‘উন্নয়নের এত যে ঢাকঢোল, তাহলে লোডশেডিং কেন’
৫ জুলাই ২০২২ ১৩:২৬
ঢাকা: ‘উন্নয়নের এতো যে ঢাকঢোল বাজানো হলো, তাহলে সারাদেশে লোডশেডিংয়ে দুর্বিষহ পরিস্থিতি কেন?’— এমন প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রিজভী বলেন, ‘বিদ্যুৎ নিয়ে নানা রঙচঙের কথা বলা হয়েছে। জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে ১৫২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, যার বেশিরভাগই এখন অচল। ফলে লোডশেডিংয়ের ভয়াবহ ছোবলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ রাজধানীও বিপণ্ন হয়ে পড়েছে।’
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম ও আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ‘কুইক রেন্টাল’ বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিজভী বলেন, “বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ‘কুইক রেন্টাল’ স্থাপন করতে ভর্তুকি দিতে হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। এই টাকা কীভাবে খরচ হচ্ছে, সেটি নিয়ে কেউ যেন প্রশ্ন তুলতে না পারে সে জন্য ‘দায়মুক্তি’ আইন করা হয়েছে। বিদ্যুতের সীমাহীন ব্যর্থতার মূল কারণ ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর আত্মীয়স্বজনের বেপরোয়া লুণ্ঠন। এরা স্বদেশ ও সমাজকে এড়িয়ে আত্মীয় তোষণ করতে গিয়েই বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দিয়ে জনগণকে শোষণ করার পথ উন্মুক্ত করেছে।”
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার উন্নয়নের হাতির ভেতরের দাঁত যে নেই, সেটি এখন স্পষ্ট। তার উন্নয়ন যে একটা ভোজবাজি, তা এখন দৃশ্যমান। ফাঁপা উন্নয়নের তাস দিয়ে যে মানুষের মন জেতা যাবে না, সেটি তিনি বোঝার চেষ্টা করেননি। বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন এমনই যে, যে জনপদের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাওয়া হয় সেটিকেই মনে হয় অন্ধকার গোরস্থান।’
রিজভী বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধন নিয়ে যে কাণ্ড করা হলো তা আরব্য রজনীর আলিফ লায়লার কাহিনিকেও হার মানাবে। অধিকাংশ প্রিন্ট মিডিয়ার প্রথম পাতা জুড়ে শেখ হাসিনার গুণকীর্তনের কাহিনি ছাপা হয়েছে। ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় হরদম প্রচার করা হয়েছে শেখ হাসিনার উচ্ছ্বাস।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ এক সুখরাজ্য নির্মাণ করেছে। সমগ্র শিক্ষার মূলে ছাত্রলীগের আগ্রাসনে এক ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাদের রাজনীতির কারণে এখন দেশে দুর্বৃত্তায়ন ও ইতরায়নের জয়জয়কার চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক হল সমূহে বরাদ্দ পত্র দেয় ছাত্রলীগ। সাধারণ ছাত্রদের হলে সিট পেতে হল প্রশাসনের নিকট নয়, ছাত্রলীগ নেতাদের নিকট যেতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই হলগুলো নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার।’
‘ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, শাহজালাল, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হলগুলো ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রণ করছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে হলের সিট বিক্রি করছে ছাত্রলীগ। সাধারণ ছাত্রদের শঙ্কা ও সংশয়ের মাঝে দিনাতিপাত করা ছাড়া উপায়ান্তর নেই। আওয়ামী সরকারের মদদে আইন আদালতের নির্মম প্রবঞ্চনা ও কপটতার কারণেই ছাত্রলীগ শিক্ষা জীবনকে বিপজ্জনক চোরাগর্তের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে। এরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিপজ্জনক জোনে পরিণত করেছে,’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।
সারাবাংলা/এজেড/এএম