Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাজেট ব্যয়ের ৪২ শতাংশই রাঘব-বোয়ালদের জন্য: ডা. জাফরুল্লাহ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৮ জুন ২০২২ ১৯:১২

ঢাকা: প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেট ব্যয়ের ৪২ শতাংশই রাঘব-বোয়ালদের জন্য বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) দুপুরে ধানমণ্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে মেজর হায়দার মিলনায়তনে প্রস্তাবিত বাজেট পর্যালোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটের সবচেয়ে দুর্বল দিক হচ্ছে শ্রম ও কর্মসংস্থান, শিল্প, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উন্নয়ন বরাদ্দ কমানো। রোহিঙ্গা সমস্যা বিদ্যমান থাকা অবস্থায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন কমানো আরেকটি মারাত্মক ভুল।’

তিনি বলেন, ‘ছোট হাসপাতালের জন্য আমদানিকৃত যন্ত্রপাতির ওপর অত্যাধিক শুল্ক রয়েছে অথচ স্কয়ার, ল্যাবএইড, ইউনাটেড, এভারকেয়ার হাসপাতালের ওপর এই শুল্ক প্রযোজ্য নয়। এরা মাত্র এক শতাংশ শুল্ক দিয়ে এ সব যন্ত্র আমদানি করে। এটা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘শান্তি, সহিষ্ণুতা ও জনবল সৃষ্টি জন্য বরাদ্দ প্রয়োজন। বিশেষ করে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক অবস্থানের জন্য পর্যাপ্ত প্রণোদনা দরকার। পক্ষান্তরে বিদেশে কর্মসংস্থান, দেশে বিদেশি ছাত্রদের অধ্যায়ন, মদ-তামাক, প্রসাধনীর ওপর শতগুণ শুল্ক বৃদ্ধি করা উচিত।’

গ্রামে কর্মরত চিকিৎসকদের প্রণোদনা, উচ্চ শিক্ষার বিশেষ সুযোগ, শিক্ষাভাতা প্রদান, যাতায়াত ভাতা, বিশেষজ্ঞ ভাতা প্রদানের সুপারিশ করে তিনি বলেন, ‘রফতানি আয়ে অগ্রিম আয়কর বৃদ্ধি এবং বেসরকারি শিক্ষা ও সেবা প্রতিষ্ঠানে আয়কর প্রয়োগ ভুল সিদ্ধান্ত।’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘একাধিক শুল্কস্তর হয়রানী দ্বার, ছয় স্তরের পরিবর্তে তিন স্তর বিশিষ্ট আমদানি ১%, ১০% ও ২৫%শুল্ক করলে দুর্নীতি কমবে, জনগণের হয়রানি কমবে, সরকারের রাজস্ব বাড়বে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রাশেদ আল তিতুমীর বলেন, ‘দেশে দ্রব্যমূল্য যে হারে বাড়ছে সে হারে মজুরি না বাড়ার কারণে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস হয়েছে। তার মানে মানুষ আরও গরীব হচ্ছেন। অর্থাৎ একটা ভাঙন তৈরি হয়েছে। যিনি উচ্চবিত্ত ছিলেন তিনি মধ্যবিত্ত হচ্ছেন, যিনি মধ্যবিত্তে ছিলেন তিনি নিম্ন মধ্যবিত্ত হচ্ছেন আর নতুন দরিদ্র তৈরি হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘সমাজের এক শ্রেণির লোক মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দিচ্ছে। এটা ভাঙতে হলে বাংলাদেশে তিনটা মেগা প্রকল্প হওয়ার দরকার- কর্মসংস্থানের প্রকল্প, শিল্পায়ন কৌশল এবং পূর্ণ জীবনচক্রভিত্তিক সর্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি।’

অধ্যাপক রাশেদ আল তিতুমীর বলেন, ‘কর্ম উপযোগী মানুষের সক্ষমতা বাড়াতে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি দরকার। সেটি না হলে উৎপাদনশীলতা বাড়বে না। নতুন শিল্পায়নের জন্য প্রয়োজন প্রনোদণা কাঠামো তৈরি করা। সেটি বাংলাদেশে নাই। বাংলাদেশে আছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। এখানে বৃহৎ শিল্প নেই বললেই চলে। যে এলাকা যে জন্য বিখ্যাত সেখানে সেই শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা প্রয়োজন।’

‘জীবনচক্রভিত্তিক সর্বজনীন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি না থাকলে প্রতিটি দেশ পিছিয়ে পড়বে। যেটি ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। যার বড় প্রমাণ হচ্ছে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া’- বলেন অধ্যাপক রাশেদ আল তিতুমীর।

অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। অনুষ্ঠান সঞ্চালনয় ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু।

সারাবাংলা/এজেড/একেএম

টপ নিউজ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর