Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ওই ঘটনা ঘটেছিল বলেই নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করতে পেরেছি’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২২ জুন ২০২২ ১৪:২৭

ঢাকা: বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তারা পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ায়। এর পেছনে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মহলের ষড়যন্ত্র ছিল বলে বারবারই উঠে এসেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে। তবে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ করেছিল বলেই শেষ পর্যন্ত সেতুটি নিজেদের অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। এর মাধ্যমেই পরনির্ভরশীলতা কাটিয়ে বাংলাদেশ মর্যাদা ফিরে পাওয়ার পথে এগিয়ে যায় বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমি বরং তাদের ধন্যবাদ জানাই এ কারণে যে, এই ঘটনা ঘটেছিল বলেই সাহস নিয়ে নিজেদের টাকায় নিজেরা পদ্মা সেতু করার ফলে আজ বাংলাদেশের সম্মানটা ফিরে এসেছে। নইলে আমাদের দেশে সবার পারসেপশন ছিল, এক ধরনের মানসিকতা ছিল যে আমরা অন্যের অর্থায়ন ছাড়া কিছুই করতে পারব না। এই যে পরনির্ভরশীলতা, পরমুখাপেক্ষিতা— এই দৈন্যতা ছিল। বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধের পর আমরা যখন (নিজ অর্থায়নে বাস্তবায়নের) সিদ্ধান্ত নিলাম, তখন অন্তত আমরা অন্তত সেই জায়গা (পরমুখাপেক্ষিতা) থেকে বের হতে পেরেছি। সেই অচলায়তন ভেঙে আমরা প্রমাণ করেছি আমরাও পারি। এতেই আমি খুশি।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২২ জুন) সকাল ১১টায় তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। পদ্মা সেতুতে যেসব প্রতিষ্ঠান অর্থায়ন বন্ধ করেছিল এবং যারা পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছিলেন, তাদের জাতির কাছে দুঃখপ্রকাশ করা উচিত কি না— এমন এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এমন উত্তর দেন।

আরও পড়ুন- নেতৃত্বের যোগ্য কোনো নেতাই কি নেই— বিএনপিকে প্রশ্ন শেখ হাসিনার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাংকের ব্যাপারে একটা কথাই বলব— একটা কথা আছে, নিজের ভাঁড় ভালো না তো গোয়ালার ঘিয়ের দোষ দিয়ে লাভ কী! বিশ্বব্যাংককে আমি কী দোষ দেবো? তারা বন্ধ করল কাদের প্ররোচনায়? আমাদের দেশের কিছু মানুষের প্ররোচনাতেই তো তারা (অর্থায়ন) বন্ধ করেছিল। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।

তিনি বলেন, আর যারা বিভিন্ন কথা বলেছে, সেখানে আমার কিছু বলার দরকার নেই। তারা নিজেরাই তো বুঝতে পারছে। যদি তাদের অনুশোচনা থাকে, না থাকলে আমার কিছু বলার নেই। এখান আর আমার কারও বিরুদ্ধে কোরো অভিযোগ নেই।

আরও পড়ুন- প্রসঙ্গ ড. ইউনূস— আমি তদন্ত করলে তো বলবেন প্রতিহিংসাপরায়ণ

বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু থেকে অর্থায়ন বন্ধ করলেও সেই টাকা উদ্ধার করে অন্যান্য প্রকল্পে ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এটা কিন্তু আমাদের অনেকে জানেন না। আমি জানি না, কেন জানেন না। আমরা কিন্তু বিশ্বব্যাংকের অংশীদার। তারা কোনো অনুদান দেয় না। আমরা ঋণ (লোন) নিই এবং সুদসহ সেটি পরিশোধ করি। কাজেই বাংলাদেশের নামে যদি তারা কোনো ঋণ বরাদ্দ (লোন স্যাংশন) করে, সে টাকা তারা দিতে বাধ্য। কোনো একটা প্রকল্পে সেই টাকা বন্ধ করে দিলে সেই টাকা নিয়ে চলে যাবে, সেটা যেতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, অর্থনীতিবিদ বা আমাদের অন্য যারা কাজ করেন, তারা কেন এগুলো জানেন না, আমি জানি না। এরা দাতা না। আমি তাদের কাছে ভিক্ষা নেই না। ব্যাংকের অংশীদার হিসেবে আমরা লোন নেই, সুদসহ সেই লোন পরিশোধ করি। সুদের হার হয়তো কম, কিন্তু সুদসহই পরিশোধ করতে হয়। কাজেই একটা প্রজেক্টের টাকা বন্ধ হয়ে গেলে সেই টাকা নিয়ে চলে যাবে, সেটা কিন্তু যেতে পারে না। আমি ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ওই দাতা দাতা কথাটা বন্ধ করে দিছিলাম। আমি বলেছি উন্নয়ন সহযোগী। সাংবাদিক বন্ধুদেরও মাথায় রাখা উচিত, আমরা কারও করুণা ভিক্ষা নেই না।

আরও পড়ুন- ‘পদ্মা সেতু এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে সংযোগের বড় লিংক’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমরা কনসোর্টিয়ামের মিটিংয়ে প্যারিসে যেতাম। আমি বললাম, আমরা যাব কেন? ওরা এখানে এসে টাকা দিয়ে যাবে। আমি সেটা শুরু করলাম। তখন কিবরিয়া সাহেব অর্থমন্ত্রী। তাকে বলেছিলাম, আমাদের যেতে হবে কেন? আমি তো লোন নিচ্ছি। তাদের গরজে টাকা তারা টাকা দেবে, এখানে এসে করুক। আপনি কনসোর্টিয়াম মিটিং ঢাকায় করেন। এরপরে আমরা ঢাকায় মিটিং করেছি। এই টেকনিক্যাল জিনিসগুলো জানা দরকার। আমাদের জুজুর ভয় দেখিয়ে তো লাভ নাই।

প্রধানমন্ত্রী এসময় কারও নাম উল্লেখ না করে আরও বলেন, যারা যারা বলছে, এখন বুঝতেছে। সবাইকে দাওয়াত দিচ্ছি। আমরা সবাইকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে যাব পদ্মা সেতুতে।

আরও পড়ুন-

‘বন্যায় দুর্ভোগ লাঘবে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে’

শনিবার উদ্বোধন, পদ্মা সেতুর অগ্রগতি তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

অর্থায়ন বন্ধ টপ নিউজ পদ্মা সেতু পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন বিশ্বব্যাংক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর