‘মৃত্যুর পর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের কবর হতে পারে সংসদ এলাকায়’
১৯ জুন ২০২২ ১৯:৪০
ঢাকা: আগামীতে রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান মৃত্যুবরণ করলে পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে জাতীয় সংসদ ভবন বা এর আশপাশের বিশেষ এলাকায় সমাধিস্থ করার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
রোববার (১৯ জুন) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের ১৬তম অধিবেশনে বিরোধীদল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। এদিন স্পিকার ড. শিরীন শারমিনের সভাপতিত্বে প্রশ্ন উত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
প্রশ্নকারী জানতে চান, আগামীতে রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান মৃত্যুবরণ করলে তাদের সম্মানে জাতীয় সংসদ ভবন বা এর আশপাশের বিশেষ এলাকায় সমাধিস্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে কি না? না হলে তার কারণ কী?
এর উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘স্থপতি প্রফেসর লুই আইকান’র মাস্টার প্ল্যান অনুসারে বাণিজ্য মেলার মাঠে বাংলাদেশ সচিবালয়ের নকশা স্থাপত্য অধিদফতর কর্তৃক বাস্তবতার নিরিখে বর্তমান স্থিত সাইটের সঙ্গে নকশার সমন্বয় করা হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরবর্তী কার্যক্রম নেওয়া হবে।’
স্বল্প আয়ের মানুষের আবাসন সমাধানের কোনো ভবন নিরমান করেছেন কি না?- নারী (সংরক্ষিত-২৮) আসনের সংসদ সদস্য রুবিনা আক্তারের এমন এক প্রশ্নের জবাবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী জানান, ‘রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিম্ন আয়ের মানুষের সুবিধার জন্য পরিকল্পিত আবাসন নিশ্চিত করার প্রচেষ্টায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে। ইতোমধ্যে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ঢাকার মিরপুর ১১ নম্বর সেকশনে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ৫৩৩টি ভাড়াভিত্তিক আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের ৩০০টি ফ্ল্যাট স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে দৈনিক/সাপ্তাহিক/মাসিক ভাড়া ভিত্তিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট ২৩৩টি ফ্ল্যাটের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে, যা শিগগিরই নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, এছাড়া রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে স্বল্প, মধ্যম উচ্চ আয়ের লোকদের জন্য তিন সেক্টরে ১১৫ দশমিক ৫৭ একর জায়গার উপর প্রায় ১২ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণের সংস্থান রয়েছে। এছাড়াও নিম্ন আয়ের লোকদের জন্য নয়টি সেক্টরে ৮৯ দশমিক ৪৯ একর জায়গার উপর প্রায় ১৫ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণের সংস্থান রয়েছে। প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি, ড্রইং-ডিজাইন, ডিপিপি প্রণয়ন কাজে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োজিত রয়েছে। আগামী অক্টোবর মধ্যে ডিপিপি চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া রাজউক উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের একটি ব্লকে প্রায় ৬০ একর জমির উপর ৫২টি ১৬ তলা ভবনে নেট ৮৫০ বর্গফুট আয়তনের ৪ হাজার ৩৬৮টি ফ্লাট নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
দেশের স্বল্প আয়ের মানুষের আবাসন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ হিসেবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) কর্তৃক ‘সণ্টগোলা পতেঙ্গা রোডের পার্শ্বে কর্মজীবী নারীদের আবাসনের লক্ষ্যে ডরমিটরী ও কমার্শিয়াল ভবন নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় গার্মেন্টস সেক্টরে কর্মজীবী নারীদের জন্য পাঁচটি ছয় তলা বিশিষ্ট ডরমিটরি ভবন নির্মাণ করে ইতোমধ্যে বিজিএমইকে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী। এর ফলে গার্মেন্টস সেক্টরে কর্মজীবী প্রায় এক হাজার স্বল্প আয়ের নারী শ্রমিকের আবাসনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
শরীফ আহমেদ বলেন, “স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকা (৩য় পর্যায়) ও মিরেরডাঙ্গা স্বল্প আয়ের আবাসিক এলাকা নামে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। কেডিএ ময়ূরী-২ ও নিরালা-২ নামের দুটি আবাসিক প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেখানে স্বল্প আয়ের লোকদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা থাকবে। তাছাড়া ‘ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান, খুলনা-২০১৮’ প্রকল্পের আওতায় রুপসা উপজেলার জয়পুর মৌজায় ১৩ দশমিক ৮০ একর জমির উপর স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য আবাসন তৈরির প্রস্তাবনা রয়েছে। স্বল্প আয়ের মানুষের আবাসন সমস্যা নিরসনের অংশ হিসেবে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ‘কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আবাসিক ফ্ল্যাট উন্নয়ন প্রকল্প-১’ শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।’ ওই প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ৩৩৯টি ফ্ল্যাট ইতোমধ্যে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম