গর্ভের সন্তানকে হত্যাকারীর বিচারের দাবি মায়ের
২১ জুন ২০২২ ২১:৫২
ভৈরব: জেলা সদরে অন্তঃসত্ত্বা নারীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় গর্ভের সন্তান হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার ও দ্রুত বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী নারী তামান্না বেগম। তিনি পৌর শহরের আমলাপাড়া ওয়াপদা মোড় এলাকার পায়েল মিয়ার স্ত্রী।
মঙ্গলবার (২১ জুন) সকাল ১১টায় ভৈরব পৌর শহরের কমলপুর এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তামান্না বেগম।
তিনি জানান, একই এলাকার জনৈক মিলন মিয়ার সঙ্গে তামান্নার স্বামী পায়েল মিয়ার দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ মার্চ দুপুর প্রায় দেড়টার দিকে মিলন ও তার অন্যান্য সহযোগীরা পায়েল মিয়াকে তার নিজ বাড়ি থেকে জোরপূর্বক অপহরণের চেষ্টা করে। এ সময় পায়েলের সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী তামান্না তাতে বাধা প্রদান করলে তার তলপেটে জোরে লাথি মেরে ফেলে দেয় প্রধান অভিযুক্ত মিলন মিয়া এবং তার স্বামী পায়েলকে জোরপূর্বক নিজ বাড়ির ভেতরে নিয়ে যায়। পরে পুলিশের সহযোগিতায় পায়েল মিয়াকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার দু’দিন পর গত ২৫ মার্চ পায়েলের স্ত্রী তামান্না বাদী হয়ে মিলন মিয়াকে প্রধান আসামিসহ মোট চারজনের নাম উল্লেখ করে আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- অলি মিয়া (২২), কালাম মিয়া (৫০) ও সাইমন (২৩)। পরে আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানাকে এফআইআর’র নির্দেশ দেন। এতে করে আরও ক্ষীপ্ত হয়ে ওঠেন মিলন ও তার সহযোগীরা।
এ পরিস্থিতিতে গত ২৯ মার্চ দুপুর প্রায় আড়াইটার দিকে আমলাপাড়া ওয়াবদা মোড়ের কাঞ্চন মিয়ার ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিলেন তামান্না বেগম। এ সময় মিলন মিয়াসহ তার অন্যান্য সহযোগীরা তামান্নার ওপর হামলা চালায়। হামলায় অন্তঃসত্ত্বা তামান্নার তলপেটে একাধিক লাথির আঘাত করায় তিনি গুরুতর আহত হয়ে পড়েন। এ সময় চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসে এবং হামলাকারী মিলন ও তার লোকজনের হাত থেকে তামান্নাকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে হাসপাতালের চিকিৎসক প্রাথমিক পরীক্ষায় তামান্নার গর্ভের সন্তানের নড়াচড়া টের না পেয়ে আল্ট্রাসোনাগ্রাম পরীক্ষা করেন। পরীক্ষার রিপোর্টে আঘাতজনিত কারণে ইতোমধ্যে তামান্নার গর্ভে থাকা অনাগত সন্তানের মৃত্যু হয়েছে এবং এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে মৃত বাচ্চাটি প্রসব করা না হলে মায়ের জীবন ঝুঁকিতে পড়বে বলে জানান চিকিৎসক। পরদিন ভোর ৬টার দিকে একটি মৃত সন্তান প্রসব করেন বলে জানান তামান্না।
তিনি আর বলেন, ‘আমার স্বামীর সঙ্গে চলমান বিরোধকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে আমার গর্ভের সাত মাসের সন্তানকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যেই এ হামলা চালানো হয়।’
মামলার তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ করে তামান্না বলেন, ‘এ মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অথচ আসামিরা এলাকায় দাপটের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং মামলা তুলে নিতে অনবরত বিভিন্ন ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছেন।’
আসামিদের গ্রেফতারের আওতায় এনে দ্রুত বিচারের দাবি জানান ভুক্তভোগী তামান্না বেগম। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাসহ স্থানীয় প্রিন্ট, ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এনএস