শিক্ষকসহ সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ
২ জুলাই ২০২২ ১৫:৩৫
ঢাকা: দেশে সাম্প্রতিক সময়ে সংখ্যালঘু শিক্ষকদের ওপর হামলাসহ সকল সাম্প্রদায়িক নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং মিথ্যাচারের দায়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
শনিবার (২ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ শেষে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর চলমান সহিংসতা ও নির্যাতন অস্বীকার করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে যে বিবৃতি দিয়েছেন তাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হতাশ হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এমন মিথ্যাচারের দায় স্বীকার করে অনতিবিলম্বে তাকে পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় আগামী সংসদ নির্বাচনে যেকোনো দল থেকে তাকে প্রার্থী করা হলে সংখ্যালঘু ভোটাররা তাকে বর্জন করবে বলে হুঁশিয়ার করেন নেতারা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত দুর্গাপূজার সময় কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালীসহ দেশব্যাপী ২৬টি জেলায় পূজামণ্ডপ ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও তাওবের সময়ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী একই রকম মিথ্যাচার করেছিলেন।
ঐক্য পরিষদের নেতারা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে বারবার জিরো টলারেন্সের ঘোষণা দিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সহিংসতাকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য দলীয় নেতা ও কর্মীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছিলেন। আর সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনাকে অস্বীকারের প্রবণতা থেকে প্রশ্ন জাগে তিনি প্রকারান্তরে মন্ত্রণালয়ে কার স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তার এই ধরনের মিথ্যাচার ও ঘটনাসমূহকে অস্বীকারের প্রবণতা থেকে মনে হয়, তিনি প্রকারন্তরে প্রতিক্রিয়াশীল সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এহেন ভূমিকায় দ্বিগুণভাবে উৎসাহিত হয়ে সাম্প্রদায়িক দুর্বৃত্তরা শিক্ষক সম্প্রদায়সহ সাধারণ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন নিপীড়ন অব্যহত রেখেছে বলে অভিযোগ করেন। সকল প্রকার নির্যাতন নিপীড়নের আশু অবসান এবং সাম্প্রদায়িক দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় এনে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান নেতারা।
ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাবেক মুখপাত্র ও নেত্রী নূপুর শর্মার মহানবীর বিরদ্ধে অশালীন মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তারা বলেন, উপমহাদেশের সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ জনগণ এতে নিদারুণভাবে ক্ষুদ্ধ ও মর্মাহত হয়েছে। এ ব্যাপারে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির মন্তব্যকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়ে তারা বলেন, ধর্মীয় উস্কানিমূলক যেকোনো মন্তব্য বা উক্তি স্বাধীন ধর্মাচারের ও ধর্মানুশীলনের পরিপন্থী।
সমাবেশ থেকে আগামী ১৬ জুলাই বিকেল ৩টায় সারাদেশে নির্বাচনী ইশতেহারে সরকারি দল কর্তৃক সংখ্যালঘু স্বার্থবান্ধব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নসহ একই দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সমাবেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি (হিন্দু) নিম চন্দ্র ভৌমিক, সভাপতি (বৌদ্ধ) ঊষাতন তালুকদার, সভাপতি (খ্রিস্টান) নির্মল রোজারিও, সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুব্রত চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনিন্দ্র কুমার নাথ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার ও তাপস কুমার পালসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এনএস