বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল উদ্ধারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে
২১ জুন ২০২২ ১৮:৪৭
ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন বুড়িগঙ্গা নদীর আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (স্থানীয় সরকার বিভাগ) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (২১ জুন) একাদশ জাতীয় সংসদের ১৮তম অধিবেশনে (বাজেট অধিবেশন) চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম. আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
এ বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগ কর্তৃক অবৈধ স্থাপনার উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। জলাবদ্ধতা দূর করতে স্বল্প মেয়াদী কাজের অংশ হিসেবে আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলে পানি প্রবাহ সচল রাখার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে পলি অপসারণ, ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার এবং দুই পার্শ্বে ফেন্সিং স্থাপনের কার্যক্রম চলমান। দীর্ঘ মেয়াদী কাজের অংশ হিসেবে ‘বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল পুনরুদ্ধার ও উন্নয়ন কাজ’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পরবর্তীতে বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টিকরণের জন্য ডিপিপি প্রস্তুত করতে প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জাতীয় সংসদে জানান, স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর কর্তৃক উপকূলীয় জেলাসমূহের লবনাক্ত প্রবণ এলাকায় লবণাক্ততা দূরীকরণ প্ল্যান্টসহ বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা এবং পুকুর খনন ও পুনরায় খননসহ সৌরচালিত শত স্যান্ড ফিস্টার এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থা স্থাপন করা হচ্ছে। উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা শতভাগ নিশ্চিত করতে গত এক দশকে অধিদফতর কর্তৃক উপকূলীয় জেলাগুলোতে বাস্তবায়নাধীন কার্যক্রমগুলোর মধ্যে সম্প্রতি ১৬ হাজার ১৭৫ লাখ ৫২ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ‘উপকূলীয় জেলাসমূহে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে পানি সরবরাহ প্রকল্প’ শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় উপকূলীয় ১০টি (সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, গোপালগঞ্জ, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী) জেলায় মোট ২ লাখ ৬ হাজার ৮৭২টি রেইন ওয়াটার হার্ভেস্থর স্থাপন করা হবে।
পানি সংরক্ষণ ও নিরাপদ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে ‘জেলা পরিষদেরপুরুষ/নিধি/জলাশয়সমূহ পুনঃখনন/সংস্কার প্রকল্প’ এবং পল্লী অঞ্চলে ২টি প্রকল্পের আওতায় উপকূলীয় ১৮টি (খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, চট্টগ্রাম,কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, গোপালগঞ্জ, যশোর, ঝালকাঠি, লক্ষীপুর, নড়াইল, পিরোজপুর, শরীয়তপুর ও পটুয়াখালী) জেলায় মোট ৬৮টি পুকুর খনন এবং ২০টি পুকুর পুনঃখননের কাজ চলমান বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
তিনি আরও বলেন, ‘পল্লী অঞ্চলে পানি সরবরাহ প্রকল্প’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় উপকূলীয় খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, বরিশাল, পিরোজপুর, ও পটুয়াখালী জেলার মোট ৬৮টি পুকুর খনন এবং ৭০টি গোপালগঞ্জ, যশোর, ঝালকাঠি, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর মানবসম্পদ উন্নয়নে গ্রামীণ পানির সরবরাহ, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি না পানি সরবাহ প্রকল্পের আওতায় উপকূলীয় জেলার প্রতি পাইপড ওয়াটার সায়াছমিন্ট প্ল্যান্টস এবং ৫৬ মিনি গ্রামীণ।
খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য নারায়ন চন্দ্র চন্দের করা অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, জেলার নির্বাচনী এলাকায় ১০৩ খুলনা-৫ এলাকার গ্রামসমূহে গভীর নলকূপ এবং রেইন ওয়াটার হারভেক্টর স্থাপনের মাধ্যমে নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিধায় এই সকল এলাকায় সাবমারসিবল টিউবওয়েলের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা নাই। চলতি অর্থ বছরে খুলনা জেলার ফুলতলা এবং ডুমুরিয়া উপজেলায় বিশুদ্ধ খাবার পানি পাওয়ার লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর কর্তৃক ‘সমগ্র দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্প’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় খুলনা-৫ নির্বাচনী এলাকা ফুলতলা উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ২৬টি করে, মোট ১০৪টি গভীর নলকূপ এবং ডুমুরিয়া উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ২৬টি করে, মোট ৩৬৪ টি গভীর নলকূপ ও রেইন ওয়াটার হারভেষ্টর স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ অর্থ বছরে ফুলতলা এবং ডুমুরিয়া উপজেলায় মোট ৯২৫টি গভীর নলকূপ ও রেইন ওয়াটার হারভেষ্টর স্থাপিত হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় একই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সাল পর্যন্ত ফুলতলা এবং ডুমুরিয়া উপজেলায় ‘সমগ্র দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের’ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির মাধ্যমে নলকূপ বরাদ্দ প্রদান অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, ‘পানি সরবরাহে আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন প্রকল্প’ শীর্ষক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের আওতায় ডুমুরিয়া উপজেলায় মোট ৯৬৬টি গভীর নলকূপ স্থাপিত হয়েছে। ‘অগ্রাধিকারমূলক গ্রামীণ পানি সরবরাহ প্রকল্প’ শীর্ষক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের আওতায় ফুলতলা এবং ডুমুরিয়া উপজেলায় মোট ২৩৭টি গভীর নলকূপ স্থাপিত হয়েছে। ‘পল্লী অঞ্চলে পানি সরবরাহ প্রকল্প’ শীর্ষক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের আওতায় ফুলতলা এবং ডুমুরিয়া উপজেলায় মোট ২৮২টি গভীর নলকূপ স্থাপিত হয়েছে। পানি সংরক্ষণ ও নিরাপদ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে ‘জেলা পরিষদের পুকুর/দিঘি/জলাশয়সমূহ পুনঃখনন/সংস্কার প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়েছে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এনএস