Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাসে গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণ, গ্রেফতার ৩

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০ জুন ২০২২ ১৮:১৫

বাসে ধর্ষণ [প্রতীকী ছবি]

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে ফের বাসে এক গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ওই বাসের চালক ও সহকারীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। রোববার (১৯ জুন) রাতে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার অক্সিজেন এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গ্রেফতার তিনজন হল- বাসের চালক নুরুল আলম (৩০), তার সহকারী মো. রবিউল (২৩) ও অন্য একটি বাসের সহকারী মো. শাহজাহান (২২)।

বায়েজিদ বোস্তামি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান সারাবাংলাকে জানান, আক্রান্ত নারী অভিযোগ করেছেন- স্বামীর সঙ্গে ডবলমুরিং এলাকায় একটি জুতার দোকানে গিয়ে মারধরসহ অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হন তারা। ওই দোকানির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করার জন্য পরামর্শ চাইতে নগরীর বায়েজিদ এলাকায় এক চাচার বাসায় গিয়েছিলেন তিনি। ওই চাচা আদালতে আইনজীবীর সহকারী হিসেবে কাজ করেন।

ওই নারী ছিন্নমূল রাস্তার মাথা এলাকার চাচার বাসা থেকে রিকশা নিয়ে অক্সিজেন মোড়ে আসেন। সেখান থেকে বাসে করে আদালতে যাবার সিদ্ধান্ত ছিল তার। অক্সিজেন মোড়ে একটি খালি বাস দাঁড়ানো ছিল। ওই বাসের চালক নুরুল আলম, তার সহকারী রবিউল, সুপারভাইজার এবং অন্য বাসের সহকারী শাহজাহান এসে তার কাছে কোথায় যাবে জানতে চান। আদালত ভবনে যাবার কথা বলার পর তারা স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা চট্টমেট্রো- জ- ১১-০১৬৯ নম্বরের একটি বাসে তোলেন।

বাসে ওঠার পর তারা চালক বাসটি অক্সিজেন রেল লাইনের এক পাশে নিয়ে যায়। সেখানে অন্য কোনো যাত্রী না থাকায় তারা দরজা আটকে রবিউল ও সুপারভাইজার মিলে তাকে ধর্ষণ করে। পরে শাহজাহানের সহযোগিতায় চালক নুরুল আলমও ধর্ষণ করেছিলেন বলে ওই নারী পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন।

ওসি কামরুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনার পর ওই নারী বাস থেকে নেমে অক্সিজেন এলাকায় ট্রাফিক বক্সে গিয়ে বিষয়টি দায়িত্বরত সার্জেন্ট ও ট্রাফিক সদস্যদের জানান। ট্রাফিক সদস্যরা দ্রুত বাসস্ট্যান্ডে অভিযান চালিয়ে শাহজাহানকে আটক করেন। অভিযোগ পাবার পর রোববার রাতে আমরা হাটহাজারী থেকে নুরুল আলম ও ফটিকছড়ি থেকে রবিউলকে গ্রেফতার করি। বাসের সুপারভাইজার এখনও পলাতক আছেন।’

ওসি আরও জানান, যে বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সেটি অক্সিজেন-নাজিরহাট রুটের বাস। নাজিরহাটের উদ্দেশে যাত্রার জন্য যাত্রীর অপেক্ষায় বাসটি স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়েছিল। ওই নারীকে দেখে চালক-সহকারীরা মিলে খালি বাসে তুলে নেয় এবং ধর্ষণ করে। পরে বাস নিয়ে তারা আবারও স্ট্যান্ডে আসে। শাহজাহানকে আটকের বিষয়টি দেখে চালক নুরুল আলম, সহকারী রবিউল ও সুপরভাইজার অন্য একটি বাসে করে অক্সিজেন থেকে দ্রুত চলে যায়।

এ ঘটনায় আক্রান্ত নারী বায়েজিদ বোস্তামি থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় তিনজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে ওসি জানান।

গত ১৯ মে রাতে নগরীর বাকলিয়া থানার রাহাত্তারপুল এলাকা থেকে এক তরুণীকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। জানতে পেরে পুলিশ তরুণী কিভাবে আহত হলেন- এ নিয়ে অনুসন্ধান ‍শুরু করে। তবে পাঁচদিন ধরে সংজ্ঞাহীন ছিলেন পেশায় পোশাক কর্মী ওই তরুণী। ২৪ মে জ্ঞান ফেরার পর তরুণী পুলিশকে জানায় শ্রমিকদের জন্য নির্ধারিত কারখানার বাসে তরুণী প্রতিদিন আসা-যাওয়া করেন। ১৯ মে রাত ৯টার দিকে কারখানা ছুটি হয়। তিনি বাসায় ফেরার জন্য একই কারখানার আরও ১০-১২ জন শ্রমিকদের সঙ্গে বাসে ওঠেন। বাস বহদ্দারহাট এলাকায় পৌঁছার পর অন্য শ্রমিকরা দ্রুত নেমে যান। পেছনের আসন থেকে এগিয়ে নামার সময় তাকে নিয়ে বাস দ্রুত রাহাত্তার পুলের দিকে এগিয়ে যায়।

বাসের চালকের আসনে ছিলেন সহকারী। আর চালক দরজায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। বাস যখন বহদ্দারহাট থেকে রাহাত্তার পুলের দিকে যেতে থাকে, তখন চালক তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এসময় চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে নিচে পড়েন জ্ঞান হারান তরুণী।

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবার পর ওই তরুণী নগরীর বাকলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় বাসের চালক ও সহকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

সারাবাংলা/আরডি/একেএম


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর