ভরা মৌসুমেও হাসি নেই কামারশিল্পীদের
৭ জুলাই ২০২২ ০৮:৩৯
জয়পুরহাট: আর মাত্র কয়েকদিন বাকি পবিত্র ইদুল আজহার। তবুও বিক্রি নেই লোহার চাপাতি, ছুরি ও বটির। প্রতিবছর হাতুড়ি পেটানোর টুং টাং শব্দে মুখরিত হয়ে থাকে কামার পল্লিগুলো। যা কোরবানির ইদকে ঘিরে আরও বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এবার দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। সম্প্রতি লোহা ও কয়লার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লোহার সামগ্রী তৈরিতে পুঁজি সংকটে পড়েছেন কামাররা। আর এ কারণে হাসি নেই জেলার কামারশিল্পীদের মুখে। এ অবস্থায় সরকারি সহযোগিতার দাবি জানান এ পেশার সঙ্গে জড়িতরা।
জেলার বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন ঘুরে এ চিত্র ধরা পড়ে। জানা গেছে, গত বছরও কোরবানির ইদের আগে ব্যস্ত সময় পার করেছেন জয়পুরহাটের দুর্গাদহ ও পুনট বাজারের কামার শ্রমিকরা। ইদের আগে লোহার সামগ্রীর চাহিদা মেটাতে যেখানে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে হত এসব এলাকার কামারদের। কিন্তু কয়লা ও লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার সেই ব্যস্ততা কমে গেছে।
কোরবানির ইদকে সামনে রেখে অনেকেই কামারশিল্পীদের কাছে পশু কাটার ছুরি, চাপাতি, দা ও বটিসহ নানা জিনিস ক্রয় করে থাকেন। উপকরণের দাম অনুযায়ী তৈরি করা লোহার সামগ্রীর দাম বেশি হওয়ায় কমে গেছে এর চাহিদা। ফলে জেলায় কামার শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা চরম বিপাকে পড়েছেন বলে জানা গেছে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার দুর্গাদহ বাজারের কামারশিল্পে জড়িত ব্যবসায়ী অনীল কর্মকার ও কালাই উপজেলার পুনট বাজারের বিপুল কর্মকার জানান, গত বছর যে লোহার দাম ছিল প্রতি কেজি ৮০ টাকা। এখন তা কিনতে হচ্ছে ১২০ টাকায়। আর ১০ টাকা কেজির কয়লা কিনতে হচ্ছে ৪০ টাকায়। লোকসান ও পুঁজি সংকটে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। প্রতি বছর কোরবানির ইদের আগে ক্রেতাদের সংখ্যা অনেক বেশি থাকে, কিন্তু এবার চিত্রটা আলাদা। এমনকি সময় মতো বেতন দিতে না পারায় কর্মচারীও পাওয়া যাচ্ছে না।
জয়পুরহাট বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক লিটন চন্দ্র ঘোষ জানান, কোরবানি ইদের আগে কামারশিল্পীদের সকল পণ্যের চাহিদা রয়েছে। কামারদের আর্থিক বা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে বিসিক জেলা কার্যালয়ে যোগাযোগ করলে তাদের সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।