Tuesday 29 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘করোনা ঝুঁকি এড়াতে খালেদার চিকিৎসা হবে বাসায়’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৪ জুন ২০২২ ১৮:৫৯ | আপডেট: ২৪ জুন ২০২২ ২০:১০

ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ বাড়ছে দেশে। এমন অবস্থায় শারীরিকভাবে নানা রকমের জটিলতা থাকলেও কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তবে, শারীরিকভাবে কোনো ধরণের জটিলতা দেখা দিলে আবার তাকে হাসপাতালে আনা হবে বলে জানিয়েছেন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা।

তারা জানান, হার্টের যে ঝুঁকি নিয়ে খালেদা জিয়া হাসপাতালে এসেছিলেন, সেটা এখন স্থিতিশীল আছে। কিন্তু তিনি এখনো সুস্থ হননি।

শুক্রবার (২৪ জুন) বিকেলে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা সংবাদ সম্মেলন করেন।

বিজ্ঞাপন

খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের প্রধান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘শি ইজ ডুইং ফাইন। কিন্তু এই মুহূর্তে কোভিডে আক্রান্ত হলে তিনি (খালেদা জিয়া) ক্রিটিক্যাল পজিশনে চলে যেতে পারেন। তাই তাকে আমরা বাসায় রেখে চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রয়োজন হলে আবারও খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হবে।’

তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার খাদ্যনালীর যে সমস্যা ছিল, সেটি এখন কী অবস্থায় আছে তা দেখা সম্ভব হয়নি। কারণ, সেই ধরনের পরীক্ষা করার মতো এই মুহূর্তে তার শারীরিক অবস্থা নেই।

খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক ডা. এফ এম সিদ্দিক বলেন, ‘করোনাভাইরাসের ধরন ওমিক্রন ভয়াবহ না হলেও বেগম খালেদা জিয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তার ফুসফুসে পানি চলে এসেছিল। পরে বিশেষ ইনজেকশন দিয়ে সেই পানি সরানো হয়। এখন তার হার্টে পানি নেই।’

তিনি বলেন, আমরা রোগীকে (খালেদা জিয়া) এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে বাসা থেকে হাসপাতালে স্থানান্তর করতে পারছি। আর বাসায় প্রতিদিনই আমাদের মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক তাকে মনিটরিং করেন। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে তিনি সুস্থ না হওয়ার পরও কোভিডের কারণে তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এখনও ঝুঁকিতে আছেন। তাকে চিকিৎসার জন্য বাইরে নেওয়ার সুযোগ এখন মোটামুটিভাবে আছে। এখন পর্যন্ত বিমানে ভ্রমণ করার শারীরিক সক্ষমতা আছে।

ডা. সিদ্দিক বলেন, খালেদা জিয়ার কিডনির জটিলতা কিছুটা সমাধান করা গেছে। তবে তার অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ এখন বড় চ্যালেঞ্জ।ওনার ব্লিডিংয়ের যে ঝুঁকি, সিরোসিস অব লিভার সেসব কিন্তু রয়েই গেছে। এটার কোনো চিকিৎসা হয়নি। আমরা শুধু ওনার ব্লিডিং স্পটগুলোকে মাইগ্রেশন করে বন্ধ করে রেখেছি।

তিনি বলেন, গত ছয়মাসে সেগুলোর কী অবস্থা হয়েছে, আমরা কিন্তু ফলোআপ করতে পারিনি। এখনকার কন্ডিশন জানার জন্য ওনার ফলোআপ করাটা আরও রিস্কি হয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার সবগুলো জটিলতার চিকিৎসা করতে হলে বা সুস্থ করতে হলে যা করার দরকার তা দেশে আমরা পুরোপুরি করতে পারছি না। সেই সক্ষমতা, মেডিকেল সেটআপ আমাদের এখানে নেই। তার সুষ্ঠু চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব নয়।

ডা. সিদ্দিক বলেন, এখনো খালেদা জিয়ার ফ্লাই (বিমানে ভ্রমণ) করার মতো শারীরিক সক্ষমতা আছে। বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করলে হয়তো তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।

সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) তার চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তার জন্য দোয়া করার জন্য দেশবাসীকেও ধন্যবাদ দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, বুকে ব্যথা নিয়ে গত ১০ জুন গভীর রাতে বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। পরে দ্রুত এনজিওগ্রাম করে তার হৃদযন্ত্রে একটি স্টেন্ট বসানো হয়। হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া।

তবে, একটি ব্লক অপসারণ করা হলেও তার হৃদপিণ্ডে আরও দুইটি ব্লক ধরা পড়ার কথাও চিকিৎসকরা জানান। ১৪ জুন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ মামুন জানান, বিএনপির চেয়ারপারসনেট হার্টে বাকি দুটি ব্লকে রিং পরানোর মতো শারীরিক অবস্থা নেই।

এর আগে, ২০২১ সালের এপ্রিলে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হন খালেদা জিয়া। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচ দফা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

সারাবাংলা/এসবি/একেএম

খালেদা জিয়া

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর