Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশের ৯ নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে, ফের বন্যার আশঙ্কা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩০ জুন ২০২২ ২৩:১৫

ঢাকা: স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা দেখেছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চল। যে পরিস্থিতি এখনও সামলে উঠতে পারেনি সিলেট, সুনামগঞ্জের মানুষ। জমে থাকা বন্যার পানি ধীরে ধীরে নামলেও বসবাসের উপযোগী না হওয়ায় এখনও অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই আবারও বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বাড়ছে নদ-নদীর পানি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী— এখনও ৯ নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে— এ পরিস্থিতি থাকবে অন্তত দুইদিন। এ কারণে আবারও বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, দেশের বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা নির্ভর করছে ভারতের আবহাওয়ার ওপরে। কারণ ভারতে বৃষ্টি হলে সে পানি বাংলাদেশে ঢুকবে এবং বন্যার সৃষ্টি হবে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী— দেশের সব প্রধান নদ-নদীর পানি এখন বাড়তি। বর্তমানে ৯টি নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে অবস্থান করছে। দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলার পানি কুড়িগ্রাম পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে, ব্রক্ষ্মপুত্রের হাতিয়াঘাট পয়েন্টে ২১ সেন্টিমিটার ওপরে রয়েছে, আপার আত্রাইয়ার পানি ভূষিরবন্দর পয়েন্টে ৫৭ সেন্টিমিটার ওপরে, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ৭৬ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে, কুশিয়ারার পানি অমলদী পয়েন্টে ৯৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, শেওলা পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, পুরাতন সুরমা নদীর পানি দিরাই পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপরে, বাউলাই নদীর পানি খালিয়াজুড়ি পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার এবং সোমেশ্বরী নদীর পানি কমলাকান্দা পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরণ কেন্দ্র বলছে— এ সব নদ-নদীর পানি বিপদসীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় অন্তত সাত জেলায় বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতি শনিবার (২ জুলাই) পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। কোথাও কোথাও নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভুঁইয়া জানান, বর্তমানে দেশের প্রায় সকল প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়তি। দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং এর কাছাকাছি ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে ওই সময়ে মূলত দেশের উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীর (তিস্তা, আপার আত্রাই, ধরলা, দুধকুমার, আপার করোতোয়া, টাঙ্গন, পুর্নভবা ও কুলিখ) পানির সমতল দ্রুত বাড়তে পারে। এ কারণে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপরে প্রবাহিত হতে পারে।

এ পরিস্থিতিতে শুক্রবার (১ জুলাই) দেশের উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম ও দিনাজপুর এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।

এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। পূর্বাভাস অনুযায়ী— রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন এই পরিস্থিতি আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে পাঁচ দিন পর বৃষ্টিপাতের প্রবনতা কমতে শুরু করবে।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে ফেনীতে ৭৪ মিলিমিটার। সিলেটে ৪৪ মিলিমিটার।

সারাবাংলা/জেআর/একে

নদ-নদীর পানি বন্যা বন্যার আশঙ্কা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর