Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কুসিক নির্বাচনে চলছে শেষ দিনের প্রচারণা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৩ জুন ২০২২ ১৫:৫৬

কুমিল্লা থেকে: কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ১৫ জুন (বুধবার)। নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটারদের কাছে নানা রকম প্রতিশ্রুতি ও ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রচারণা শেষ হচ্ছে আজ সোমবার (১৩ মার্চ) রাত ৮টায়। প্রচারণার শেষ বিকেলে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা। ভোটারদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন নানা আশ্বাস। নগরীর বিভিন্ন স্থানে মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, গুচ্ছ আকারে বৈঠক ও গণসংযোগসহ নানাভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৩ জুন) প্রচারণা শেষ দিনের সকালে নিজ নির্বাচনি কার্যালয়ে অবস্থান করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত। সেখান থেকে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে যান। বিকেল ৫টায় ৬ নং ওয়ার্ডের বল্লভবপুরে নির্বাচনি প্রচারণা চালাবেন নৌকা মার্কা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া এই মেয়র প্রার্থী। প্রচারণার শেষ ভাগে নগরীর ১০ নং ওয়ার্ডের রানীরবাজার এলাকায় উঠান বৈঠকে যোগ দিয়ে নির্বাচনি প্রচারণা শেষ করবেন আরফানুল হক রিফাত।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী জানিয়ে আরফানুল হক রিফাত সারাবাংলাকে বলেন, নৌকা মার্কা দেশের স্বাধীনতা এনেছে। নৌকা মার্কায় দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। এই নৌকা মার্কার কারণেই দেশের উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের কুমিল্লা সেই উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কারণে। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আমাদের এলাকার সংসদ সদস্য যেসব প্রকল্প গ্রহণ করেছেন সেগুলো দুর্নীতির কারণে আলোর মুখ দেখতে পারেনি। কারণ সংসদ সদস্য এলাকার জন্য প্রকল্প ও বরাদ্দ নিশ্চিত করবেন কিন্তু সেটা বাস্তবায়নের জন্য কাজ তো করবে মেয়র। কিন্তু সেটা আমাদের এখানে হয়নি। তাই কুমিল্লা উন্নয়নের জন্য এবার সবাই নৌকা মার্কার প্রতীককেই বেছে নেবে বলে আশা করছি।

তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে কুমিল্লায় একজন ব্যক্তি দায়িত্বে ছিলেন। নগরবাসীকে তিনি কী দিতে পেরেছেন তা সবাই দেখছে। অবস্থা এমন যে তার উন্নয়নের কারণে আজ শহরে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে, সেখানে নৌকা চালাতে হয়। যানজট কমানোর কোনো উদ্যোগ নেয়। বরং নিজের সম্পত্তির অনেক উন্নতি হয়েছে। একইসঙ্গে তার আশপাশে যারা আছে তাদেরও। আর তাই কুমিল্লার নাগরিকরা পরিবর্তন দেখতে চায়। তারা লুটপাটকে আর প্রশ্রয় দেবে না।

এদিকে প্রচারণার শেষ দিনে নিজ কার্যালয়েই অবস্থান করছিলেন টেবিল ঘড়ি প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, আমার প্রচারণা করার তেমন কিছু নেই। জনগণ জানে আমি এই নগরীর জন্য কতটা করেছি। আমি যখন এইখানে দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন কিছু ছিল না। একটা পরিকল্পনা ছাড়া শহর আমাকে দেওয়া হয়। সেখান থেকে নানাভাবে আমি চেষ্টা করে গেছি কাজ করার। জনতার কাছে আমি যা ওয়াদা করেছিলাম তার প্রায় ৭০ ভাগই পূরণ করেছি। বাকি ৩০ ভাগ আমি যদি এবার মেয়র পদে নির্বাচিত হই, তবে অবশ্যই শেষ করব।

এ সময় কুমিল্লার স্থানীয় ভাষায় মনিরুল হক সাক্কু বলেন, আমি কাম করছি কুমিল্লার মাইনসের লাইজ্ঞা। কোনো নেতার দিকে তাকাইয়া না। সাধারণ মাইনসে যহন যা কইছে আমি হেই কাম কইরা দিছি। হেরা কয় খালি আমার থাইক্কাই সেবা পাইছে তারা। অন্য কেউরে চোক্ষেও দেখে নাই। আর তাই এই শহরের কেউ কইত পারত না আমি কাউরে ফিরাইয়া দিছি। যেহানেই যাইতিয়াছি, মানুষ এবারও কইতাছে সাক্কু ভাই আমনেরে আমডার দরকার। আমিও মাইনসের লাইগ্গা নির্বাচনে খাড়াইছি।

নির্বাচন কমিশনের কিছুটা সমালোচনা করে সাক্কু বলেন, আমার খালী একটাই ডর। আর তা হইলো, হেরা তো খালী মুখেই কথা কয়। কিন্তু অভিযোগের তো কোনো সুরাহার করতে পারে নাই। মাইনসে যারে ভালো লাগব, তারে ভোট দিব- এইটা লইয়া ভাবার কিচ্ছু নাই। কিন্তু তারার ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার লাইগা যে পরিবেশ দরকার সেটা তো নিশ্চিত করা প্রয়োজন। হেইডাই আমার ডর খালি।

নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে আরেকজন আলোচিত প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার। ঘোড়া প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া এই তরুণ প্রার্থী নিজের জয়ের বিষয়ে আশাবাদী।

মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী এই প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারণার শেষ ভাগে ১৭ নং ওয়ার্ডের সুজানগরে উঠান বৈঠকে অংশ নিবে। এর পরেই শেষ হবে তার নির্বাচনী প্রচারণা। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই মানুষের কাছ থেকে হাজারো অভিযোগ পাচ্ছি লুটেরাদের বিষয়ে। সবাই বলছে আগে যারা দায়িত্বে ছিল তারা কেউই কুমিল্লার উন্নয়নের জন্য কিছু করে নাই। সবাই মিলে খালি উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ পাওয়া টাকা লুট করেছে। আর তাই জনগণ এবার কোনো দানবকে ভোট দেবে না। দল-মত-নির্বিশেষে সবাই আমাকে পরামর্শ দিয়েছিল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য। আর তারাই এখন আমাকে ভোট দিবে। কারণ কুমিল্লার মানুষ উন্নয়ন চায়।

তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত কুমিল্লার নির্বাচনী পরিবেশ শান্ত আছে। পরিস্থিতিও বলা যায় ভোটারদের অনুকূলে। কিন্তু ভোটের দিন নিয়ে আমরা শঙ্কায় আছি। কারণ সদরের এমপি এলাকায় রয়ে গেছেন। নির্বাচন কমিশন তাকে নির্দেশনা দিলেও তিনি সেটা মানেন নি। নানাভাবে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে লেভেলপ্লেয়িং ফিল্ড বজায় থাকছে না।

প্রসঙ্গত, কুসিক নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন পাঁচজন প্রার্থী। এছাড়াও কাউন্সিলর পদে ১০৮ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৬ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১৫ জুন। এবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়া হবে। এই সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ১৭ হাজার ৯২, পুরুষ ভোটার এক লাখ ১২ হাজার ৮২৬।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের এটি তৃতীয় নির্বাচন। এর আগে দুই নির্বাচনেই মেয়র পদে ভোটে নির্বাচিত হন মনিরুল হক সাক্কু। প্রথমবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং দ্বিতীয়বার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।

সারাবাংলা/এসবি/এএম

আরফানুল হক রিফাত কুসিক নির্বাচন কুসিক নির্বাচন ২০২২ টপ নিউজ মনিরুল হক সাক্কু

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর