রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় ৩ নারীর অস্বাভাবিক মৃত্যু
২৪ জুন ২০২২ ১৩:৫২
ঢাকা: রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় গৃহকর্মীসহ তিনজন নারীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছেন। তারা হলেন- রামপুরা বনশ্রীর গৃহকর্মী সোনিয়া আক্তার (১৪), বংশাল নবাবকাটারা এলাকার আসমা বেগম (৪০) ও মুগদার ফারিয়া ওরফে রিয়া (১৭)।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) রাতে এ ঘটনাগুলো ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় বনশ্রীর সোনিয়া ও বংশালের আসমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাত আড়াইটার দিকে মৃত ঘোষণা করেন। আর মুগদার রিয়ার মৃতদেহ উদ্ধর করে সরাসরি মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
সোনিয়ার বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার কাটপট্টি এলাকায়। বর্তমানে রামপুরা বনশ্রীর সি ব্লক, ৮ নম্বর রোডের ২৪ নম্বর ৪তলা বাড়ির ২য় তলার বাসায় গৃহকর্তা নাজগীর আহমেদের বাসায় কাজ করতেন তিনি।
গৃহকর্তা নাজগীর আহমেদ জানান, মাত্র দুই মাস আগে সোনিয়ার বড় বোন সোনিয়াকে ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজের জন্য দিয়ে যান। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সবাই বাসায় ছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে গৃহকর্তা বারান্দায় গিয়ে দেখেন ব্যায়াম করার জন্য ঝুলানো রিং’র সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে সোনিয়া। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নামিয়ে স্থানীয় ফরাজি হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ সেখান থেকে তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত আড়াইটার দিকে সোনিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তবে কী কারণে সোনিয়া গলায় ফাঁস দিতে পারে সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি গৃহকর্তা।
এদিকে, মৃত আসমার ছোট ভাই মো. রাজু জানান, বংশাল নবাবকাটারা ২৩/৫ নম্বর বাড়ির ২য় তলায় ভাড়া থাকতেন আসমা। দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে ১৮ বছর আগে তার বিয়ে হয়। তাদের কোনো সন্তান নেই। পারিবারিক বিভিন্ন কারণে গত ২২ মে স্বামীকে তালাক দেন আসমা। তবে সম্প্রতি তিনি আবার সাবেক স্বামীর সঙ্গে সংসার করার জন্য যোগাযোগ করছিলেন। তবে দেলোয়ার এতে রাজি হচ্ছিলেন না। এনিয়েই রাগ করে গত রাতে বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেয় আসমা। পাশের কক্ষের ভাড়াটিয়া দেখতে পেয়ে রাত দেড়টার দিকে খবর দেয় তাদের। তখন বাসায় গিয়ে স্বজনরা আসমাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মারা যান তিনি।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ার ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করে জানান, দুটি মরদেহই ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
এদিকে মুগদা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফেরদৌসি আক্তার জানান, খবর পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে মুগদা থানার পাশের গলির একটি বাড়ির ৬তলা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় ফারিয়া ওরফে রিয়ার (১৭) মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া ছিল তার। ৬ মাস আগেই তার বিয়ে হয়েছে। গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর কোতয়ালী থানায়। গ্রামেই থাকতেন তিনি।
তিনি আরও জানান, রিয়া গত মঙ্গলবার চিকিৎসার জন্য গ্রাম থেকে মুগদার তার এক আত্মীয়ের ওই বাসায় আসেন। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার মোবাইল ফোনে মায়ের সঙ্গে রাগারাগি হয় তার। পরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
সারাবাংলা/এসএসআর/এনএস