Saturday 26 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আ.লীগ কাজ করে, কথা বেশি বলে না— ফখরুলকে নানক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২০ জুন ২০২২ ২০:৪০

ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘আপনি বলছেন, আমরা পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে ব্যস্ত আছি। সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যাপীড়িত মানুষের কোনো খোঁজখবর রাখি না। ফখরুল সাহেব আপনারা কথা বলেন, কাজ করেন না। আর আমরা কাজ করি কথা বেশি বলি না।’

সোমবার (২০ জুন) রাজধানীর শ্যামলী ক্লাব মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের অন্তর্গত আদাবর থানা এবং ৩০ ও ১০০ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের ১ম অধিবেশন ঘোষণা করা হয়। পরে বিকেল চারটায় সম্মেলেনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহী প্রার্থীদের সিভি নেয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

১৫ আগস্ট নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার বেঁচে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ওরা আমাদের নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল। কারাগারের অভ্যন্তরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে ওরা ভেবেছিল আওয়ামী লীগকে চিরদিনের জন্য নিশ্চিহ্ন করতে পারবে। বাংলদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস পাল্টে দিতে পারবে। পাল্টানোর চক্রান্ত হিসাবেই সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার স্বঘোষিত ঘোষক বানানোর চেষ্টা হয়েছিল।

স্বৈরশাসকের উর্দি পরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি গঠনের সমালোচনা করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নানক বলেন, ‘সেই ওরা এখন গণতন্ত্রের কথা বলে, ওরা কত বড় নির্লজ্জ। সিলেট-সুনামগঞ্জে একটি অকাল ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। ভয়াবহ বন্যায় মানুষ দিশেহারা হয়ে গিয়েছে। আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারারাত ঘুমাননি। রাতের বেলায় সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে, রাতের বেলায় নির্দেশ দিয়েছেন নৌ বাহিনী, কোস্টগার্ডকে পানিবন্দি আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করার জন্য। আর এই আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছে যাও মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াও। মানুষের কাছে এক মুঠো খাবার নিয়ে হাজির হও। কারণ মানুষের রান্না করার কোন জায়গা নেই।’

‘মির্জা ফখরুলরা ঢাকায় এসি রুমে বসে বয়ান দেয় সরকার কিছুই করছে না। সারাবাংলার মানুষ দেখে না, বিশ্ববাসী দেখে না কি সরকার কী করছে না করছে? সেনাবাহিনী কত পরিশ্রম করছে, সেনাবাহিনী কীভাবে মানুষকে উদ্ধার করে নিয়ে আসছে। জীবজন্তু পর্যন্ত উদ্ধার করছে। আরেকদিকে প্রতিটি আওয়ামী লীগ যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বাড়িতে ক্যাম্প করা হয়েছে। ক্যাম্প করে সেখানে খাবার-দাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। নৌকায় নৌকায় গিয়ে বাড়িতে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আর মির্জা ফখরুল সাহেব এখানে বইসা কন আপনারা শুধু পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে ব্যস্ত? লজ্জা করে না? করোনার মহামারি গেল সেই করোনার সময়ও ওরা এক মুষ্টি চাল নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। আর আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ যুবলীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, লাশ দাফন করেছে। আর আপনারা বলেন আমরা আনন্দফূর্তি নিয়ে ব্যস্ত থাকি। ওরা সিলেটে যায় না, ওরা সুনামগঞ্জে যায় না। কারণ জনগণের ওপর ওদের ক্ষোভ রয়েছে। সেই ক্ষোভের প্রতিশোধের আগুনে ওরা জ্বলছে। কাজেই ওদেরকে বিশ্বাস করা যায় না। কারণ জাতি সাপকে বিশ্বাস করা যায় কিন্তু বিএনপিকে-জামায়াতকে বিশ্বাস করা যায় না।’

ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক এমপি নানক বলেন, ‘পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছে ওই বিএনপি-জামায়াত আর ড. ইউনূসের মতো ভদ্রবেশী শয়তানেরা। কিন্তু আমাদের দুঃসাহসী নেত্রী যিনি স্বপ্নই দেখেন না, স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন। সেই নেত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, আমি আমার দেশের মানুষের শক্তি দিয়ে সামর্থ্য দিয়ে অর্থ দিয়ে আমি পদ্মা সেতু নির্মাণ করবো। সেই পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্বোধন যখন শুরু হল তখন ম্যাডাম খালেদা জিয়া বললেন, পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করলেও হাসিনা এই পদ্মা সেতু করে যেতে পারবে না। পরে আবার কি বললেন, পদ্মা সেতু এটি তো জোড়াতালি দিয়ে করছেন, সাবধান কেউ পদ্মা সেতুতে উঠবেন না। এমন এক মূর্খ প্রধানমন্ত্রী; যে জানে না এটা দাও না, এটা বটিও না, এটা খোনতাও না এটা কুড়ালও না। ব্রিজ করতে হলে পর্যায়ক্রমে পার্ট বাই পার্ট করতে হয়; এই মূর্খ্যের অধীনে দেশ ছিল। তাই দেশ মুখ থুবড়ে পড়েছিল। আর যখন সেই দেশের মানুষ শেখ হাসিনার কাছে দায়িত্ব দিলেন, তখন দেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘এই আদাবরের মানুষেরা কোনোদিন মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে না। কারণ আদাবরে যা কিছু উন্নয়ন হয়েছে শেখ হাসিনার সরকার উন্নয়ন করেছে। তাই আগামী দিনে এমন নেতাদের নির্বাচিত করবেন, যাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সম্পর্ক রয়েছে। তাদের হাতেই নেতৃত্ব দিতে হবে।’

আদাবর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মান্নানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সালাহউদ্দিন শামীমের পরিচালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, সহ-সভাপতি সাদেক খানসহ ৩০ ও ১০০ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।

সারাবাংলা/এনআর/একেএম

অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর