Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘টাকা পাচারকারী হিসেবে বিএনপির রেকর্ড, বিশ্বরেকর্ড হয়ে গেছে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১১ জুন ২০২২ ২০:১৮

ঢাকা: বাংলাদেশের মানুষ জানে কারা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে। পাচারকারী হিসেবে বিএনপির রেকর্ড, বিশ্বরেকর্ড হয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, দেশের অনেক টাকা পাচার হয়ে গেছে। বিভিন্ন দেশে এই ধরনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যদি এই সুযোগের সুফল না আসে তাহলে সুযোগ রাখব কেন? এবারের বাজেটে একটা সুযোগ করা হয়েছে, এর থেকে সুফল আমরা পেতে পারি, এই সম্ভাবনাকে সামনে রেখে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১১ জুন) বিকেল ৪টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাজেট নিয়ে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন দলটির সাধারণ সম্পাদক। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

অর্থ লুটপাটপারী ও পাচার সংক্রান্ত বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ও দেশের একটি চিহ্নিত মহলসহ ক্রমাগতভাবে বাংলাদেশ থেকে বিদেশ অর্থ পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন। তাদের বক্তব্য যদি সত্য হিসেবে ধরে নেই তাহলে ৭ শতাংশ কর দানের মাধ্যমে যদি কেউ টাকা দেশে নিয়ে আসে তাহলে তো মির্জা সাহেবদের খুশি হওয়ার কথা। তিনি কেন এখন এ ধরনের অভিযোগ করছেন। অর্থ পাচারের অভিযোগ তুলবেন আর যখন আপনার কথা অনুযায়ী সে টাকা ফেরত আসে তখনও অভিযোগ করবেন; সেটা তো আপনাদের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড; দ্বিচারিতা।’

‘তাহলে তো আমাকে বলতে হয়, ফখরুল সাহেব ভুলে কি গিয়েছেন? যখন ক্ষমতায় ছিলেন আপনার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অনৈতিকভাবে দুই দফায় দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় কালো টাকা সাদা করেছিলেন এবং কর অফিসে জরিমানা হিসাবে ৩৪ লাখ টাকা জরিমানা দিয়েছিলেন’— বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

ওবায়দুল কাদের বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ জানে কারা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে। পাচারকারী হিসেবে আপনাদের রেকর্ড, বিশ্বরেকর্ড হয়ে গেছে। বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। আমরা তো উচ্চারণ করি বেগম খালেদা জিয়া, তারা বলে ‘হাসিনা’। তারা বলে তুই, হাসিনা তুই। হত্যার হুমকি দেয়। আমরা কখনো বেগম জিয়াকে রাস্তায় ভাষায় সম্বোধন করি না। কিন্তু তারা রাস্তার ভাষায় বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রীকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।’

বঙ্গবন্ধু কন্যা ক্লান্তিহীনভাবে দারিদ্রবিমোচনের জন্য কাজ করছেন। যার কারণে দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্যে বিভিন্ন কল্যাণমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছেন— সে দিকটাও তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘এটা কি ভুলে গেছেন, বেগম জিয়ার দুই পুত্রের দুর্নীতির টাকা সিঙ্গাপুর এবং আমেরিকায় পাচার করেছে। যে অর্থ এফবিআই তদন্তে ধরা পড়েছে। সিঙ্গাপুর আমেরিকায় অর্থ পাচার করে বিশ্বরেকর্ড স্থাপন করেছেন। পরবর্তী সময়ে সরকার যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আংশিক টাকা দেশে ফেরতে আনতে পেরেছে। বাকি টাকা কোথায়, কীভাবে ফেরত দেবেন? ফখরুল সাহেব আপনাকে প্রশ্ন করছি।

প্রস্তাবিত বাজেটে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত নিয়ে আসার উদ্যোগে পাচারকারী উৎসাহিত হবেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেখুন এটা ঠিক সেভাবে দেখলে হবে না। দেশের অনেক টাকা পাচার হয়ে গেছে। বিভিন্ন দেশে এই ধরনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আমরা সেই সুযোগটা দিচ্ছি। যদি এই সুযোগের সুফল না আসে তাহলে আমরা সুযোগ রাখব কেন? এবারের বাজেটে একটা সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর থেকে সুফল আমরা পেতে পারি, এই সম্ভাবনাকে সামনে রেখে।’

রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় রোধে এই বাজেটে কোনো উদ্যোগে নেই কেন?- এমন এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা বাজেটে কেন? এটা সরকারের নীতি। সেটা প্রাইম মিনিস্টার অলরেডি ঘোষণা দিয়েছেন। সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ যাওয়া নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন অকারণে। কথায় কথায় চলে যাবে, যার ইচ্ছা সে চলে যাবে। বিদেশে চলে যাবে, এটা মন্ত্রী হোক, কর্মকর্তা হোক, কারও ব্যাপারে এটা আর উৎসাহিত করা হবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতাদের মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এসএম কামাল হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, শ্রম সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় কার‌্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন, শাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বর্তমান সরকারের ২২তম এবং বাংলাদেশের ৫১তম বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন। ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ প্রতিপাদ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রস্তাবিত বিধান অনুযায়ী বিদেশে অবস্থিত যে কোনো সম্পদের ওপর কর পরিশোধ করা হলে আয়কর কর্তৃপক্ষসহ যেকোনো কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করবে না। বিদেশে অর্জিত স্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে আনা না হলে এর ওপর ১৫ শতাংশ, বিদেশে থাকা অস্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে আনা না হলে ১০ শতাংশ ও বাংলাদেশে পাঠানো (রেমিটকৃত) নগদ অর্থের ওপর ৭ শতাংশ হারে করারোপের প্রস্তাব করেন তিনি। এ সুবিধা ২০২২ সালের ১ জুলাই হতে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।’

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

টাকা পাচারকারী বিএনপির রেকর্ড বিশ্বরেকর্ড

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর