বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান যথার্থ: তথ্যমন্ত্রী
৭ জুলাই ২০২২ ২৩:২১
ঢাকা: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যথার্থই সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়েছেন। ফ্রান্সসহ পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতেও এই অনুরোধ জানানো হয়েছে। সমালোচকদেরকে অনুরোধ জানাব, তারাও যেন এ বিষয়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে মন্ত্রী এ কথা বলেন। সমালোচকদের বিশ্ব পরিস্থিতির দিকে তাকানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পৃথিবীব্যাপী জ্বালানি সংকট শুরু হয়েছে এবং জ্বালানি ও এর পরিবহন মূল্য দু’টিই অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে।
মন্ত্রী বলেন, আজ অস্ট্রেলিয়ায় লাখ লাখ পরিবারকে বলা হয়েছে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার জন্য। সেখানে কোনো অঙ্গরাজ্যে ১০ ঘণ্টা, কোনো অঙ্গরাজ্যে ১৫ থেকে ১৮ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে। ইউরোপে, যেখানে কোনো সময় বিদ্যুৎ যায় না, সেখানেও লোডশেডিং হচ্ছে। জাতিসংঘের স্থায়ী পরিষদের স্থায়ী সদস্য ফ্রান্সের মতো দেশেও বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার জন্য বলা হয়েছে।
ড. হাছান বলেন, আমাদের দেশে বিদ্যুৎ খাত মূলত জ্বালানিনির্ভর। কয়লাভিত্তিক সব বিদ্যুৎকেন্দ্র পুরোপুরিভাবে উৎপাদনে আসেনি। সে কারণে সরকার গত বছর বিদ্যুৎ খাতে ২৮ হাজার কোটি টাকা এবং জ্বালানি খাতে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। এরপরও উন্নয়নশীল দেশ বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন। হ্যারিকেন এখন সাজিয়ে রাখার বিষয়, কারণ হ্যারিকেনের ব্যবহার নেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা সরকার গঠন করার আগে দেশে ৪০ শতাংশের কম মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পেত। আজ শতভাগ মানুষের দোরগোড়ায় বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। কিন্তু দোরগোড়ায় পৌঁছে গেলেও সেটি সাশ্রয়ীভাবে ব্যবহার করার আহ্বান কোনোভাবেই ভুল নয়। অর্থাৎ আমি যখন রুমে থাকব না, তখন বাতিটা জ্বালিয়ে রাখা বা পাখাটা চালিয়ে রাখা কখনোই সমীচীন নয়।
হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ আহ্বানের পর যারা সমালোচনা করছেন, সেই বিএনপিকে অনুরোধ জানাব পেছনে ফিরে তাকানোর জন্য। আপনারা কী করেছিলেন? মানুষ যখন বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল, তখন গুলি করে মানুষকে হত্যা করেছেন।
মন্ত্রী এসময় বিএনপির আমলের কয়েকটি সংবাদপত্রের ছবি দেখিয়ে সংবাদ থেকে বিভিন্ন অংশ উদ্ধৃত করেন। তিনি আরও বলেন, যারা বুদ্ধিজীবী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে গর্ববোধ করেন, কারণে-অকারণে সমালোচনা করেন, পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধে আপনাদের এক সময়ের সমালোচনা এখন আপনাদেরই গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে, সুতরাং এই ক্ষেত্রেও অহেতুক সমালোচনা করবেন না।
হাজারটা পদ্মা সেতু বানালেও লাভ নেই, বাকস্বাধীনতা নেই— বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, বাকস্বাধীনতা না থাকলে তিনি এবং বিএনপি নেতারা তাহলে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বকবক করেন কীভাবে? আর ‘পদ্মা সেতু হাজারটা বানালেও লাভ হবে না’— এটি কোনো দায়িত্বশীল শীর্ষ রাজনীতিবিদের বক্তব্য হতে পারে না। রাস্তার আইল্যান্ডের ওপর দাঁড়িয়ে কিছু পাগল বক্তব্য দেয়, তাদের বক্তব্য হতে পারে।
সারাবাংলা/জেআর/টিআর