বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারে সেনা-নৌয়ের পর বিজিবি-কোস্টগার্ড
১৮ জুন ২০২২ ২০:২৩
ঢাকা: দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা সিলেট সুনামগঞ্জে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সেনাবাহিনী ও নৌ বাহিনীর পর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড বর্ন্যাতদের উদ্ধারে মাঠে নেমেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন— এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি জরুরি মানুষকে উদ্ধার করা। আর উদ্ধার কাজে সাধারণ মানুষ অংশ নিতে পারছে না। এখানে প্রশিক্ষিত জনবল ছাড়া উদ্ধার কাজে যোগ দেওয়াটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম শনিবার (১৮ জুন) সারাবাংলাকে বলেন, ‘আকস্মিক বন্যায় সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বন্যাদুর্গত এলাকার জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়েছে বিজিবি। তারা শনিবার সকাল থেকেই কাজ শুরু করেছে। বন্যা দুর্গতদের খাবার বিতরণসহ সাধারণ মানুষ ও পশুগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছে। এ ছাড়া আরও কিছু সংখ্যক বিজিবি সদস্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে তারাও কাজে যোগ দেবে।’
অন্যদিকে সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যাদুর্গতদের উদ্ধারে ৫টি রেসকিউ বোট এবং একাধিক ডুবুরিদল নিয়ে রওনা করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। আজ রাতেই তারা কাজে যোগ দেবে বলে জানিয়েছে কোস্ট গার্ড।
কোস্ট গার্ড সদর দফতরের মিডিয়া শাখার কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনীর তকি সারাবাংলাকে বলেন, ‘শনিবার (১৮ জুন) দুপুরের দিকে কোস্ট গার্ডের ৩৪ জনের একটি টিম সিলেট রওনা হয়েছে। তারা কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে যাবে সিলেটে। ৩৪ জনের সবাই ডুবুরি। সবাই অত্যন্ত প্রশিক্ষিত। ৫টি রেসকিউ বোট রয়েছে। তারা এই বোট দিয়ে উদ্ধার কাজ করবে। এর বাইরে আমরা যেখানে যেভাবে সহযোগিতা করা লাগে তার জন্য প্রস্তুতি রয়েছে।’
এর আগে, শুক্রবার (১৭ জুন) সকালে বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর ৯টি ইউনিট সুনামগঞ্জ ও সিলেটে বন্যার্তদের উদ্ধারে কাজ শুরু করে। সেনাবাহিনীর ৯টি টিমের মধ্যে ৩টি মেডিকেল টিম রয়েছে। এর বাইরে বিদ্যুৎ কেন্দ্র রক্ষায় একটি ইঞ্জিনিয়ারিং টিম ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশনের সাথে মিলে কাজ করছে বলে জানায় আইএসপিআর।
এদিকে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি শনিবার (১৮ জুন) সকাল থেকে নৌ বাহিনীর উদ্ধার টিম কাজ শুরু করেছে।
সুনামগঞ্জ ও সিলেট এলাকার বেশ কয়েকজন ব্যক্তির সাথে শনিবার সারাবাংলার এই প্রতিবেদকের কথা হয়েছে। তারা জানান, শুকনো খাবার, রান্না করা খাবার, মোমবাতি, দিয়াশলাই বা গ্যাস লাইটারসহ নানান সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করতে হবেই। এর বাইরে সবার আগে যেটি প্রয়োজন তা হলো, বয়স্ক, শিশু ও পশুগুলোকে উদ্ধার করা। বেশির ভাগ পশু পানির স্রোতে ভেসে গেছে। বাকি যেগুলো আছে সেগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া। আবার বয়স্ক ও শিশুদের দ্রুত নিরাপদ আশ্রয় স্থলে নিয়ে যাওয়া। কারণ তারা আর পানিতে থাকতে পারছে না। পুরো এলাকা বিদ্যুৎ সংযোগ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় অনেকে জানাতেও পারছে না যে, তাদের উদ্ধার করতে হবে। এখন প্রয়োজন বাড়ি বাড়ি খোঁজ নিয়ে আটকে পড়া লোকদের উদ্ধার করা।
অন্যদিকে আবহাওয়া অফিস এবং বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আজ ও আগামীকাল সিলেট অঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। শ্রক্রবার (১৭ জুন) রাতভর বৃষ্টির পর শনিবার (১৮ জুন) দিনভর বৃষ্টি হচ্ছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। ফলে মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সারাবাংলা/ইউজে/একে