জুনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩৮.৯৩ শতাংশ মোটরসাইকেল আরোহী
৪ জুলাই ২০২২ ১২:০৩
দেশে গত জুন মাসে মোট দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৬৭টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫২৪ জন, আহত হয়েছেন ৮২১ জন। এরমধ্যে ১৯৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২০৪ জন, যা মোট নিহতের ৩৮.৯৩ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪২.১৮ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১০৭ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২০.৪১ শতাংশ। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে যানবাহনের চালক ও সহকারী রয়েছেন ৮৬ জন।
সোমবার (৪ জুলাই) রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সময়ে ৮টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত, ১৬ জন আহত হয়েছেন এবং ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ১৮টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং ৪ জন আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ২০৪ জন (৩৮.৯৩%), বাস যাত্রী ২৪ জন (৪.৫৮%), ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি-ডাম্পার আরোহী ৩৯ জন (৭.৪৪%), মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-জীপ যাত্রী ১৪ জন (২.৬৭%), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা-হিউম্যান হলার) ১০৬ জন (২০.২২%), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-মাহিন্দ্র-চান্দেরগাড়ি)১৩ জন (২.৪৮%) এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-প্যাডেল ভ্যান আরোহী ১৭ জন (৩.২৪%) নিহত হয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৫৯টি (৩৪.০৪%) জাতীয় মহাসড়কে, ১৭৪টি (৩৭.২৫%) আঞ্চলিক সড়কে, ৭২টি (১৫.৪১%) গ্রামীণ সড়কে এবং ৫৬টি (১২%) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৬টি ১.২৮% সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার ধরন
দুর্ঘটনাসমূহের ১০৩টি (২২.০৫%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৯৮টি (৪২.৩৯%) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১০৯টি (২৩.৩৪%) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৩৮টি (৮.১৩%) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১৯টি (৪.০৬%) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহন
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে- ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ ২৬.২২%, ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি-তেলবাহী ট্যাঙ্কার-প্রিজনভ্যান-সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ট্রাক ৪.২৮%, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-জীপ-পুলিশ পিকআপ, আর্মি ট্রাক ৩.৬৫%, যাত্রীবাহী বাস ৯.৮৩%, মোটরসাইকেল ২৬.৭৩%, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা-হিউম্যান হলার) ১৮.৭৮%, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন-(নসিমন-ভটভটি-টমটম-মাহিন্দ্র-চান্দের গাড়ি) ৬.৪৩%, বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-প্যাডেল ভ্যান ২.৯% এবং অন্যান্য (ডাম্পার-ড্রামট্রাক-রোড রোলার-ইটভাঙ্গার গাড়ি) ১.১৩%।
দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণ
সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাসমূহ ঘটেছে ভোরে ৫.৭৮%, সকালে ৩৩.৮৩%, দুপুরে ২৪.৪১%, বিকালে ১৫.৬৩%, সন্ধ্যায় ৫.৩৫% এবং রাতে ১৪.৯৮%।
দেশে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণসমূহ:
১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন।
২. বেপরোয়া গতি।
৩. চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা।
৪. বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা।
৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল।
৬. তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো।
৭. জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা।
৮. দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা।
৯. বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি।
১০ গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।
সারাবাংলা/এএম
সারাবাংলা/এএম