‘চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদের জন্য কাজ করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়’
২৬ জুন ২০২২ ১৯:৩১
ঢাকা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঐকান্তিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
রোববার (২৬ জুন) নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. মামুনুর রশীদ কিরনের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী সংসদে এ তথ্য জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একাধিক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা এবং ০৯ থেকে ১১ জুন একটি সেমিনার আয়োজন করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি বিদেশে চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্পর্কিত একটি লেকচার আয়োজন করে। চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আফ্রিকা মহাদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসগুলো নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে আফ্রিকা অনুবিভাগ বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে সেখানকার জলবায়ু, মাটির মান, উৎপাদনক্ষমতা, প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা, বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা বিষয়ক তথ্য আহরণ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, পূর্ব আফ্রিকার দেশ মরিশাস ও সিশেলজে চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদের লক্ষ্যে আরও পাইলট প্রকল্প নিতে একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন পাঠানো হয়। সেখানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিনিধিসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগত খাতের উদ্যোক্তা এবং কৃষিবিদরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। সম্প্রতি কৃষিমন্ত্রী ও আমার যৌথ বৈঠকে চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আফ্রিকার দেশগুলোতে পাইলট প্রকল্প নেওয়ার মাধ্যমে চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে। পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়া, রুয়ান্ডা, মরিশাস ও সিশেলজ, কেনিয়া, উগান্ডা, ইথিওপিয়া, সুদান, সোমালিয়া, কমোরস, মাদাগাস্কার, দক্ষিণ আফ্রিকা অঞ্চলের দেশ বতসোয়ানা, জাম্বিয়া, এসওয়াতিনি, মোজাম্বিক, অ্যাঙ্গোলা, নামিবিয়া, মধ্য আফ্রিকার দেশ গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো, দক্ষিণ সুদান, পশ্চিম আফ্রিকা অঞ্চলের দেশ নাইজেরিয়া, সেনেগাল, মরক্কো, আলজেরিয়া, সিয়েরা লিওন লাইবেরিয়া, ঘানা, গাম্বিয়া এবং উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলের দেশ লিবিয়া ও মিশরে চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদের সম্ভাবনা রয়েছে।
ঢাকায় আয়োজিত ২১তম ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) সম্মেলনের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, কমোরস, তানজানিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, মাদাগাস্কার, কেনিয়া ও সোমালিয়ার মন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সময় চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আলোচনা করেছি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে খসড়া চুক্তি প্রণয়ন করে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে সেখানকার কর্তৃপক্ষের মতামতের জন্য পাঠিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদের ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন ২০১০ সালের আগস্টে আইভরি কোস্ট, লাইবেরিয়া, সেনেগাল ও ঘানা ভ্রমণ করে। প্রতিনিধি দল আফ্রিকার দেশগুলোতে ধান, গম, তুলা, কোকো, কফি ইত্যাদি উৎপাদনের সম্ভাব্যতা চিহ্নিত করে। পরে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ২০১৮ সালের অক্টোবরে আফ্রিকায় চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদের জন্য জমি ইজারা নেওয়া সম্পর্কিত একটি ইমপ্লিমেন্টেশন টাস্ক ফোর্স গঠনের ব্যাপারে সভা আয়োজন করে। সভায় চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদের ব্যাপারে আফ্রিকার দেশগুলোর তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর