‘বানভাসিদের দুর্ভোগ লাঘবে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই’
২৮ জুন ২০২২ ১৭:০৫
ঢাকা: বানভাসিদের দুর্ভোগ লাঘবে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
মঙ্গলবার (২৮ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক গোল টেবিল আলোচনায় সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
‘বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে পানি বণ্টনের ইস্যু’ শীর্ষক এই গোল টেবিল আলোচনা করে সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ রিসার্চ সেন্টার। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন মোস্তফা কামাল মজুমদার।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজকে বন্যার্তদের জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। সেখানে মানুষ কী পরিমাণ মানবেতর জীবন-যাপন করছে আপনারা পত্র-পত্রিকায় তা দেখেছেন, মিডিয়ায় দেখেছেন। যে প্রলয়ঙ্করী বন্যা হয়েছে তা মোকাবিলায় যেভাবে এগিয়ে আসার কথা ছিল, যে পরিকল্পনা থাকার কথা ছিল, আমরা লক্ষ্য করেছি সরকারের তা নেই। তারা অন্য কাজে ব্যস্ত ছিল। দুর্ভাগ্য জনগণের। জনণের ভোটের সরকার যদি না হয়, জনগণের সরকার যদি না হয় তাহলে জনগণের কষ্ট, জনগণের দুঃখ প্রাধান্য পায় না, পায় ব্যক্তিস্বার্থ ও গোষ্ঠী স্বার্থ।’
বাংলাদেশের নদ-নদীর পানি প্রবাহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিয়ে লোকদেখানো জিআরসি মিটিং করেছেন। সেই মিটিংয়ে কী করেছেন? জয়েন্ট রিভার কমিশনের কোনো রিপোর্ট ছাড়া যে তারা লিপ সার্ভিস একটা দিলে— এটা আসলে বাংলাদেশের মানুষকে প্রতারণা করা হয়েছে।’
‘বন্যায় যখন বাংলাদেশ তলিয়ে গেছে, মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এখন পর্যন্ত ভালো করে হিসাব দেওয়া হচ্ছে না। এই বর্ষকালে ভারত সব গেইট খুলে দিয়েছে। যখন আমাদের পানির প্রয়োজন নাই তখন আমাদেরকে ভাসিয়ে দিচ্ছে। যখন আমাদের পানি প্রয়োজন, তখন উজানে পানি অন্যদিকে সরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে মরুকরণ করে দেওয়া হচ্ছে’— বলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘যে যুমনা নদীর জন্য ব্রিজ হলো এতো বড় নদীর জন্য, এখন যারা শুষ্কা মৌসুমে নদীর ব্রিজের ওপর দিয়ে যান তারা দেখবেন নিচে দিয়ে গরুর গাড়ি যাচ্ছে— এই হচ্ছে অবস্থা। কেন? বাঁধগুলোর কারণে।’
ড. মোশাররফ বলেন, ‘আমাদের নদীর তলদেশ গভীরতা হারাচ্ছে। আপনারা পত্র-পত্রিকায় দেখেছেন সুরমার তলদেশ কী পরিমাণ উচু হয়ে গেছে। যার জন্য এবার এরকম বন্যা। কেন হচ্ছে? এই বাঁধের জন্য হচ্ছে। বাংলাদেশের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির জন্য আজকে এটা করা সম্ভব হচ্ছে।’
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে জনগনেকে সচেতন করে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘জনগণকে সচেতন করতে হবে। অতীতে দেখেছি ফারাক্কা নদীর প্রবাহ নিয়ে ১৯৭৭ সালে চুক্তি করতে হয়েছে। আজকে আমাদেরও ন্যায্য পানির যে অধিকার, সেই অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সোচ্চার হতে হবে।’
সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদের সভাপতিত্বে গোল টেবিল আলোচনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা ড. এস আই খান, পানি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ম ইনামুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যায়ন বিভাগের অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/এনএস