ফ্যামিলি কার্ডে টিসিবির পণ্য পেয়ে খুশি নিম্ন আয়ের মানুষেরা
২২ জুন ২০২২ ২০:০১
ঢাকা: সারাদেশে ফ্যামিলি কার্ডে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। কিন্তু সব জায়গায় এখনও ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। তবে যেসব এলাকায় পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে সেসব এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষেরা ফ্যামিলি কার্ডে টিসিবির পণ্য পেয়ে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন। বুধবার (২২ জুন) রাজধানীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে নিম্ন আয়ের মানুষের চোখে-মুখে খুশির চিহ্ন দেখা গেছে।
টিসিবি জানিয়েছে, সারাদেশে কয়েকটি জেলা ছাড়া ২২ জুন থেকে আগামী ৫ জুলাই পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে। তবে মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ জেলায় বিক্রি শুরু হবে ২৬ জুন থেকে। আর বন্যার কারণে সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে আপাতত স্থগিত থাকবে এ কার্যক্রম। পরিস্থিতি বিবেচনায় বিক্রির তারিখ পরে জানানো হবে। ফ্যামিলি কার্ডে একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল ও এক কেজি চিনি কিনতে পারবে। প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১১০ টাকা, চিনি ৫৫ টাকা এবং মসুর ডাল ৬৫ টাকা দরে কেনা যাবে। অর্থাৎ প্যাকেজ প্রতি দাম পড়ছে ৪০৫ টাকা।
রাজধানীর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উত্তর মুগদা মদিনাবাগ এলাকায় টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডে পণ্য বিক্রি করতে দেখা গেছে। সেখানকার স্থানীয় কাউন্সিল অফিসের একজন বলেন, ‘প্রত্যেকেই ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে গিয়েছিল। পরে তাদের টিসিবির ফ্যামিলি কার্ড দেওয়া হয়। আজ তাদের ন্যায্যমূল্যে টিসিবির পণ্য দেওয়া হয়েছে। কার্ড দিয়ে পণ্য পেয়ে খুশি সেখানকার নিম্ন আয়ের মানুষেরা।’
নিম্ন আয়ের মানুষদের একজন আক্কাস আলী। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘৪০৫ টাকায় দুই লিটার তেল, এক কেজি চিনি ও দুই কেজি ডাল পেয়ে আমি খুবই খুশি। কারণ বাজারে এখন এসব পণ্যের যে দাম তাতে না খেয়ে থাকার উপক্রম হয়েছে আমাদের।’
রাজধানীর তেজগাঁও, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় একই রকম চিত্র দেখা গেছে। তেজগাঁও এলাকা থেকে টিসিবির পণ্য কেনা রাশিদা আক্তার সারাবাংলাকে বলেন, ‘৪০৫ টাকা দিয়ে টিসিবির পণ্য নিয়েছি। বাজার থেকে দুই লিটার তেল কিনতেই ৪০০ টাকা লেগে যাবে। কিন্তু এখানে দুই লিটার তেল, এক কেজি চিনি ও দুই কেজি ডাল পেয়েছি। এতে কিছুটা হলেও আমাদের কষ্ট কমবে।’
তবে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সেগুনবাগিচা মসজিদের উল্টোদিকে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন অভিযানের অফিসে জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়েই টিসিবির পণ্য দেওয়া হচ্ছিল। সকালে এই এলাকার স্থানীয় কাউন্সিলর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিতে সই করেন। আর তা দিয়েই ফ্যামিলি কার্ডের পণ্য নিচ্ছিল এই এলাকার নিম্নআয়ের মানুষেরা। জানতে চাইলে এই এলাকায় টিসিবির পণ্য বিক্রির দায়িত্ব পাওয়া এম অ্যান্ড এন ট্রেডার্সের মামুন সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভোটার আইডি কার্ড দিয়েই আমরা টিসিবির পণ্য দিচ্ছি। কারণ ফ্যামিলি কার্ড এখনও প্রস্তুত হয়নি। যারা এই ওয়ার্ডের তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র রেখে দেওয়া হচ্ছে। আমরা তা খাতায় লিপিবদ্ধ করে আগামীকাল তা জমা দেব। পরে তা ফ্যামিলি কার্ড হয়ে আসবে।’ এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আজ আমরা ৫০০ নিম্ন আয়ের মানুষকে টিসিবির পণ্য দিতে পেরেছি। আমাদের এই কার্যক্রম চলবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের এখানে এখনও কার্ড আসেনি। নগরভবন থেকে প্রিন্টিং মিসটেক হয়েছে। তাই কার্ড আসতে আরও এক থেকে দুই দিন লাগবে। আমরা তাই জাতীয় পরিচয়পত্র রেখে টিসিবির পণ্য বিক্রির অনুমতি দিয়েছি।’
একই বিষয়ে জানতে চাইলে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোনো এলাকায় ফ্যামিলি কার্ড ছাড়া পণ্য দেওয়া হলে আমরা ব্যবস্থা নেবো। পুরো বিষয়টির তদারকির দায়িত্ব স্থানীয় কাউন্সিলরের। উনারই বিষয়টি দেখভাল করার কথা।’
উল্লেখ্য, এবার আর আগের মতো ট্রাকে নয়, ফ্যামিলি কার্ডধারীরা ডিলারের দোকান বা নির্ধারিত স্থাপনা থেকে টিসিবির পণ্য সংগ্রহ করতে পারছেন।
সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম