Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিএনপিকে রাজপথেই সমুচিত জবাব— কঠোর হুঁশিয়ারি আওয়ামী লীগের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১০ জুন ২০২২ ২০:৫৫

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি ও হত্যার হুমকির প্রতিবাদে রাজপথে শক্তির মহড়া অব্যাহত রেখেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলের ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের পর এবার রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। সেই বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে বিএনপিকে দেওয়া হয়েছে কঠোর হুঁশিয়ারি।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কিছু হলে আওয়ামী লীগ ঘরে বসে আঙুল চুষবে না। আওয়ামী লীগ রাজপথে আছে, রাজপথে থাকবে। রাজপথেই বিএনপিকে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১০ জুন) দুপুরে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের (আইইবি) সামনে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের হত্যার হুমকি ও কটূক্তির প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ আয়োজন করে।

আরও পড়ুন- রাজপথে শক্তির মহড়া আওয়ামী লীগের, অব্যাহত থাকবে নির্বাচন পর্যন্ত

এদিন ‍দুপুর দেড়টার পর থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে মহানগর দক্ষিণের নেতাকর্মীরা রমনার আইইবি’র সামনে উপস্থিত হতে শুরু করেন। আইইবি গেটের সামনে দুইটি ট্রাকের অস্থায়ী মঞ্চে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নেতারা। হাজার হাজার নেতাকর্মীদের উপস্থিতির কারণে শুক্রবার ছুটির দিন হলেও আশপাশের এলাকায় যানজট তৈরি হয়। এর জন্য সমাবেশ থেকে ঢাকাবাসীর কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন মহানগর নেতারা। পরে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফীর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও এস এম কামাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কেন্দ্রীয় সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরাজী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশেনের মেয়র ফজলে নূর তাপসসহ মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

বিজ্ঞাপন

সমাবেশে বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ রাজপথে ছিল, আওয়ামী লীগ রাজপথে আছে। আওয়ামী লীগ রাজপথে থাকবে। সুশৃঙ্খল ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা আগামী নির্বাচনে অংশ নেব এবং বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাব ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা নিয়ে কটূক্তি করলে আমাদের আবেগে লাগে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে খারাপ কথা বললে আমাদের খারাপ লাগে। বঙ্গবন্ধু পরিবারকে অপমান করলে আমরা অপমানিত বোধ করি। শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিলে আমাদের আবেগ আহত হয়। আমরা সহ্য করতে পারি না। আমরা কারও বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করি না। বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েও রাস্তার মাঝে বক্তৃতা করে গেছি। কিন্তু আজ বিএনপি আবার ষড়যন্ত্র-হুমকি শুরু করেছে। আমি বলে দিতে চাই, পঁচাত্তর আর ২০২২ এক কথা নয়।

দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে খুনিদের পুরস্কৃত করেছেন, ইনডেমনিটি দিয়েছেন। শেখ হাসিনার কিছু হলে আওয়ামী লীগ ঘরে বসে আঙুল চুষবে না। আওয়ামী লীগ রাজপথে আছে, রাজপথে থাকবে, রাজপথে থেকে তার সমুচিত জবাব দেবে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আজকের সমাবেশে এটাই প্রমাণিত হয়েছে। আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যার অপমান কোনোদিন সহ্য করব না।

বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, তোমরা মিথ্যাচার করো, যত ষড়যন্ত্র করো— আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন করে উপযুক্ত সমুচিত জবাব দেবো।

আরও পড়ুন- আঘাত করলে পাল্টা আঘাতের জন্য আওয়ামী লীগ প্রস্তুত: নানক

সমাবেশে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, বিএনপির ফখরুল সাহেব পঁচাত্তরের হাতিয়ার কোথায় লুকিয়ে রেখেছেন, বাইর করেন জলদি। না হলে এই জনতা পঁচাত্তরের হাতিয়ার ঘর থেকে বাইর করে আনবে।

কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক এই নেতা আরও বলেন, অনেক খেলা হইছে। এখন বিএনপিকে বলতে চাই— রাজপথে দেখা হবে, রাজপথেই মোকাবিলা হবে। আর হুমকি-ধমকি দিয়েন না। হুমকি-ধমকিতে আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে না।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মায়া বলেন, আর বেশি কথা নয়। এখন প্রস্তুত হয়ে যান। আগামী বছর নির্বাচন। সেই নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে জয়লাভ করাতে হবে। আর ওই বিএনপি-জামায়াত, পঁচাত্তরে খুনিদের রাজপথেই মোকাবিলা করা হবে।

বিএনপি নেতাকর্মীদের দেওয়া ‘পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’ স্লোগানের সমালোচনা করে অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, এটি কেবল স্লোগান নয়, এটি তাদের মনের কথা, হৃদয়ের কথা। এদের পূর্বসূরী খুনি জিয়াউর রহমান জাতির জনককে হত্যা করেছে। এরা একাত্তরে ঘাতকদের প্রেতাত্মা। এদের নেতা তারেক রহমান ২০০৪ সালে আমাদের নেত্রীকে হত্যার চেষ্টা করেছে। এরা এখনো পিছু হটে নাই। এরা সুযোগ খুঁজছে, কীভাবে আমাদের প্রিয় নেত্রীকে হত্যা করা যায়।

তিনি আরও বলেন, দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে, সেই মুহূর্তে আবারও জাতির পিতার কন্যাকে হত্যা করার স্লোগান দিচ্ছে। এই সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে, একাত্তরে প্রেতাত্মাদের বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে যতদিন পর্যন্ত বিতাড়িত করা না যাবে, ততদিন পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতিতে শান্তি ফিরে আসবে না। তাই আজ আমাদের শপথ নিতে হবে, এই অপশক্তিকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করে গণতন্ত্রকে নিরাপদ রাখতে হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে নিরাপদ করতে হবে।

শেখ হাসিনাকে দেওয়া হত্যার হুমকি প্রত্যাহার করে বিএনপিকে জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান মাহবুবউল আলম হানিফ। তিনি বলেন, আপনাদেকে সাত দিন সময় দেওয়া হয়েছে। এই সাত দিনের মধ্যে যদি আপনারা বক্তব্যের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা না করেন, তাহলে এই বাংলাদেশের জনগণ রাজপথে তার জবাব দেবে। এর জন্য আপনাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।

এর আগে গত বুধবার (৮ জুন) দুপুরে শেখ হাসিনাকে বিএনপি-জামায়াতের হত্যার হুমকি ও তাকে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। ওই বিক্ষোভ সমাবেশ থেকেও বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। সেদিন তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড় হয়ে হোটেল সোনারগাঁওয়ের সামনে থেকে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে গিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষ হয়।

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

ওবায়দুল কাদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ সমাবেশ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর