Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভাড়াটিয়ার বিড়াল হত্যার অভিযোগে বাড়িওয়ালার নামে জিডি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৫ জুন ২০২২ ২০:৩২

ঢাকা: ভাড়াটিয়ার পোষা বিড়াল হত্যার অভিযোগে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের এক বাড়িওয়ালার বিরুদ্ধে থানায় জিডি হয়েছে।

বুধবার (১৫ জুন) বিকেলে মোহাম্মদপুর থানায় বিড়ালটির মালিক ইউসুফ হাওলাদার এই জিডিটি করেন। জিডি নম্বর-১২২১। জিডিটির তদন্তভার দেওয়া হয়েছে বিট ইনচার্জ ও মোহাম্মদপুর থানার এসআই লিটন মাতব্বরকে।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়, ইউসুফ হাওলাদার মোহাম্মদপুরের সুলতানগঞ্জ এলাকায় মোমিন উল্লাহর বাসার পঞ্চম তলায় তার বাবা-মাসহ সাড়ে চার বছর বসবাস করছেন। ওই ভাড়া বাসায় আড়াই বছর ধরে একটি বিড়াল পুষছেন। গত ১০ জুন রাত ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে অসাবধানশত দরজা খোলা থাকায় পোষা বিড়ালটি ভাড়াটিয়া ইউসুফ হাওলাদারের বাসা থেকে বের হয়ে যায়। বিষয়টি টের পেয়ে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বাড়ির মালিক মোমিন উল্লাহ ও তার স্ত্রী ফাতেমা আকতার তাকে জানান, বিড়ালটি তাদের (বাড়িওয়ালার) দরজার সামনে এসেছিল, তারা ধাতব অস্ত্র দিয়ে মারধর করে বিড়ালটিকে তাড়িয়ে দিয়েছে। সারা রাত খুঁজেও বিড়ালটির সন্ধান পাননি ইউসুফ হাওলাদার। বাড়িওয়ালার কথায় সন্তুষ্ট না হয়ে তার বাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখানোর অনুরোধ করেন ভাড়াটিয়া। তখন বাড়িওয়ালা বলে, বাসায় কেউ কোনো পশুপাখি পুষতে পারবে না। তিনি বিড়ালটিকে হত্যা করে বাইরে ফেলে দিয়েছেন।

কোথায় ফেলে দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে বাড়িওয়ালা ও তার স্ত্রী ভাড়াটিয়া ও তার মাকে গালমন্দ ও অপমান করে। বিষয়টি নিয়ে ভবিষ্যতে কথা বলতে চাইলে তার পরিণামও ভালো হবে না বলে বাড়িওয়ালা হুমকি-ধমকি দেন বলে জানানো হয়।

জিডিতে আরও বলা হয়, ভাড়াটিয়ার বিড়ালটি অনেক আদরের ছিল। বিড়ালটির মর্মান্তিক পরিণতির কথা ভেবে তারা দুঃখ ভারাক্রান্ত। ভাড়াটিয়া সবার খাওয়াদাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। বাড়িওয়ালার বাসার সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই ওই দিন বিড়ালটির ওপর সংঘটিত নির্মম আচরণের প্রমাণ মিলবে বলে মনে করেন ইউসুফ হাওলাদার। পোষা বিড়ালটিকে ভাড়াটিয়ার কাছে ফিরিয়ে না দিয়ে তার ওপর যে ধরনের নির্মম আচরণ করা হয়েছে- তা প্রাণী কল্যাণ আইন ২০০৯ পরিপন্থী কাজ।

বিজ্ঞাপন

ভাড়াটিয়া ইউসুফ হাওলাদার বলেন, ‘ওই বিড়ালটির জন্য আমাদের সবার মন খারাপ। আজকেও বিড়ালটির জন্য আমার আম্মু কান্নাকাটি করেছে। আমার বাবাও কান্না করেছেন। বুঝতেই পারছেন ওই নিষ্ঠুর বাড়িওয়ালা আমাদের কতখানি বিপদের মধ্যে রেখেছেন।’

তিনি বলেন, ‘সাড়ে চার বছরের মধ্যে বাড়িওয়ালা মোমিন উল্লাহর সঙ্গে আমাদের কোনো ঝগড়া বা ঝামেলা হয়নি। বিড়াল খুঁজে না পাওয়াতে বাড়িওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, মারধর করে তাড়িয়ে দিয়েছেন, আবার বলেন, মেরে ফেলে দিয়েছেন। কিন্তু কোথায় ফেলেছেন তা বলছেন না। আর সিসি ক্যামেরার ফুটেজও দেখাচ্ছেন না।’

ঘটনাটি নিয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে বাড়িওয়ালা মোমিন উল্লাহ বলেন, ‘ভাড়াটিয়া জিডি করছে পুলিশ সেটির তদন্ত করুন। আমি এই বিষয়ে যা বলার পুলিশকে বলব। এখানে সাংবাদিকদের কোনো কাজ নেই। আমি সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলব না। মামলা করলে আমিও দেখে নেব।’

এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার এসআই লিটন মাতব্বর সারাবাংলাকে বলেন, ‘নন-প্রসিকিউশন অভিযোগ হিসেবে আমি প্রথমে এটির তদন্ত করব। বাড়িওয়ালার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, প্রাণী কল্যাণ আইন ২০০৯ অনুসারে কোনো প্রাণী হত্যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণের কারণে ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত জেল ও ১০ হাজার টাকা থেকে পঞ্চাশ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

সারাবাংলা/একে

টপ নিউজ বাড়িওয়ালার নামে জিডি বিড়াল হত্যা মোহাম্মদপুর

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর