Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কর্মকর্তার ‘অনৈতিক দাবি’ পূরণ না করায় মুক্তিযোদ্ধার ভাতা আটক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২১ জুন ২০২২ ২২:৪৪

বগুড়া: দেশের ১১ নং সেক্টরের অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেন বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. হাফিজুর রহমান (৭০)। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেই স্বাধীন দেশে আজ তিনি গৃহহীন। এমনকি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ করা সম্মানি ভাতা থেকেও বঞ্চিত তিনি। এখন নিজ জন্মস্থান গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার রতনপুর গ্রামের একটি মসজিদে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন এই মুক্তিযোদ্ধা। অপরের দেওয়া এক খণ্ড জমিতে একটি কুঁড়ে ঘর তুলে বাস করেছেন তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সাব এডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার জোবায়ের হোসেন চৌধুরীর অনৈতিক দাবি পূরণ না করায় বরাদ্দ করা ভাতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২১ জুন) দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ভারতীয় তালিকা এবং মুক্তিবার্তা তালিকাভুক্ত এই মুক্তিযোদ্ধা। এ সময় হাফিজুর রহমান সঙ্গে যুদ্ধকালীন কমান্ডার খায়রুল ইসলাম, সহযোদ্ধা মো. ইব্রাহিম খলিল্লাহ, মোজা ব্যাপারী, আব্দুর রশিদ এবং নুরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে হাফিজুর রহমান বলেন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশকে মুক্ত করতে নিজ এলাকা ফুলছড়ি থেকে ভারতীয় মেঘালয় রাজ্যে মুক্তিযোদ্ধা রিক্রুট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কমান্ডার মো. খায়রুল ইসলামের অধীনে ২৩ দিনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে তার ৩ নং প্লাটুনের কমান্ডার ইব্রাহিম খলিল্লাহ পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য একটি এসএলআর তুলে দেন।

তিনি জানান, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার ভারতীয় তালিকা নং ৪১৯২৫ এবং লাল মুক্তিবার্তা তালিকায় তার নম্বর ০৩১৭০৪০১৯১। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের (বামুস) সনদ নং ২৫৬৭৬২। অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছেন। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে ১৯৮৮ সালে ভয়াবহ বন্যা ও নদী ভাঙনে ভুমিহীন হয়ে যান তিনি। ঠাঁই হয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। দুর্ভাগ্যের বিষয় ওই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংস্কার ও সুরক্ষার কাজের জন্য ২০১৯ শেষ আশ্রয়টি থেকেও তাকে উচ্ছেদ করা হয়। তারপর থেকেই তার ঠাঁই মিলেছে অপরের দেওয়া এক খণ্ড জমিতে।

ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা আরও জানান, বয়সের কারণে শারীরিক শ্রমের কোনো কাজ করতে পারেন না তিনি। পরে স্থানীয় একটি মসজিদে মুয়াজিনের দায়িত্ব দেন স্থানীয়রা। সেখান থেকে পাওয়া সামান্য অর্থে তিনি ও তার বৃদ্ধা স্ত্রীর জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে। অথচ দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদান চালু হওয়ার পর থেকে ২০১০ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবরে বহুবার লিখিত আবেদন করেছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও জানান, সম্প্রতি গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিদের্শনায় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা কমিটির সদস্য সচিব একটি তদন্ত করে তিনি যে মুক্তিযোদ্ধা (হাফিজুর রহমান) এবং ভাতা পাওয়ার যোগ্য সে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। যথারীতি ওই তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা ভাতা বায়স্তবায়ন কমিটি তার ভাতার প্রাপ্তির বিষয়টি অনুমোদনও করেছেন। তারপরও মুক্তিযোদ্ধার সম্মানি ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তিনি।

এই বঞ্চনার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে লিখিত বক্তব্যে হাফিজুর রহমান বলেন, জেলার ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সাব এডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার জোবায়ের হোসেন চৌধুরীর অনৈতিক দাবি পূরুণ না করায় শেষ পর্যন্ত বরাদ্দকৃত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা পাচ্ছে না তিনি।

সারাবাংলা/এনএস

বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. হাফিজুর রহমান

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর