গলা পানিতে ডুবছে সুনামগঞ্জ, ভেসে যাচ্ছে পশুপাখি
১৭ জুন ২০২২ ১০:১৬
সুনামগঞ্জ: বন্যার পানিতে ডুবে গেছে পুরো সুনামগঞ্জ। জেলার প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে কোমর পানি থাকলেও পাড়া-মহল্লায় উঠে গেছে গলা পানি। আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার কোনো পথও খোলা নেই সাধারণ মানুষজনের। বানের জলে ভেসে যাচ্ছে পশুপাখি। বিদ্যুৎ না থাকায় ক্রমেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দারা।
শুক্রবার (১৭ জুন) সকাল ৯টার দিকে সারাবাংলার সুনামগঞ্জ করেসপন্ডেন্ট আল হাবিব জানান, তার নিজ বাড়ি সুনামগঞ্জের সদর উপজেলায়। সেখানেও গলা পানি উঠে গেছে। মানুষজন চাইলেও আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারছে না। ত্রাণ কার্যক্রমও জোরেসোরে শুরু হয়নি। সকাল সকাল বেশকিছু কুকুর বন্যার পানিতে ভেসে যেতে দেখেছেন তিনি।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম শুক্রবার সকাল ১০টা ১৮ মিনিটে সারাবাংলাকে বলেন, সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বন্যার পানি বিপৎসীমার ১২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির এই প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে পানি ভয়াবহভাবে বাড়ছে। জেলার ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, গত এক সপ্তাহের টানা বৃষ্টিপাত এবং পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা আবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন বাড়ছে পানির উচ্চতা। বাড়ছে মানুষের ভোগান্তি। সেইসাথে ঝুঁকি বাড়ছে বৈদ্যুতিক লাইনের। পল্লী বিদ্যুতের কর্মীরা বিকল্প লাইনের মাধ্যমে বন্যাকবলিত এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দেবার কাজ করছেন। কয়েকটি গ্রামে লাইনের ক্লিয়ারেন্স অতিরিক্ত ঝুঁকিতে পড়ায় নিরাপত্তার স্বার্থে লাইন সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটর করা হচ্ছে।
জানা গেছে, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বানভাসী মানুষের ঘরে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেকের বাড়িতে খাবার ও পানি সংকট দেখা দিয়েছে।
ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ভয়াবহ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। উজানের এই বৃষ্টির পানি পাহাড়ি ঢল হয়ে ভাটির জনপদ সুনামগঞ্জে বিপর্যয় ডেকে এনেছে। জেলার ৫টি উপজেলার শহর, গ্রাম, রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত।
সারাবাংলা/এএম