ঢাবির ৯২২ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা, গবেষণায় বরাদ্দ মাত্র ১৫ কোটি
১৬ জুন ২০২২ ১৭:১৭
ঢাকা: গত অর্থবছরের তুলনায় ৯০ কোটি টাকা বেশি অর্থ বরাদ্দ দিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৯২২ কোটি ৪৮ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। গতবছর এই অংক ছিল ৮৩১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এদিকে, মূল বাজেটের মাত্র ১ দশমিক ৬৩ শতাংশ বরাদ্দকৃত হয়েছে গবেষণাখাতে। টাকার অংকে যা মাত্র ১৫ কোটি ৫ লাখ টাকা।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ২০২২-২৩ অর্থবছরের মূল বাজেট এবং ২০২১-২২ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট উপস্থাপন করেন।
বার্ষিক অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সিনেট চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। অধিবেশনের শুরুতেই শোকপ্রস্তাব করেন তিনি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও দেশবরেণ্য ব্যক্তিবর্গের প্রতি শোক জানানো হয়।
এদিকে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য উপস্থাপিত বাজেটে সর্বমোট অর্থের মধ্যে ৭৮১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা পাওয়া যাবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (বিমক) থেকে। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৮৩ কোটি টাকা। এই হিসেবে এবারের বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৫৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, যা প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৬ দশমিক ২৪ শতাংশ।
টাকার অংক ও শতাংশের হিসেবে বরাদ্দ বিবরণী
২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাবদ ২৭৩ কোটি টাকা; যা মূল বাজেটের ২৯ দশমিক ৫৯ শতাংশ, ভাতাবাবদ ২১৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা; যা মূল বাজেটের ২৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ, পণ্য ও সেবা বাবদ ১৭৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা; যা মূল বাজেটের ১৯ দশমিক ৫১ শতাংশ, পেনশন বাবদ ১৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা; যা মূল বাজেটের ১৯ দশমিক ৫১ শতাংশ, গবেষণাবাবদ ১৫ কোটি ৫ লাখ টাকা; যা মূল বাজেটের ১ দশমিক ৬৩ শতাংশ, অন্যান্য অনুদান বাবদ ৩৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা; যা মূল বাজেটের ৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং মূলধন অনুদান ২১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা; যা মূল বাজেটের ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
এদিকে, উপত্থাপিত বাজেটে গবেষণাখাতে মাত্র ১৫ কোটি ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখায় শিক্ষক ও প্রাক্তন গ্রাজুয়েট হিসেবে ‘লজ্জাকর’ বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের সাবেক চেয়ারপারসন এবং সিনেট সদস্য অধ্যাপক এজেএম শফিউল আলম ভুঁইয়া।
বাজেট উপস্থাপন শেষে প্রশ্নোত্তর পর্বে উপাচার্যের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমাদের এবারের বাজেটে গবেষণাখাতে বরাদ্দ মাত্র ১ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এই আকার প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও গ্রাজুয়ে হিসেবে আমাদের জন্য লজ্জার। এ বিষয়টির দিকে আমাদের নজর দেওয়া দরকার।’
এ সময় শিক্ষকদের গবেষণা ক্ষেত্রে সুযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে অধ্যাপক শফিউল আলম ভুঁইয়া কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের পরীক্ষা বছরে তিন সেমিস্টার করে নেওয়ার প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, ‘আমি নিজে নর্থ অ্যামেরিকায় পড়েছি। আমি কোথাও ছয় মাসে সেমিস্টার দেখিনি। উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ৪ মাসে একটি সেমিস্টার কাভার করা হয়। এতে বছরে তিনটি সেমিস্টার থাকে। শিক্ষকরা দুই সেমিস্টার ক্লাস নেয়। বাকি এক সেমিস্টার নিজের গবেষণা নিয়ে কাজ করেন।’
সারাবাংলা/আরআইআর/পিটিএম