শিবগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের কর্মী নিহতের ঘটনায় মামলা
১১ জুন ২০২২ ২১:০৩
বগুড়া: শিবগঞ্জে অবৈধ বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে সংঘর্ষে পল্লী বিদ্যুতের কর্মী নিহতের ঘটনায় শিবগঞ্জ থানায় ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করে শনিবার (১১ জুন) দুপুরে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিসের এজিএম রফিকুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করে। মামলা নং-১৮। মামলায় উপজেলার চন্দনপুর গ্রামের আব্দুল গাফ্ফার আলীর ছেলে বন্দরের ডিস ব্যবসায়ী রেজাউল করিমকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
মামলার পর আটমূল ইউনিয়নের বড় বেলঘড়িয়া গ্রামের ইজার উদ্দিনের ছেলে ইমরান কাজী (৩২), চন্দপুর গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে আতাউর রহমান (২৮), একই গ্রামের খাজা মিয়ার ছেলে বাবর আলী (২৭), পরনান্দপুর গ্রামের সাখাওয়াত হোসেনের ছেলে আবু সাইদ (৫০) ও তার ছেলে সোহেল রানাকে (২৬) গ্রেফতার করে হাজতে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার রাত ১১টার দিকে আটমুল ইউনিয়নের ভাইয়েরপুকুর বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। হামলায় পল্লী বিদ্যুতের অফিস সহায়ক আব্দুল হান্নান নিখোঁজ হয়। পরে খবর পেয়ে বাদলাদিঘী পাথারের ধানক্ষেত থেকে ২টার দিকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আটমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের সাকাওয়াত হোসেনের ছেলে ভাইয়েরপুকুর বাজারের ব্যবসায়ী আবু সাইদ ও আব্দুল আলিম দীর্ঘদিন অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে ব্যবসা করছিলো। এমন খবরের ভিত্তিতে উপজেলার পিরব পল্লী বিদ্যুৎ সাব জোনাল অফিসের আওতায় অফিসের এজিএম রকিবুজ্জামানসহ লাইনম্যান, মইন উদ্দিন, বিকাশ চন্দ্র সরকার, পিন্টু প্রামানিক, ফারুক হোসেন, আজিজুল হক, অফিস সহায়ক আব্দুল হান্নানসহ ঘটনাস্থলে যান। তারা দেখতে পান আবাসিক সংযোগকৃত বাড়িতে অবৈধভাবে মিটার বাইপাস করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হচ্ছে। তারা অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারের সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেন।
এতে আবাসিক বিদ্যুৎ ও ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডর সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে আব্দুল হালিম, আবু সাইদ, বুলবুল ইসলাম ও সোহাগ বিদ্যুৎ অফিসের লোকজনের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারপিট করে।
স্থানীয় আটমূল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন বলেন, ‘আমার জানামতে এখানে কোনো গণপিটুনির ঘটনা ঘটেনি। তবে ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যবসায়ী রেজাউল করিমের অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ঘটনা নিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে পল্লী বিদ্যুতের অফিস সহকারী হান্নান দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ স্থানীয় একটি বিল থেকে লাশ উদ্ধার করে।’
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক কুমার দাস বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। গত রাত ২টার দিকে আব্দুল হান্নানের লাশ আটমূল ইউনিয়নের বাদলাদিঘী ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে হান্নানের আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
সারাবাংলা/এমও