লঞ্চের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত নন নৌযান ব্যবসায়ীরা
২২ জুন ২০২২ ১২:৩১
বরিশাল: ২৫ জুন উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে চালু হতে যাচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এই সেতু দিয়ে বরিশাল থেকে স্বল্পসময়ে সরাসরি ঢাকায় যেতে পারবে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। বর্তমানে ঢাকা-বরিশাল যাতায়াত করতে সময় লাগে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা। সেতু চালু হলে লাগবে সাড়ে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা।
তবে লঞ্চের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত নন নৌযান ব্যবসায়ীরা। তারা মনে করেন, সেতু চালু হওয়ার পর কিছু দিন লঞ্চে যাত্রী কম থাকবে। কিন্তু লঞ্চ অনেক যাত্রীর কাছেই আবেগের বিষয়। সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে লঞ্চে যাতায়াত অনেকটাই সাশ্রয়ী। এছাড়া বরিশালবাসী অনেক বিলাসীও। আরামদায়ক ভ্রমণ ও কম খরচের কথা ভেবে অনেক যাত্রী লঞ্চেই যাতায়াত করবেন।
লঞ্চ মালিকদের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সাধারণত দিনে প্রতিদিন ৯-১০ হাজারের বেশি যাত্রী লঞ্চে যাতায়াত করেন। লঞ্চ মালিকরা মনে করেন সেতু উদ্বোধনের পরে ৬ মাস হয়তো এই যাত্রী সংখ্যা কিছুটা কমবে। কিন্তু ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। সময়ের চাহিদা মতো দ্রুতগতির লঞ্চ তৈরি করার কথাও ভাবছেন বেশ কিছু লঞ্চ মালিকরা।
একাধিক লঞ্চ ব্যবসায়ী জানান, কয়েক বছর আগে লঞ্চে করে ঢাকা-বরিশাল যাতায়াতে সময় লাগত ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা। কিন্তু এখন লাগে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা। আগামী দিনে তারা আরও দ্রুতগতির লঞ্চ তৈরির চিন্তাভাবনা করছেন। এসব লঞ্চে লিফট, চলন্ত সিঁড়ি, এটিএম বুথ, হেলিপ্যাড, সুইমিং পুল, নামাজের কক্ষ, ডাইনিং, শিশুদের খেলার জোন, রেস্টুরেন্ট, ব্রেস্টফিডিং রুম ও রোগীদের জন্য আইসিইউ সুবিধা যুক্ত হচ্ছে।
তারা আরও জানান, নৌ-পথে দুর্ঘটনা সড়ক থেকে অনেক কম। তাছাড়া লঞ্চে পরিবারের সঙ্গে যেমন সুন্দরভাবে ভ্রমণ করা যায় বাসে তা সম্ভব নয়। কারণ বাসে এক জায়গায় দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতে হয়। এছাড়া লঞ্চে কম খরচে ভ্রমণ উদযাপনের যে সুযোগ আছে, বাসে তা নেই।
সুরভী লঞ্চের পরিচালক রেজিন উল কবির বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর অল্প সময়ে রাজধানী ঢাকায় যেতে অনেকেই যাত্রীবাহী বাস বেছে নেবেন। তবে সড়ক ও নদীপথের যাত্রায় ভিন্নতা রয়েছে। বিশেষ করে রাত ৯টায় ছেড়ে যাওয়া লঞ্চগুলো রাত ৩টার দিকেই সদরঘাটে ভিড়ছে। অত্যাধুনিক লঞ্চ চালু হলে এই সময় আরও কমে আসবে।
কেন্দ্রীয় লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি ও সুন্দরবন লঞ্চ কোম্পানির চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, সড়ক পথের সঙ্গে পাল্লা দিতে গত ৮ বছরের ব্যবধানে বরিশালের চারটি ডকইয়ার্ডে নির্মিত সুন্দরবন কোম্পানির ৮টি, সুরভীর ৪টি, কীর্তনখোলার ২টি এবং অ্যাডভেঞ্চার কোম্পানির ২টি অত্যাধুনিক বিলাসবহুল লঞ্চ যাত্রীবহরে যুক্ত হয়েছে। এই রুটে এবার আরও আধুনিক লঞ্চ যুক্ত হবে।
তিনি আরও জানান, পদ্মা সেতু চালু হলেও নিরাপত্তা, আরামদায়ক যাত্রা ও স্বল্প খরচ-এর প্রধান তিনটি কারণে লঞ্চের যাত্রীদের ওপর তার তেমন প্রভাব পড়বে না।
সারাবাংলা/এএম