কামরাঙ্গীরচরে কিশোর গ্যাংয়ের দ্বন্দ্বে নিহত ১
২৫ জুন ২০২২ ১৩:৩৫
ঢাকা: রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে কিশোর গ্যাংয়ের দুইগ্রুপের দ্বন্দ্বে ছুরিকাঘাতে জীবন চৌধুরী (১৯) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় রাফি আহমেদ (১৮) ও মো. বিজয় (১৭) নামে আরও দুইজন আহত হয়েছেন।
শনিবার (২৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় জীবন। এর আগে, গতকাল শুক্রবার (২৪ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কামরাঙ্গীরচরে কলেজ রোডে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত অবস্থায় তিনজনকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়।
নিহত জীবন কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার পশ্চিমঘর গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে। বর্তমানে কামরাঙ্গীরচরে কলেজ রোডের নুরু মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
জীবনের বাবা আব্দুল হাকিম বলেন, জীবন দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে। বর্তমানে একটি কার্টুন কারাখানায় কাজ করতো। গতকাল শুক্রবার রাতে কলেজ রোডে একটি মারামারির ঘটনা শুনতে পারি। তবে কি নিয়ে মারামারি হয়েছে তা জানতে পারি নাই। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে জীবন ছিল বড়।
নিহত জীবনের বন্ধু মো. নিরব বলেন, তারা বেশ কয়েকজন মিলে কলেজ রোডে ক্রিকেট খেলে। পরে বিজয়সহ মোট আটজন বন্ধু কলেজের ১ নম্বর গেটে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। এ সময় অন্য এলাকার প্রায় ৪০থেকে ৫০ জন সেখানে জড়ো হয়। সেখানে মোবাইলকে কেন্দ্র করে তাদের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়। আমরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে নাজমুল, হৃদয়, বাবুসহ কয়েকজন বিজয়, রাফি ও জীবনকে ছুরিকাঘাত করে।
নিরব আরও জানান, এর আগে তাদের সঙ্গে কোনো ঝামেলা ছিল না। তারা দুই গ্রুপ মোবাইল নিয়ে মারামারি করে। বাধা দিলে তাদের ওপড় হামলা করে। পরে আহত অবস্থায় তিনজনকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
জীবনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানায়, আহত অবস্থায় তিনজনকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছিল। এর মধ্যে জীবন নামে এক যুবক মারা গেছেন। তার পেটে, পাজরে ও পাঠে ছুরিকাঘাত ছিল। আহত রাফির বাম পাজরে ছুরিকাঘাত রয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। আর বিজয়ের হাতে আঘাত রয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আর নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে কামরাঙ্গীরচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, একটি মোবাইল হারিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে ছুরিকাঘাতে তৃতীয় পক্ষের একজন মারা যায়। এ ঘটনায় আরও দুইজন আহত হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ওই এলাকার নোমান নামের একজনের মোবাইল হারিয়ে যায়। এ ঘটনায় তার রুমমেট শামীমকে সন্দেহ করে। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে শামীম ও নোমানের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে নোমান তার বন্ধু হৃদয় ও বাবুসহ কয়েকজন মিলে গতকাল শুক্রবার রাতে কলেজ রোডে একটি গলিতে শামীমের ওপরে হামলা করে। এ সময় সেখানে অবস্থান করা এলাকার কয়েকজন ছেলে তাদের মারামারি না করার জন্য বাধা দেয়। এর একপর্যায়ে হৃদয়, বাবু ও নোমান মিলে জীবনসহ তিনজনকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। পরে চিকিংসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যায় জীবন।
এ ঘটনায় দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদেরর জন্য আটক করা হয়েছে। নোমান শামীমসহ আরও বেশ কয়েকজনকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন ওসি মোস্তাফিজুর রহমান।
সারাবাংলা/এসএসআর/এনএস