পদ্মা সেতু জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের বড় মাইলফলক: প্রধানমন্ত্রী
৩ জুলাই ২০২২ ১৬:০১
ঢাকা: পদ্মা সেতুকে দেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের বড় মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সেতু নির্মাণে পাশে থাকার জন্য জনগণের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের দেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের একটি বিরাট মাইলফলক। এর সব কৃতিত্ব বাংলাদেশের জনগণের। এভাবে আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি বাংলাদেশের জনগণের কাছে সত্যিই কৃতজ্ঞ। তাদের শক্তি (আমার জন্য) সবচেয়ে বড় শক্তি।
রোববার (৩ জুন) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। নিজের সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।
পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ সফলভাবে বাস্তবায়ন এবং সেতুটি চালু হওয়ার জন্য মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উত্তরে তিনি বলেন, এই শুভেচ্ছা আমার দেশের জনগণের জন্য। আমার জন্য নয়, বাংলাদেশের মানুষের জন্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রমত্তা পদ্মার বুকে সেতু তৈরি করাটাই একটি ইতিহাস। সেক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী ও সচিব যারা ছিলেন, অর্থ বরাদ্দে এতটুকু কার্পণ্য করেননি। বরং কীভাবে আমরা নিজেদের টাকায় (সেতুটি নির্মাণ) করতে পারি, সে বিষয়টি আরও সহজ করে দিয়েছেন তারা।
এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়সহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১২ সাল থেকেই তো এই যুদ্ধ শুরু। কত অপবাদ, ষড়যন্ত্র এর জন্য মোকাবিলা করতে হয়েছে। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো— আর আগে সেতুর কাজ শুরু করা গেলে আরও আগেই শেষ করা সম্ভব হতো।
পদ্মা সেতু নিয়ে যারা সমালোচনা করেছিলেন, তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আরেকটি বিষয় আমার কাছে অবাক লাগে। আমাদের কিছু অর্থনীতিবিদ ও জ্ঞানী-গুণীরা বলেছিলেন— এটা ভায়াবল হবে না, কে এখান দিয়ে থেকে চলবে, কোনো টাকা উঠবে না! কিন্তু এখন কী দেখা যাচ্ছে?
সেতুর ফলে মানুষের জীবন-জীবিকার আমূল পরিবর্তন ঘটবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু তৈরির আগে প্রতিবছরই উত্তরবঙ্গে মঙ্গা দেখা দিত। অথচ এই একটি সেতু নির্মাণের পর সেখানের আর মঙ্গা নেই। পদ্মা সেতুও দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সাপ্লাই-চেইন স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ইলিশের মৌসুম এসে যাওয়ায় একদিকে রাজধানীতে বসেই তাজা ইলিশ পাওয়া সম্ভব হবে, অন্যদিকে জেলেরাও লাভবান হবে। পদ্মা সেতু তাই আমাদের দেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের একটি বিরাট মাইলফলক।
পদ্মা সেতু নির্মাণের শুরুতে বিশ্বব্যাংকের মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, এই অভিযোগ কখনোই গ্রহণযোগ্য ছিল না। এরপরই তো ঘোষণা দিলাম, নিজের টাকাতেই পদ্মা সেতু করব, অন্যের টাকা নেব না। সেভাবেই আমরা সেতুটি করেছি।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর