Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ: এবার মেয়াদ বাড়লেও, ব্যয় কমছে

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২০ জুন ২০২২ ০৮:৪৯

ঢাকা: ব্যয় কমছে ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ প্রকল্পে। এজন্য দেশের ৬৪টি জেলা সদরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন প্রকল্পটির তৃতীয় সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এ পর্যায়ে দুই বছর মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত দাফতরিক স্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে জনসাধারণের জন্য সেবার মান উন্নত করা এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য দাফতরিক সুবিধাদি বাড়বে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, গাজীপুর চিফ জুডিশিয়াল আদালত ভবন নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ দ্বিতীয় সংশোধিত আরডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত ছিল। নির্বাচিত জায়গাটি আনসার ও ভিডিপি এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের হওয়ায় এ বিষয়ে স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ের সম্মতি পাওয়া যায়নি। বর্তমানে জমির বিকল্প স্থান নির্বাচন করে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। খাগরাছড়ি জেলায়ও জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় অনুমোদিত প্রকল্প মেয়াদে ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। এই বিষয়গুলো নিষ্পত্তির জন্য আরডিপিপি সংশোধন করা প্রয়োজন। এছাড়া ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলায় নির্মাণাধীন চিফ জুডিশিয়াল আদালত ভবনে চলাচলের সুবিধার্থে নতুন করে শূন্য দশমিক ৯ একর জমি অধিগ্রহণ করা প্রয়োজন।

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিচার বিভাগ পৃথককরণের পর প্রয়োজনীয় অবকাঠামোসহ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণের জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা সদরে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদলত ভবন প্রকল্পটি ২০০৯ সালের ১৫ এপ্রিল ৭৩১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি হতে ২০১৪ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত হয়। অনুমোদিত ডিপিপিতে ২৭টি জেলা সদরে আদালত ভবন নির্মাণ এবং অবশিষ্ট ৩৭টি জেলায় শুধুমাত্র ভূমি অধিগ্রহণের সংস্থান ছিল। এরপর প্রথমবার ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া প্রকল্পটির মেয়াদ বৃদ্ধি করে বাস্তবায়ন মেয়াদ ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে ৩৪টি জেলায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন এবং ৩০টি জেলায় ভূমি অধিগ্রহণের সংস্থান রেখে প্রথম সংশোধিত ডিপিপি ৮৭০ কোটি ৩৭ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি হতে ২০১৮ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য ২০১১ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি একনেকে অনুমোদিত হয়। পরবর্তী সময়ে ৪২টি জেলা সদরে এই আদালত ভবন এবং ২২টি জেলায় ভূমি অধিগ্রহণ কাজ অন্তর্ভূক্ত করে ২ হাজার ৩৮৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি হতে ২০১৮ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপি ২০১৬ সালের ২৪ মে একনেকে অনুমোদিত হয়। অতঃপর ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। পরবর্তী সময়ে প্রকল্পটির আওতায় জমি অধিগ্রহণজনিত ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ২ হাজার ৪৬৪ কোটি ৬০ লাখ ৩৯ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি হতে ২০২০ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য আইন ও বিচার বিভাগ হতে প্রকল্পটির বিশেষ সংশোধন করা হয়। সর্বশেষ একবার ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। বর্তমানে মোট ২ হাজার ২৬০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি হতে ২০২৩ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পের তৃতীয় সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদিত বিশেষ সংশোধিত ডিপিপি ব্যয় ২ হাজার ৪৬৪ কোটি ৬০ লাখ ৩৯ হাজার টাকা অপেক্ষা প্রস্তাবিত তৃতীয় সংশোধিত প্রকল্পের ডিপিপির প্রাক্কলিত ব্যয় ২০৪ কোটি ২৬ লাখ ১৩ হাজার টাকা অর্থাৎ ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ কম।

প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ব্যয় বৃদ্ধি, পাহাড়ি এলাকার জন্য স্বতন্ত্র নকশা, সংযোগ সেতু নির্মাণ, এজলাসের সংখ্যা বৃদ্ধি, গ্যারেজ নির্মাণের কাজ অন্তর্ভূক্তকরণ, গ্লাস পার্টিশন স্থাপন ব্যয় অন্তর্ভূক্তকরণ, অতিরিক্ত ৩০ হাজার গ্যালন ভূগর্ভস্থ জলাধার, রাস্তা ও সীমানা প্রাচীরের ব্যয় বৃদ্ধি, একটি নতুন জিপ গাড়ি ক্রয়ের সংস্থান, ব্লক এলোকেশন, নকশা সংশোধন এবং লিফট কোরসহ নতুর লিফটের সংস্থান করা।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন-আল-রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, এতে আদালতের দাফতরিক স্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে জনসাধারণের জন্য সেবার মান উন্নত করা, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের জন্য দাফতরিক সুবিধাদি বৃদ্ধি, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের জন্য সহায়ক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তাই প্রকল্পটি অনুমোদন যোগ্য।

সারাবাংলা/জেজে/এএম


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর