হাঙ্গর ও শাপলাপাতা মাছ সংরক্ষণে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন
১৯ জুন ২০২২ ১৫:৫৩
ঢাকা: বিপন্ন প্রজাতির হাঙ্গর ও শাপলাপাতা মাছ বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে জাতীয় সংরক্ষণ কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা এবং নন ডেট্রিমেন্ট ফাইন্ডিংস তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। তিনি বলেছেন, এ কর্মপরিকল্পনা হাঙ্গর ও শাপলাপাতা মাছের আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ, উপকূলীয় সম্প্রদায়কে টেকসই ও উৎপাদনশীল মৎস্য জীবিকা নিশ্চিতে এবং সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
রোববার (১৯ জুন) বাংলাদেশের হাঙ্গর ও শাপলাপাতা মাছ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রণীত খসড়া জাতীয় কর্মকৌশল ও কর্মপরিকল্পনা এবং নন ডেট্রিমেন্ট ফাইন্ডিংস চূড়ান্তকরণ বিষয়ে হোটেল রেডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে বন অধিদফতর আয়োজিত জাতীয় পরামর্শক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের অর্থায়নে ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির কারিগরি সহায়তায় প্রণীত এ কর্মপরিকল্পনা সরকারি সংস্থা, স্থানীয় সম্প্রদায়, এনজিও, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি উদ্যোগের জন্য নির্দেশিকা হিসেবে কাজ করবে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের সমুদ্রে বিদ্যমান ১০০টিরও বেশি প্রজাতির হাঙ্গর ও শাপলাপাতা মাছ বিলুপ্ত হওয়ার হুমকির মধ্যে রয়েছে। আমাদের উপকূলীয় এবং সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের সুস্থ পরিবেশ টিকিয়ে রাখতে এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাঙ্গর ও শাপলাপাতা মাছকে চিরতরে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে অতিরিক্ত পরিমাণে মাছ ধরা বন্ধ নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য অনতিবিলম্বে সংশ্লিষ্ট সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে যেন সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র এবং জীববৈচিত্র্য আমাদের জীবন-জীবিকা ও জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
তিনি বলেন, ১৭৩৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া এবং ১৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে সেন্ট মার্টিন মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া নামক ২টি ঘোষিত সামুদ্রিক রক্ষিত এলাকা হাঙ্গর ও শাপলাপাতা মাছ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। হাঙ্গর ও শাপলাপাতা মাছের যে সকল প্রজাতি বিলুপ্তির উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে সেগুলো আমাদের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ এ কঠোরভাবে সুরক্ষিত। সমস্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহযোগিতায় এসকল প্রজাতি সংরক্ষণে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, হাঙ্গর ও শাপলাপাতা মাছ সম্পর্কিত গবেষণা, নীতি প্রণয়ন এবং এদের গুরুত্বপূর্ণ আবাসস্থল সুরক্ষায় বাংলাদেশের প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সমর্থন পেয়েছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ডক্টর ফারহিনা আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমির হোসাইন চৌধুরী, মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক এবং সুফল প্রকল্পের পরিচালক গোবিন্দ রায় প্রমুখ। ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির সিনিয়র ম্যানেজার মেরিন এলিজাবেথ ফারনি মনসুর কীনোট পেপার উপস্থাপন করেন।
সারাবাংলা/জেআর/এসএসএ