্যাসতলীর ঘুড়ির মেলা হিসেবে পরিচিত। মেলার সঠিক ইতিহাস কেউ বলতে না পারলেও জনশ্রুতি রয়েছে সন্ন্যাসী পূজাকে ঘিরে ২০০ বছরের অধিক সময় আগে মেলাটির উৎপত্তি ঘটে। সেই থেকে প্রতি বছর বাংলা জৈষ্ঠ্য মাসের শেষ শুক্রবার বিকেলে বসে গ্রামীণ এ মেলা। মেলায় আশপাশের গ্রাম ছাড়াও দূর দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ আসে।
জয়পুরহাটের এই সন্ন্যাসতলীতে সনাতন ধর্মের লোকজন মন্দিরে সন্ন্যাসীকে পূজা দিয়ে দিনটি উৎযাপন করলেও এটি মুলত হিন্দু-মুসলিমের একটি মিলন মেলা। বিকেলের পর সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মেলায় মানুষের ঢল নামে। মেলাকে ঘিরে জামাই এবং স্বজনদের আপ্যায়ন চলে মেলা সংলগ্ন আশপাশের কয়েক গ্রামে। রঙ বেরঙয়ের ঘুড়ি মেলার মুল আকর্ষন হলেও বর্তমানে মেলায় বসে রকমারি মিষ্টির দোকান। যেখানে বিভিন্ন ধরণের মিষ্টি ও চিনির শাহী জিলাপি আকৃষ্ট করে মেলায় আসা দর্শকদের। মেলায় বাঁশ কাঠ ও লোহার তৈরি সংসারের বিভিন্ন সামগ্রী ও মাছ ধরার নানা যন্ত্রের আমদানিও নজর কাড়ে মানুষের। শিশুদের খেলাধুলার জিনিসপত্র এবং কসমেটিকস এর দোকানও বসে দুই দিনের এ মেলায়। জামাই-মেয়ের পাশাপাশি স্বজনদের আপ্যায়নের রীতি এলাকায় চলে আসছে এ মেলাকে ঘিরেই।
স্থানীয় জিয়াপুর গ্রামের হারুনুর রশীদ, মাতাপুর গ্রামের মতিউর রহমান বলেন, তাদের বাবা-দাদারা এই মেলা করতে এসেছিল, তাই তারাও এই মেলাতে কেনাকাটা করতে আসেন।
এ মেলাকে ঘিরে আশে পাশের জেলা থেকে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে। মেলাতে আসা বগুড়ার শেরপুর উপজলার অমিত মণ্ডল, দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা সাগর হোসেন বলেন, প্রতি বছর এই মেলায় আসেন শুধু ঘুড়ি কিনতে।
মেলা কমিটির সভাপতি মন্টু চন্দ্র বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারো বসেছে সন্ন্যাসতলী মেলা এই মেলা প্রায় দু’শ বছরের পুরাতন মেলা। এ মেলা হিন্দু মুসলিম সবাই মিলে পরিচালনা করে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা এ মেলায় আসেন।
ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, এই সন্ন্যাসতলী মেলার মূল আর্কষণ ঘুড়ি এ মেলাকে ঘিরে আশে পাশের জেলা থেকে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে। মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
সারাবাংলা/একেএম