দেশে ৩ মাসে কোটিপতি বেড়েছে ১৬২১ জন
২২ জুন ২০২২ ১৮:২৩
ঢাকা: করোনা মহামারি পরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়ায় পাশাপাশি বেড়েছে কোটিপতি ব্যাংক হিসাবধারীর সংখ্যা। চলতি ২০২২ সালের প্রান্তিক (মার্চ) শেষে দেশে কোটিপতি ব্যাংক হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ লাখ ৩ হাজার ৫৯৭ জন। সর্বশেষ তিন মাসে দেশে কোটিপতির হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়েছে ১ হাজার ৬২১ জন।
এর আগে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরের শেষে দেশে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ এক হাজার ৯৭৬টি। সে হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে কোটিপতি হিসাবধারীর (ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান) সংখ্যা বেড়েছে এক হাজার ৬২১টি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
এ ব্যাপারে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জা আজিজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিবছর দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এটি বন্ধ করা গেলে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা আরও বাড়ত। তারপরেও বলব এই অর্থটা পাচার না হয়ে ব্যাংকে জমা হচ্ছে এটি খুবই আশাব্যাঞ্জক খবর।’
তিনি বলেন, ‘দেশে একদিকে দারিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বাড়ছে অন্যদিকে বাড়ছে কোটিপতির সংখ্যা। দেশে কোটিপতি বাড়ার মাধ্যমে জনগণের মাঝে আয়ের বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে। এটি অশুভ লক্ষণ বলেই বলেই মনে হচ্ছে।’
মির্জা আজিজ আরও বলেন, ‘কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা বাড়াটা যেমন ইতিবাচক তেমনি আয়ের বৈষম্য বেড়ে যাওয়াটা একটা নেতিবাচক।’
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, সর্বশেষ গত ৩১ শে মার্চ শেষে ব্যাংকগুলোতে (মার্চ প্রান্তিক শেষে) আমানতের পরিমাণ ছয় লাখ ৬৩ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা। যা গত ডিসেম্বর শেষে আমানতের পরিমাণ ছিল ছয় লাখ ৫৩ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে তিন মাসে এসব হিসাবে আমানত বেড়েছে ৯ হাজার ৬৪৭ কোটি টাকা। চলতি বছরের মার্চ মাস শেষে ব্যাংকিংখাতে মোট হিসাবধারীর সংখ্যা ১২ কোটি ৭৩ লাখ। এসব হিসাবে আমানতের পরিমাণ ১৫ লাখ ১৪ হাজার ৮৯৫ কোটি টাকা।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৯৩ হাজার ৮৯০ জন। ২০২১ সালের মার্চ শেষে কোটিপতি হিসাবধারী বেড়ে ৯৪ হাজার ২৭২ জনে। ২০২১ সালের জুনে তা বেড়ে হয়েছে ৯৯ হাজার ৯১৮ জন। আর ডিসেম্বর শেষে দেশে কোটিপতির সংখ্যা হয় ১ লাখ ১ হাজার ৯৭৬ জন। সর্বশেষ চলতি বছরের ৩১ শে মার্চ শেষে দেশে কোটিপতি হিসাব ধারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩ হাজার ৫৯৭ জন।
উল্লেখ্য ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারীর সংখ্যা ছিল পাঁচজন। ১৯৭৫ সালে এ সংখ্যা বেড়ে হয় ৪৭ জনে। দেশে ১৯৮০ সালে কোটিপতি ছিলেন ৯৮ জন, ১৯৯০ সালে ৯৪৩ জন, ১৯৯৬ সালে দুই হাজার ৫৯৪ জন, ২০০১ সালে পাঁচ হাজার ১৬২ জন, ২০০৬ সালে আট হাজার ৮৮৭ জন এবং ২০০৮ সালে ১৯ হাজার ১৬৩ জন কোটিপতি গ্রাহক ছিলেন। ২০১৮ সালের ৩১ শে ডিসেম্ভর পর্যন্ত দেশে কোটিপতির সংখ্যা ছিলো ৭৫ হাজার ৫৬৩ জন। ২০২০ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশে কোটিপতি আমানতকারী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩ হাজার ৮৯০ জন। ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৯৭৬ জন। সর্বশেষ চলতি বছরের ৩১ মার্চ শেষে দেশে কোটিপতির সংখ্যা হয়েছে ১ লাখ ৩ হাজার ৫৯৭ জন।
আরও পড়ুন: প্রতি বছর দেশে কোটিপতি বাড়ছে ৯ হাজার ১৬৩ জন
সারাবাংলা/জিএস/একে