পদ্মা সেতুতে প্রথম টোল শেখ হাসিনার
২৫ জুন ২০২২ ১২:০১
ঢাকা: দুপুর ১২টা। গাড়িবহর নিয়ে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজায় এলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিশোধ করলেন নির্ধারিত টোল। এরপর প্রমত্তা পদ্মার বুকে দাঁড়িয়ে থাকা প্রকাণ্ড সেতুর ওপর দিয়ে ছুটে চললেন জাজিরা প্রান্তের উদ্দেশে। এরই মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতুর। দুয়ার খুলল দক্ষিণের।
এর আগে শনিবার (২৫ জুন) পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে সুধী সমাবেশে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে বক্তব্য প্রদান করেন। এরপর পদ্মা সেতুর স্মারক ডাকটিকিট, স্মারক মুদ্রা, স্মারক খাম ও স্যুভেনির অবমুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মাওয়া প্রান্তে সুধী সমাবেশে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রী সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে জাজিরা পয়েন্টে পৌঁছে সেতু ও ম্যুরাল-২ এর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন। সেখানে মোনাজাতেও অংশ নেন তিনি।
সুখী সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের মানুষ গর্বিত। সেইসঙ্গে আমিও গর্বিত, উদ্বেলিত। অনেক বাধা উপেক্ষা করে, ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে, আমরা এই সেতু নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছি। এই সেতু কেবল সেতু নয়, এই সেতু কেবল দুই পাড়ের মানুষকে যুক্ত করছে না, এই সেতু কেবল ইস্পাত-কংক্রিটের কাঠামো নয়, এই সেতু আমাদের গর্ব, এই সেতু আমাদের মর্যাদা। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আমাদের আবেগ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ষড়যন্ত্রের কারণে সেতু নির্মাণে দুই বছর দেরি হয়। তবে আমরা হতাশ হইনি। হতোদ্যম হইনি। সব অন্ধকার ভেদ করে আলোর পথে যাত্রা করতে সক্ষম হয়েছি। আজকে পদ্মার বুকে জ্বলে ওঠে লাল নীল সবুজ আলোর ঝলকানি। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি।
সর্বোচ্চ মান বজায় রেখ পদ্মা সেতু নির্মাণের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে নির্মাণ করা হয়েছে পদ্মা সেতু। সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীর পর্যন্ত পাইল বসানো হয়েছে, যা বিশ্বের আর কোনো সেতুতে ব্যবহৃত হয়নি। আরও নানা কারণে এই সেতুর নির্মাণশৈলী প্রকৌশলের পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। কারণ এটি আশ্চর্য একটি নির্মাণ। এর থেকে অনেক কিছু শেখার রয়েছে। ভবিষ্যতে এ থেকে জ্ঞান নিয়ে অনেক স্থাপনা করতে পারবে। সে সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি।
বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেদিন শুধু আমার পাশে দাঁড়াননি, অর্থ দিয়েছিলেন। আমরা বলেছিলাম, বাজেট থেকে করব। ওটা তো জনগণেরই টাকা। আমি জানি না, সেদিন যারা বলেছিলেন নিজস্ব অর্থায়নে হবে না, এটি স্বপ্নমাত্র, তাদের কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। তাদের চিন্তার দৈন্য আছে, আত্মবিশ্বাসের দৈন্য আছে। কিন্তু আজ হয়তো তাদেরও আত্মবিশ্বাস হবে।
মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়িতে সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত দলের জনসভায় যোগ দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বিকেল সাড়ে ৫টায় হেলিকপ্টারে জাজিরা পয়েন্ট থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
সারাবাংলা/এনআর/এএম