বাজারে এলো স্পন্দন রাইস ব্রান অয়েল
২৯ জুন ২০২২ ২১:১৪
ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্যখাতের কোম্পানি এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড উৎপাদনে এসেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শেরপুরে অবস্থিত ফ্যাক্টরিতে উৎপাদন শুরু করেছে কোম্পানিটি। সম্প্রতি জাপানি বিনিয়োগে পরিচালিত মিনোরি বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালনায় আনুষ্ঠানিকভাবে স্পন্দন রাইস ব্রান অয়েল বাজারজাত হতে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে মিনোরি বাংলাদেশ নামে জাপানি একটি কোম্পানি এমারেল্ড অয়েলের ৭ দশমিক ৮০ শতাংশ শেয়ার কিনে মালিকানায় আসে।
বুধবার (২৯ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে— মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি পাঁচ তারকে হোটেলে স্পন্দন রাইস ব্রান অয়েলের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
এ ব্যাপারে এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মিনোরি বাংলাদেশের পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) আন্তরিকতায় এ বছর আমরা উৎপাদন শুরু করেছি। এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এবং তিতাস গ্যাস আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের সমস্যাগুলো সমাধান করে দিলে দেশে চলমান ভোজ্যতেলের সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারবে এমারেল্ড অয়েল।’
এমারেল্ড অয়েলের এ এমডি বলেন, ‘এমারেল্ড অয়েলের দুটি প্রোডাকশন ইউনিট আছে। এর একটির ধানের কুঁড়া ক্র্যাশ করার ক্ষমতা ১৮০ টন, অপরটির ক্ষমতা ১৫০ টন। ইউনিট দুটির দৈনিক মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৩৩০ টন। গ্যাসের অপর্যাপ্ত সরবাহের কারণে শুধু ১৮০ টনের ইউনিটটি সচল আছে। এই ইউনিটে ধানের কুঁড়া ক্র্যাশ করে ৩৫ মেট্রিক টনের মতো অপরিশোধিত তেল পাওয়া যায়। এখান থেকে দৈনিক পরিশোধিত তেল পাওয়া যায় প্রায় ২৬ মেট্রিক টন। এ সক্ষমতা নিয়ে আমরা প্রতিদিন প্রায় ২৬ মেট্রিক টন তেল বাজারজাত করতে পারব।’
আফজাল হোসেন বলেন, ‘উৎপাদন শুরুর মাত্র ছয় মাসের মধ্যে আমরা ব্রেক ইভেনে চলে আসছি। দিনের পুরো সময় গ্যাস সরবরাহ পেলে আমরা পুরোদমে উৎপাদনে ফিরতে পারব। এমন সহায়তা পেলে আশা করছি খুব শীঘ্রই শেয়ারহোল্ডারদের ভালো ডিভিডেন্ড দিতে পারব।’
এমারেল্ড এমডি বলেন, ‘উৎপাদন শুরুর পর আমাদের দুটি বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রথমটি হলো গ্যাসের সংকট। দ্বিতীয়টি ব্যাংক লোন পুনঃতফসিল। কোম্পানিটি যখন বন্ধ হয়ে যায়, তখন তিতাস গ্যাসের বকেয়া ছিল ৩২ লাখ টাকা। পরবর্তীতে ২০২১ সালে তিতাস গ্যাস লাইনচার্জসহ এক কোটি ৬৩ লাখ টাকা বকেয়া বিলের একটি স্টেটমেন্ট দেয়। এ টাকার পুরোটাই শোধ করা হয়েছে।’
মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম, মিনোরি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মিয়া মামুন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার ড. রুমানা ইসলাম, নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান, ল্যাবএইড হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল খাদ্য তত্ত্ববিদ ডা. নুসরাত জাহান দীপা, ল্যাবেএইড হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট কার্ডিয়াক বিভাগের ডা. মো. লোকমান হোসেন।
জানা গেছে, এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ২০০৮ সালে পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত হয় এবং ২০১১ সালে স্পন্দন-ব্র্যান্ডেড রাইস ব্র্যান অয়েল উৎপাদন শুরু করে। ২০১৪ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে আইপিওর মাধ্যমে ২০ কোটি টাকা উত্তোলন করে।লোকসান এবং কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা না করার কারণে কোম্পানিটির শেয়ার ২০১৮ সাল থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরির অধীনে লেনদেন করা হচ্ছিল।
২০১৬ সালে এমারেল্ড অয়েল ১৮ দশমিক দুই কোটি টাকা লাভ করে এবং শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, সোমবার কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দর ছিল ৪৪ টাকা ৬০ পয়সা।
সারাবাংলা/জিএস/একে