Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলাদেশে রেলপথেও ট্রানজিট চায় ভারত

ঝর্ণা রায়, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৪ জুন ২০২২ ০৯:৩৮

ঢাকা: বাংলাদেশে ভূখণ্ড ব্যবহার করে পণ্য পরিবহনের সুযোগ বেশ আগে থেকেই পাচ্ছে ভারত। ট্রানজিটের অংশ হিসেবে প্রথমে সড়কপথ বেছে নেওয়া হলেও বছর দুয়েক আগে প্রথমবারের মতো ভারতীয় ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করার সুযোগ পেয়েছে। আর নৌপথ ব্যবহার করে ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার সুযোগ রয়েছে ১৯৭২ সাল থেকে। যদিও ২০১৬ সালের ১৬ জুন থেকে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক ট্রানজিট সুবিধা পায় ভারত।

এবার রেলপথেও ট্রানজিট সুবিধা চায় দেশটি। এরই মধ্যে এমন একটি প্রস্তাব রেলপথ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

প্রস্তাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের রেলপথ ব্যবহার করে পশ্চিমবঙ্গের শিয়ালদহ ও হলদিবাড়ির মধ্যে ট্রেন চলাচল শুরু করতে চায় ভারত। তাদের ওই প্রস্তাব পর্যালোচনা করে দেখতে চায় সরকার।

রেলপথ সূত্রে জানা গেছে, কোলকাতার শিয়ালদহ থেকে শিলিগুড়ির দূরত্ব ৫৭৩ কিলোমিটার। প্রস্তাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে রেলপথে ট্রানজিট পেলে শিয়ালদহ থেকে শিলিগুড়ি -হলদিবাড়ির দূরত্ব ২০০ কিলোমিটারে নেমে আসবে। আর ভ্রমণের সময় কমবে অন্তত তিন ঘন্টা। সুত্র জানিয়েছে, প্রস্তাবিত ট্রানজিট রুট হবে চুয়াডাঙার দর্শনা- গেদে সীমান্ত দিয়ে ট্রেন বাংলাদেশে প্রবেশ করে নীলফামারির চিলাহাটি- হলদিবাড়ি সীমান্ত দিয়ে শিলিগুড়ি- শিয়ালদহ পৌঁছাবে।

প্রস্তাবে এর সুবিধা হিসেবে যুক্তি দেখানো হয়- এই সুযোগ পাওয়া গেলে দুই দেশই লাভবান হবে। সময় বাঁচবে ভারতীয় রেলওয়ের আর আয় বাড়বে বাংলাদেশ রেলওয়ের।

সূত্রমতে, সম্প্রতি ভারতীয় রেলওয়ের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে এসে এ প্রস্তাব দেয়।

অখণ্ডিত ভারতবর্ষে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে মানুষের যাতায়াত সহজীকরণের পাশাপাশি মালামাল পরিবহনের জন্য বিভিন্ন স্থানে রেললাইন স্থাপন করে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসক। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) এর সঙ্গে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মোট আটটি স্থানে ইন্টারচেঞ্জ সুবিধা ছিল। ভারতবর্ষ বিভক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ সব রেলপথের গুরুত্ব কমতে থাকে। ১৯৪৭ সালে ১৫ আগস্ট ভারত-পাকিস্তান বিভক্তের পরেও এ পথে রেল চলাচল চালু ছিল।

সে সময় এ পথে দুই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করত। ওই সময় পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলো হলদিবাড়ির মধ্য দিয়ে পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) এর চিলাহাটিতে প্রবেশ করত। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় দুই দেশের মধ্যে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যা বর্তমান সরকার দীর্ঘ ৫৭ বছর পর চালু করল।

গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের ২৭ মার্চ দুই দেশের বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ নামের ট্রেনটি উদ্বোধন করে।

ব্রিটিশ সরকারের সময়ে দুই দেশের মধ্যে থাকা মোট আটটি ইন্টারচেঞ্জের মধ্যে বেনাপোল-পেট্রোপোল, দর্শনা- গেদে, রোহনপুর- সিংবাদ, বিরাল- রাধিকাপুর এবং সবশেষ হলদিবাড়ি- চিলাহাটি এই মোট পাঁচটি এরই মধ্যে ফের চালু করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে- সম্প্রতি হলদিবাড়ি-চিলাহাটি লিংক চালু হওয়ায় বাংলাদেশ হয়ে পুরনো শিলিগুড়ি-শিয়ালদহ রুট পূনরায় চালু করার কথা ভাবছে ভারত সরকার। আর সে জন্যই বাংলাদেশের কাছে ট্রানজিট চায় ভারতীয় রেলওয়ে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, বিষয়টি একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আলোচনার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু বলা যাবে না।

জানা গেছে, ঢাকা-দর্শনা-কোলকাতা পর্যন্ত একটি ট্রেন চালুর চিন্তা করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। সেটি হবে রাত্রিকালীন পরিষেবা। এ বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতকে প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। যদিও এ প্রসঙ্গে কোনো কথাই বলতে চাননি বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলওয়ে বাংলাদেশ এর একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, এটি এখনও প্রস্তাব আকারে রয়েছে। তবে দেশের স্বার্থ চিন্তা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে তিনটি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করছে। এরমধ্যে ঢাকা-কোলকাতা রুটে ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’, খুলনা-কোলকাতা রুটে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ এবং দীর্ঘ ৫৭ বছর বন্ধ থাকার পর সদ্য চালু হওয়া ঢাকা-নিউজলপাইগুড়ি রুটে ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ যাত্রী পরিবহন করছে। এ ছাড়া চলছে মালবাহী ট্রেন।

সারাবাংলা/জেআর/একে

ট্রানজিট সুবিধা ট্রেন যোগাযোগ বাংলাদেশ ভারত


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

‘তুফান’ আসছে হিন্দি ভাষায়
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৪৯

সম্পর্কিত খবর