Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অকার্যকর অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দিয়েই চলছে রাবির ফিলিং স্টেশন

আবু সাঈদ সজল, রাবি করেসপডেন্ট
২৪ জুন ২০২২ ০৮:৪৫

রাবি: প্রায় ৩০ হাজার লিটার জ্বালানি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পরিবহন দফতরের ফিলিং স্টেশন। এতে আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহৃত চারটি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের (ফায়ার এক্সটিংগুইশার) রাসায়নিকের মেয়াদ কত বছর আগে উত্তীর্ণ হয়েছে জানে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ব্যবহৃত চারটি যন্ত্রের একটিতেও নেই রিফিলের মেয়াদ-কালের উল্লেখ।

প্রশাসনের এমন উদাসীনতায় যেকোনো অগ্নি দুর্ঘটনায় ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে। মেয়াদহীন অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র মূলত অকার্যকর বলে মত বিশেষজ্ঞদের। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, স্টেশনটিতে পৃথক পৃথক পাম্পে ১৪ হাজার ৬০০ লিটার ডিজেল এবং ১৫ হাজার লিটার অকটেন রয়েছে। যেখান থেকে প্রতিদিন ৩০টি বাস, কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের গাড়িতে ডিজেল ও অকটেন সরবরাহ করা হয়। এই ফিলিং স্টেশনটি ২০১৫ সালে তৎকালীন প্রশাসক হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের অধ্যাপক ড.মো.সাইদুজ্জামানের নিরলস প্রচেষ্টায় তৈরি করা হয়েছে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে ব্যবহৃত পরিবহনগুলোর ডিজেল ও অকটেন বাহিরে থেকে কিনতে হতো।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে দেখা যায়, গুরুত্বপূর্ণ এই ফিলিং স্টেশনটি দুই তলা বিশিষ্ট পরিবহন দফতর ভবনের নিচ তলা ডান দিকে অবস্থিত। এই স্টেশনটির পাশেই রাখা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার, অ্যাম্বুলেন্স ও মিনিবাসসহ প্রায় ১৫-২০টি গাড়ি। এছাড়া স্টেশনটির সামনেই রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় বাস স্ট্যান্ড। যেখানে প্রতিনিয়ত ৩০-৩৫ বাস অবস্থান করে। ক্যাম্পাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই জায়গাটিতে রয়েছে মাত্র চারটি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র। তার মধ্যে স্টেশন সংলগ্ন ভবনে ৩টি এবং বাকী একটি যন্ত্র ডিজেল পাম্পের ভিতরে। দুটি যন্ত্রের গায়ে রিফিলের তারিখ ও মেয়াদের তারিখ সংবলিত স্টিকারই নেই। আর দুটিতে স্টিকার থাকলেও তাতে কোনো তারিখ লেখা নেই। এছাড়া ৩টি যন্ত্র তালাবদ্ধ লোহার কুঠুরিতে ঢুকানো। অথচ এগুলোর চাবি কার কাছে আছে জানতে চাইলে, তা স্টেশন সংশ্লিষ্ট কেউ জানাতে পারেননি। এমনকি এই যন্ত্রগুলো কীভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জানা নেই পরিবহন দফতরে নিয়োজিত কর্মচারীদের। ভবনে উপস্থিত কর্মচারীদের এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তারা বিষয়টি বলতে পারেননি।

বিজ্ঞাপন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিবহন দফতরের এক কর্মচারী বলেন, সিলিন্ডার লাগানো হয়েছে এখন থেকে প্রায় ৭ বছর আগে। এরপর মাঝে একবার রিফিল করা হয়েছিল। তারপরে আর রিফিল করা হয়েছে কি না সেটা বলতে পারব না।

দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী নওরিন বলেন, এ কয়েকদিন আগে সীতাকুণ্ডে ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। তারও আগে রাজধানীর চুড়িহাট্টার ঘটনা। এছাড়া বর্তমানে সারাদেশেই আগুন লাগার ঘটনা ঘটেই চলছে। এসব দেখেও কারও কোনো টনক নড়ছে না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় মেয়াদোত্তীর্ণ অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র থাকবে এটা খুবই দুঃখজনক, একইসঙ্গে বিপদজনকও বটে। কোনো রকম অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার আগেই প্রশাসন যেন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) আগে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রগুলোর মেয়াদ শেষ হয়েছে— এমন দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দফতরের প্রশাসক মুকসিদুল হক বলেন, আমি করোনার মধ্য দায়িত্ব নিয়েছি। যার ফলে অনেক কাজই করতে পারিনি। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আমি চেষ্টা করছি এই খাতটিকে আরও বেশি আধুনিক করার। ইতোমধ্যেই আমি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রগুলো নতুন করে রিফিল করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই রিফিল করে দেওয়ার কথা রয়েছে।

তবে যন্ত্রগুলো গায়ে স্টিকার ও মেয়াদ না থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে কোনো উত্তর দিতে পারেননি এই প্রশাসক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, জায়গাটি অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য স্পর্শকাতর। আমি দ্রুতই সংশ্লিষ্ট দফতরের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করব।

সারাবাংলা/এনএস

অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ফিলিং স্টেশন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর