জনপ্রতিনিধিদের মানুষের উন্নয়নে কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
৫ জুলাই ২০২২ ১৫:১১
ঢাকা: নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মানুষের উন্নয়নে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। এখানে কেউ কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেবেন না। সব ধর্মের স্বাধীনতা থাকবে।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কুসিক নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ইতিহাসে এটা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। এত শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অতীতে আর দেখা যায়নি। জনগণের ভোটের অধিকার যেন নিশ্চিত থাকে সে অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আওয়ামী লীগ সৃষ্টি হয়েছিল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। একদিকে ভোটের অধিকার, অপরদিকে বাঙালি জাতির সার্বিক উন্নয়নে আওয়ামী লীগ কাজ করে গেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭১ সালের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন। সেজন্য দেশের প্রত্যেক মানুষ ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করা আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। সেটাই আমরা করে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক অধিকারের মাধ্যমেই মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে। দেশে বিভিন্ন ধর্মালম্বী মানুষের বসবাস। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের কল্যাণে আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে। আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাস করি। আমরা চাই দেশ সব সময় অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গড়ে উঠবে। সব ধর্মের স্বাধীনতা বাংলাদেশে থাকবে, যেটা আমাদের পবিত্র কোরআন শরিফে বলা আছে। কেউ কারও ধর্মের অনুভূতির ওপর আঘাত করবে না বা ধর্ম পালন করায় বাধা দেবে না। বাংলাদেশ সেই চেতনায় বিশ্বাস করে।’ দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা একেবারে তৃণমূলের মানুষের জন্য করা বলেও জানান শেখ হাসিনা।
কুসিক নির্বাচন পরিচলানায় যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা যারা নির্বাচিত হয়েছেন মনে রাখবেন, আপনারা জনগণের প্রতিনিধি। জনগণ ভোট দিয়ে আপনাদের নির্বাচিত করেছে। যারা ভোট দেয়নি আপনারা তাদেরও প্রতিনিধি। কে ভোট দিয়েছে আর কে ভোট দেয়নি সেটা বিষয় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের দায়িত্ব প্রতিটি এলাকায় যাতে উন্নয়ন হয়, প্রতিটি মানুষের অধিকার যাতে নিশ্চিত হয় সেলক্ষ্যে কাজ করা। যখন আমি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছি তখন আমি দেশের প্রধানমন্ত্রী। কে ভোট দিয়েছে, কে ভোট দেয়নি সেটা আমার বিবেচ্য বিষয় না। প্রতিটি মানুষের উন্নয়ন আমার লক্ষ্য।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আপনার দায়িত্ব হচ্ছে, প্রত্যেক মানুষের যাতে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়, প্রতিটি এলাকায় যাতে সমান উন্নয়ন সেট নিশ্চিত করা। আমি মেয়র, কাউন্সিলরদের বলব, উন্নয়ন পরিকল্পনা নিতে গিয়ে ভাববেন না কত কমিশন পাওয়া যাবে। মানুষ কতটুকু উপকৃত হবে, রাষ্ট্র কতটুকু লাভবান হবে সেটা মাথায় রাখবেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনা এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে দেশে প্রতিনিয়তই খাদ্যদ্রব্যসহ প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়ছে। অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। ভোজ্য তেল ও সারের দাম বেড়েছে। প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। বিদ্যুতে মোটা অংকের ভর্তুকি দিচ্ছি, কত দেবো? নিজেদের যেটুকু জমি আছে ব্যবহার করবেন। এক ইঞ্চি জমিও ফেলে রাখবেন না। জমি যেন পড়ে না থাকে। নিজেরা উৎপাদন করে নিজেরাই খাবো।’
অনুষ্ঠানে কুসিকের নব নির্বাচিত মেয়র আরফানু হক রিফাতকে শপথ পড়ান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর নব নির্বাচিত ৩৬ জন কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরদের শপথ পড়ান স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম