টাঙ্গাইলে রঙিন মাছে ভাগ্য বদল
১১ জুন ২০২২ ০৮:৫৬
টাঙ্গাইল: ডোবা কিংবা পুকুরে নয়, নিজ বাড়ির উঠানে রঙিন মাছের করে চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন ফরিদ কোম্পানী নামে এক উদ্যোক্তা। তার স্বপ্ন এই রঙিন মাছের চাষ রাঙিয়ে তুলবে তার জীবন।
শখের বসে অ্যাকুরিয়ামে রাখার মতো মাছই পাওয়া যায় ফরিদের বাড়িতে। নিজ তৈরি হাউজের পানিতে লাফালাফি করছে বাহারি রঙের রঙিন মাছ। রয়েছে লাল, নীল, হলুদ, কমলা, বাদামিসহ বর্ণিল মাছের ছড়াছড়ি। এ উদ্যোক্তা নিজেই খামারি প্রজেক্টের আঙিনায় তৈরি করেছেন হাউজ। তার হাউজে রয়েছে গোল্ড ফিস, কমেট, কৈ কার্ভ, ওরেন্টা গোল্ড, সিল্কি কৈ, মৌলি সহ প্রায় ১০ জাতের মাছ। যা রঙিন বাহারি রঙে ছড়াচ্ছে সৌন্দর্য্য। আর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রঙিন মাছের সমারোহ দেখতে তার বাড়ির গেটে থাকে মানুষের ভিড়।
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার শালিয়াবহ গ্রামে কৃষিবিদ চাষা আব্দুল আজিজ কোম্পানীর ছেলে ফরিদ কোম্পানীর গড়ে তোলা এই রঙিন মাছের খামার। তরুণ এই উদ্যোক্তা বাবার সঙ্গে ছোট থেকেই কৃষিকাজে নিয়োজিত ছিলেন। আধুনিক কৃষিতে প্রশিক্ষণও নিয়েছেন তিনি। তিনি উপজেলার সাগরদিঘী কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে বাবার কৃষি প্রজেক্টে সহযোগিতার পাশাপাশি উদ্যোক্তা হয়েছেন। দুই বছর যাবৎ বাবা আব্দুল আজিজ কোম্পানীর খামারি প্রজেক্টের আঙিনায় হাউজ তৈরি করে মাছের পোনাও উৎপাদন করেন। বেশি চাহিদা থাকায় তা বিক্রি করছেন ভালো দামে। কেউ কেউ দেখতে এসেও পছন্দ করে ক্রয় করছেন। তা সৌন্দর্য্য বাড়াতে অ্যাকুরিয়ামে পালন করছেন।
ফরিদ কোম্পানী জানান, ২০১৮ সালে এক বাসায় একটি অ্যাকুরিয়াম শপে রঙিন মাছ দেখে ভালো লাগে তার। এরপর জানতে পারেন মাছগুলি অনেক মূল্যবান। রঙিন মাছগুলো বিদেশ থেকে আনা হয়। বর্তমানে দেশেও এই মাছের চাষ হচ্ছে। সেখান থেকেই তার রঙিন মাছ চাষের পরিকল্পনা মাথায় আসে তার।
তিনি জানান, বছরের শুরুতে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে পলিথিন বিছিয়ে একটি হাউজ তৈরি করে অল্প কয়েকটি রঙিন মাছ ছাড়েন। দুই মাসের মধ্যে ছোট মাছগুলো বেশ বড় হয়ে যায়। আরও মা মাছ সংগ্রহ করেন কিশোরগঞ্জ, মোহনগঞ্জ ও ফুলবাড়িয়া থেকে। মা মাছের ডিম থেকে রেণু পোনা উৎপাদিত হয়, যা বাজারে বিক্রি করেন। যারা অ্যাকুরিয়ামের ব্যবসা করেন তারা এই মাছগুলো ক্রয় করেন। বর্তমানে তার খামারে ১০ প্রজাতির মাছ রয়েছে। যার একটি মাছ বছরে প্রায় ৩ হাজার রেণু পোনা দেবে। ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি হলে এই মাছ বিক্রি করা হয়। বছরে একবার ডিম দেয় ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ডিম ফোটে। এ সময় অক্সিজেন দেওয়া থেকে নানা ভাবে সতর্ক থাকতে হয়।
ঘাটাইল উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোছা. খাদিজা খাতুন জানান, এ অঞ্চলে রঙিন মাছ চাষের জন্য উপযোগী। কৃষিবিদ চাষা আব্দুল আজিজ কোম্পানীর ছেলে ফরিদ কোম্পানীর গড়ে তোলা এই রঙিন মাছের খামার করে সফলতা লাভ করেছে। তার দেখা দেখি আরও অনেকে এ রঙিন মাছ চাষে উৎসাহিত হচ্ছে।
সারাবাংলা/এএম