উন্নয়ন ফি নিজের কাছে রাখায় ঢাবি কর্মকর্তার পদাবনতি
৩০ জুন ২০২২ ১৪:০৬
ঢাকা: উন্নয়ন ফি বিভাগের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দেওয়ার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইংরেজি বিভাগের এক কর্মকর্তাকে পদাবনতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডেকেট। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠান সংশ্লিষ্ট প্রণীত ৯টি নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছে সিন্ডিকেট।
নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে গতকাল বুধবার (২৯ জুন) রাতে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
ইংরেজি বিভাগের এক কর্মকর্তার পদাবনতির শাস্তির সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সভায় উপস্থিত একজন সিন্ডিকেট সদস্য সারাবাংলাকে বলেন, ‘শাস্তি হিসেবে পদাবনতি প্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম মাহবুব আলম। তিনি ইংরেজি বিভাগের প্রধান সহকারী ছিলেন। সিন্ডিকেট প্রদত্ত শাস্তি অনুযায়ী এখন থেকে তিনি সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিকের দায়িত্ব পালন করবেন।’
জানা যায়, মাহবুব আলম প্রতি সেমিস্টারে ভর্তির সময় শিক্ষার্থীদের দেওয়া উন্নয়ন ফি বিভাগের অ্যাকাউন্টে জমা না করে নিজের কাছে রেখে দেন। সেই টাকার পরিমাণ ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে বিভাগ তদন্ত শুরু করে। এরপর তিনি সেই টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে দেন। পাশাপাশি চিঠি দিয়ে বিভাগের কাছে ক্ষমা চান তিনি। পরে অর্থ সংক্রান্ত অপরাধ হিসেবে বিষয়টি বিভাগের পক্ষ থেকে বিষয়টি সিন্ডিকেটের আনা হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তাকে পদাবনতির দেওয়া হয়।
এদিকে অনুষ্ঠিত সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানের জন্য প্রণীত ৯টি নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছে সিন্ডিকেট।
এ বিষয়ে সিন্ডিকেট সদস্য মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হারুনর রশীদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা র্যাগ ডে নামে যে অনুষ্ঠান উদযাপন করে এটির নাম এখন থেকে শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠান এখন থেকে কিছু নীতিমালার মধ্যে থেকে করতে হবে। নীতিমালাগুলো হলো- ক্লাস চলাকালে উচ্চস্বরে বাদ্য-বাজনা পরিহার করতে হবে অর্থাৎ কাউকে ডিস্ট্রার্ব করা যাবে না, সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় চেয়ারম্যান বা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও ছাত্র উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সভা করে অনুষ্ঠানসূচি চূড়ান্ত করা, নিজ নিজ বিভাগ বা ইনস্টিটিউটের ভবন চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করা, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) সমবেত হয়ে পথচারীদের চলাচল স্বাভাবিক রাখা, বিভাগের বা ইনস্টিটিউটের সংশ্লিষ্টতায় দুপুরে অথবা রাতে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা, উৎসবের দিন রাত ১০টার মধ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষ করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকা এসবও নীতিমালার আওতাভুক্ত।’
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে র্যাগ ডে অনুষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল। পরে এই সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়নের জন্য উপ-উপাচার্যকে (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি নয়টি নীতিমালা প্রণয়ন করেন।
সারাবাংলা/আরআইআর/এনএস