Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রৌমারীতে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, বরাদ্দ পায়নি পানিবন্দিরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৪ জুন ২০২২ ১৯:৫১

কুড়িগ্রাম: গত দুই সপ্তাহের টানা বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বসতবাড়ির চারদিকে পানি থাকায় ব্যাহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। এরই মধ্যে অনেক পরিবারে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। তবে তালিকা তৈরি না হওয়ায় এখনো ত্রাণ তৎপরতা শুরু করতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য বলছে, জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, দুকুমারসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বেড়েছে। তবে এখনো এসব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

স্থানীয়রা বলছেন, গত পাঁচ দিন ধরে রৌমারী উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা নদী জিঞ্জিরাম, ধরনী ও কালজানির পানি বাড়ার কারণেই মূলত উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। ফলে পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন উপজেলার চার ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। উজানের পাহাড়ি ঢলের লালচে কাদা পানিতে জমির ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। সঙ্গে নিজেদের খাবারের সংকটও রয়েছে। চারণভূমি তলিয়ে থাকায় গবাদি পশুর খাদ্যসংকট নিয়েও বিপাকে পড়েছেন বন্যা কবলিতরা।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, রৌমারী উপজেলায় প্রায় ২২৩ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। কাদামাখা পানিতে তলিয়ে থাকা উঠতি আউশ ধান, পাট, মরিচ, কাউন ও তিলসহ বিভিন্ন সবজি জাতীয় ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের কৃষক সেফাত উল্ল্যা বলেন, আমার কাউন ক্ষেত ও সবজি ক্ষেত পাঁচ দিন ধরে পানিতে তলিয়ে আছে। কোনো ফসলই বোধহয় বাঁচাতে পারব না।

সদর ইউনিয়নের বাওয়াইর গ্রামের ছপিয়াল হক বলেন, চারদিকে বন্যার পানি। কোনো কাজ নেই। পরিবার-পরিজন নিয়ে অতি কষ্টে দিনযাপন করছি। কিন্তু কারও কাছ থেকে কোনো সহায়তাও পাচ্ছি না।

যাদুরচর ইউনিয়নের পুরাতন যাদুরচর গ্রামের আমজাদ হোসেন বলেন, পানিবন্দি অবস্থায় থাকলেও এখনো কোন সহায়তা পাইনি। চেয়ারম্যান-মেম্বারদের জিজ্ঞাসা করলে বলছে, তারা কোনো বরাদ্দ পায়নি।

জানতে চাইলে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে জমা দিয়েছি। কিন্তু সরকারিভাবে এখনো কোনো বরাদ্দ পাইনি। বরাদ্দ পেলে তা বন্যা কবলিতদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

এদিকে, উপজেলার ২২ কিলোমিটার পাকা ও ৩৫ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক পানিতে তলিয়ে থাকায় ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এ অবস্থায় নৌকা ও কলা গাছের ভেলায় যাতায়াত করছেন বন্যা কবলিতরা।

রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী জোবায়েত হোসেন জানান, বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা দ্রুত মেরামত করা হবে।

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, কিছু এলাকায় পানি কমলেও উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ শেষ হলেই ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।

সারাবাংলা/টিআর

ত্রাণ বরাদ্দ রৌমারী বন্যা পরিস্থিতি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর