বাল্যবিয়ের অনুমতি কোন আদালতে, জানতে চেয়ে হাইকোর্টের রুল
২৯ জুন ২০২২ ২২:৪৫
ঢাকা: বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের-২০১৭ এর ১৯ ধারা অনুযায়ী প্রাপ্ত বয়স হওয়ার আগে বিশেষ ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতিতে বিয়ের করতে কোন আদালতের অনুমতি নিতে হবে, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার (২৯ জুন) এ সংক্রান্ত এক রিটের সম্পূরক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ হাইকোর্ট এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. ইলিয়াস আলী মণ্ডল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় বলেন, আদালত বাল্যবিবাহের ওপরে রুল জারি করেছেন। ঢাকার সবুজবাগের ১৬ বছরের মেয়ে ও ২৫ বছরের এক ছেলে বিয়ে করতে চায়। বাল্য বিবাহ আইনের ১৯ ধারায় বলা আছে বিশেষ পরিস্থিতিতে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে মেয়েকে বিয়ে দেওয়া যাবে। তবে কোন কোর্টের অনুমতি নিতে হবে আইনে সে বিষয়ে উল্লেখ নেই। আজ সেই বিষয়ে শুনান নিয়ে আদালত রুল জারি করেছেন।
এর আগে চলতি বছরের মার্চ মাসে মাহবুবুল আলম বাদল এ বিষয়ে রিট দায়ের করেন। এরপর গতকাল (২৮ জুন) ওই রিট আবেদনের সঙ্গে একটি সম্পূরক আবেদন করেন মোহাম্মদ আরিফুর রহমান।
আজ সম্পূরক আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. ইলিয়াস আলী মণ্ডল।
তিনি বলেন, বাল্য বিবাহ আইনের ১৯ ধারায় বলা আছে বিশেষ পরিস্থিতিতে আদালতের অনুমতি নিয়ে বাল্যবিয়ে দেওয়া যাবে। তবে সেখানে কোন আদালত, তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। এখন অভিভাবকরা কোন আদালতে যাবেন। নারী ও শিশু আদালত, বিশেষ আদালত নাকি অন্য কোথাও। আবার এ বিষয়ে কোনো বিধিও করা হয়নি। তাহলে যদি কেউ তার সন্তানকে বিয়ে দিতে বা করাতে চান কোন আদালতে যাবেন সেই প্রশ্নে রিটটি করা হয়। ওই রিটে মঙ্গলবার (২৮ জুন) সম্পূরক আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
এর আগে, গত ২০ মার্চ ১৬ বছরের মেয়ের সঙ্গে ২৫ বছরের ছেলের বিয়ের ব্যবস্থা করতে তাদের অভিভাবকরা ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। সেখানে অনুমতি না পেয়ে ১৬ বছরের মেয়ের বাবা মো. মাহবুবুল আলম বাদল হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
২০১৭ সালের ১১ মার্চ বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৭ আইনটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। ওই আইনের ১৯ ধারায় (বিশেষ বিধান) বলা হয়েছে, ‘এ আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিধি দ্বারা নির্ধারিত কোনো বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্ত বয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থে, আদালতের নির্দেশ এবং পিতা-মাতা বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতিক্রমে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণক্রমে বিবাহ সম্পাদিত হইলে উহা এ আইনের অধীন অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে না।’
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে