মহিষের মালিকানা নিয়ে জামাই-শ্বশুরের দ্বন্দ্ব গড়াল হাইকোর্টে
২৩ জুন ২০২২ ২৩:২৪
ঢাকা: লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় ১৭টি মহিষের মালিকানা নিয়ে জামাই-শ্বশুরের দ্বন্দ্ব শেষ পর্যন্ত হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশে জামাই আবদুল অদুদ খান ও তার শ্বশুর নূর মোহাম্মদের মধ্যে চলমান দ্বন্দ্ব আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড।
দুই পক্ষের সমাঝোতা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৭টি মহিষের মধ্যে পাঁচটি বড় ও চারটি ছোট মহিষ পাবেন জামাতা অদুদ খান। আর ছয়টি বড় ও দুইটি ছোট মহিষ নেবেন শ্বশুর নূর মোহাম্মদ।
এর আগে উচ্চ আদালত দুই পক্ষের মধ্যে বিষয়টি সমঝোতার জন্য সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডে (আইনি সহায়তা কেন্দ্র) পাঠান। বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) সুপ্রিম কোর্টের লিগ্যাল এইড কার্যালয়ে দীর্ঘ চার ঘণ্টা সালিশ বৈঠক শেষে বিষয়টি সমাঝোতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়।
লিগ্যাল এইড অফিসে জামাইয়ের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আক্তার রসুল মুরাদ ও মোসাদ্দেক বিল্লাহ। শ্বশুরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আলাউদ্দিন।
আইনজীবীরা জানান, লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরনিয়ামত গ্রামে মো. আব্দুল ওদুদ সৌদি আরব যাওয়ার সময় পাঁচটি গরু ও আটটি মহিষ তার শ্বশুর নূর মোহাম্মদের জিম্মায় রেখে যান। ১১ বছর পর ২০১৮ সালে বিদেশ থেকে ফিরে এসে জানতে পারেন, সবমিলিয়ে ১৩টি গরু-মহিষের সংখ্যা ২৭-এ দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ২০টি মহিষ ও সাতটি গরু হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি মহিষ পরে মারা যায়।
সবগুলো গরু ও মহিষ শ্বশুর কাছ থেকে ফেরত চান ওদুদ। কিন্তু শ্বশুর নূর মোহাম্মদ এগুলো ফেরত না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের (এডিএম) কাছে মামলা করেন ওদুদ। তদন্তের পর গরু-মহিষগুলো জামাইকে বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে এই নির্দেশের বিরুদ্ধে শ্বশুর দায়রা জজ আদালতে আবেদন করেন। পরে আদালত স্থানীয় কলেজ অধ্যক্ষের মাধ্যমে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ বহাল রাখেন আদালত।
এরপর শ্বশুর ওই আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডে পাঠান।
জামাইয়ের পক্ষের আইনজীবী মোসাদ্দেক বিল্লাহ জানান, বৃহস্পতিবার জামাই-শ্বশুর এবং দুই পক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতিতে বিষয়টি সমঝোতা করিয়ে দেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসার এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফারাহ মামুন।
মোসাদ্দেক বিল্লাহ জানান, উভয় পক্ষের সম্মতিতে ১৭টি মহিষের মধ্যে বড় পাঁচটি ও ছোট চারটি মহিষ জামাই নেবেন। আর বড় ছয়টি এবং ছোট দু’টি মহিষ শশুর নেবেন। আর গরু নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আগেই সমঝোতা হয়েছে। বিরোধ নিষ্পত্তির এ সিদ্ধান্ত এখন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চকে অবহিত করা হবে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর