Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মহারাষ্ট্রেও সফল বিজেপি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১ জুলাই ২০২২ ১২:৩১

ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে পদত্যাগ করার পর বিদ্রোহী শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। আর সাবেক মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ হয়েছেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী।

এ ব্যাপারে ডয়চে ভেলে বলছে, বিজেপি’র বুদ্ধিতে শিবসেনার ৪০ বিধায়ককে ভাগিয়েছেন একনাথ শিন্ডে। তাকেই মুখ্যমন্ত্রী বানিয়ে পুরস্কৃত করা হলো।

মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ মুখ্যমন্ত্রী হতেই চেয়েছিলেন। তিনি ডেপুটির দায়িত্ব চাননি। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় তিনি ঘোষণা দেন শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, তিনি দলের সংগঠনে কাজ করবেন। কিন্তু, এরপর বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা বলেন, ফড়নবিশকে উপ-মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া উচিত। অমিত শাহও টুইট করে বলেন, ফড়নবিশ উপ-মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন। শপথ নেওয়ার পর ফড়নবিশ বলেছেন, দলের নির্দেশ সবার উপরে।

কেন শিন্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী করল বিজেপি?

বিজেপি সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে, এর কারণ মহারাষ্ট্র থেকে উদ্ধব ঠাকরের প্রভাব শেষ করে দিতে চাইছে তারা। বিজেপি প্রথমে উদ্ধবের জন্য অপেক্ষা করেছিল। কিন্তু, তিনি বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাতে রাজি হননি উদ্ধব। এখন শিন্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী করে বিজেপি তার অনুগত গোষ্ঠীকেই শিবসেনার প্রধান গোষ্ঠী হিসাবে তুলে ধরতে চাইছে। সামনেই মুম্বাইসহ একাধিক পৌরসভা নির্বাচন। সেখানে জয় পাওয়া বিজেপির জন্য খুবই জরুরি। ওই নির্বাচনে উদ্ধব বা তার নেতৃত্বাধীন জোটকে হারাতে চায় বিজেপি। আর তা করতে গিয়ে শিন্ডের শিবসেনাকেই বালাসাহেব ঠাকরের আসল উত্তরাধিকারী হিসাবে তুলে ধরতে চায় তারা।

এভাবেই বিজেপির আড়াই বছরের চেষ্টা সফল হলো। উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্রে শিবসেনা, এনসিপি ও কংগ্রেসের জোট সরকারের পতন হলো। বিজেপি আবার ক্ষমতায় এল।

এর আগে, রাজ্যপালের নির্দেশ বহাল রেখে বুধবার রাতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় বৃহস্পতিবার সকালেই বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে উদ্ধব ঠাকরেকে। সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত আসার কয়েকমিনিটের মধ্যেই অনলাইনে উদ্ধব জানিয়ে দেন, তিনি পদত্যাগ করছেন। তারপরই তিনি রাজভবনে রাজ্যপালের কাছে যান। মুখ্যমন্ত্রীর পদ এবং বিধান পরিষদের সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বালাসাহেব ঠাকরের ছেলে উদ্ধব ঠাকরে।

মহারাষ্ট্রে এনসিপি ও কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে জোট করে আড়াই বছর সরকার চালিয়েছেন তিনি। করোনাকালের পুরো সময়টা সামাল দিয়েছেন। ঠাকরে পরিবার থেকে এই প্রথম কেউ মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেছিলেন। কার্যত প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাহীন ঠাকরে এতদিন ধরে জোটের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং সেখানে খুব বেশি সমস্যার মধ্যে পড়েননি। আড়াই বছর আগে উদ্ধবকে মুখ্যমন্ত্রী করতে রাজি হয়নি বিজেপি। তারপরই এনসিপি ও কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠন করেছিলেন তিনি। আড়াই বছর পর বিজেপি শিবসেনারই এক বিক্ষুব্ধ নেতাকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসাল।

বিজেপির সাফল্যের নেপথ্যে

ভোটের ফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই বিজেপি মহারাষ্ট্রে সরকার গঠনের জন্য চেষ্টা করে গেছে। এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারসহ কয়েকজন বিধায়ককে নিজেদের দিকে এনে সরকার গঠনের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তারপর থেকে তারা শিবসেনা ভাঙার চেষ্টা করে গেছে। শেষ পর্যন্ত একনাথ শিন্ডের মাধ্যমে তারা সফল হয়েছে।

উদ্ধবের এখন এমনই অবস্থা হয়েছে যে, তার সঙ্গে মাত্র ১৫ জন বিধায়ক আছেন। বাকি সব শিন্ডের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। মাত্র তিন জন মন্ত্রী আছেন ঠাকরের সঙ্গে। বাকি ৯ মন্ত্রী শিন্ডের সঙ্গে। এভাবেই শিবসেনা বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে সরকার ভাঙার খেলায় সফল হয়েছেন শিন্ডে তথা, বিজেপি।

বিজেপি নেতারা বলছেন, শিবসেনার মন্ত্রী-বিধায়করা জোট নিয়ে অসন্তুষ্ট হয়ে বিদ্রোহ করেছেন। আর শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছেন, বিজেপি ক্ষমতা পাওয়ার জন্য এই কাজ করেছে।

বালাসাহেব ঠাকরের সময় শিবসেনায় তার কথাই ছিল শেষ কথা। কিন্তু তার ছেলে উদ্ধবের সময় দেখা গেল, বিধায়করা ঠাকরে পরিবারের নির্দেশ মানছেন না। তবে সঞ্জয় রাউতদের দাবি, দলের বাকি নেতা ও কর্মীরা তাদের সঙ্গে আছেন। পরবর্তী লড়াইয়ে সেটা স্পষ্ট হবে। কিন্তু শিন্ডে দাবি করেছেন, তারাই প্রকৃত শিবসেনা ও বালাসাহেবের ভাবধারা তারাই এগিয়ে নিয়ে চলেছেন।

কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশের পর মহারাষ্ট্র

মুম্বাইকে বলা হয় ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী। তাই ভারতের রাজনীতিতে মহারাষ্ট্রের আলাদা গুরুত্ব আছে। মুম্বাই পৌরসভার আয় অনেক রাজ্যের বাজেটের থেকে বেশি। সেই রাজ্য আবার বিজেপি জোটের দখলে এল। কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশের পর মহারাষ্ট্রেও তারা দল ভেঙে সরকার গঠন করল।

সারাবাংলা/একেএম

টপ নিউজ বিজেপি মহারাষ্ট্র শিবসেনা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর