শিগগিরই সিলেট-সুনামগঞ্জের জন্য কোনো সুখবর নেই। ভয়াবহ বন্যাকবলিত এই ২ জেলায় পানি বাড়বে আরও ৩ দিন। এরপর পরিস্থিতির উন্নতি শুরু হতে পারে। তবে এসব জেলার পানি নামার সময় বন্যা পরিস্থিতির শিকার হবে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ। অন্যদিকে ক্রমাগত যমুনার পানি বৃদ্ধির উত্তরবঙ্গে বেশকিছু জেলায় দ্রুতই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।
রোববার (১৯ জনু) দুপুর ১২টার দিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রে দায়িত্বরতদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে জানানো হয়, আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টায় আরও অবনতি হতে পারে। এরপর থেকে পানি কমতে পারে। তবে সিলেট-সুনামগঞ্জের পানি নামার সময় হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের নদনদীর পানি বাড়বে। সৃষ্টি হতে পারে বন্যা পরিস্থিতির।
ইতোমধ্যেই উজানের ঢলে কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হবিগঞ্জের তিন উপজেলার কমপক্ষে ৪০ গ্রামের মানুষ।
হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান জানান, বানিয়াচং, নবীগঞ্জ ও আজমিরীগঞ্জে পানি উঠেছে। দুর্গতদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং দেওয়া হচ্ছে শুকনা খাবার।
অন্যদিকে দ্রুত বাড়ছে যমুনা নদীর পানি। পানি বাড়ছে তিস্তা নদীতেও। এই দুই নদীতে পানি বাড়ার কারণে বন্যার কবলে পড়বে উত্তরবঙ্গের বেশকিছু জেলা। এগুলো হলো- কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, পাবনা, মানিকগঞ্জ ও বগুড়া।
রোববার (১৯ জুন) সকালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন ও সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক হাসানুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলার কাজিপুর পয়েন্টে গত ১২ ঘণ্টায় যমুনার পানি ১১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও গত ১২ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় আরও ৬ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে যেমন যমুনার চরের নতুন ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে, তেমনই বন্যার আশঙ্কা করছে নদীপারের মানুষ।
ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে রেকর্ড বৃষ্টিপাতের ফলে গত বুধবার থেকেই পানি বাড়তে শুরু করে সিলেট-সুনামগঞ্জে। পরদিন বৃহস্পতিবার অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে দুই জেলার ৪০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় জেলার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, ভেঙে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থাও। এমনকি বন্যার ভয়াবহতার মুখে প্রত্যন্ত অঞ্চলে উদ্ধারকাজ পরিচালনাও কঠিন হয়ে উঠেছে। বন্যার্তদের উদ্ধারে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী।