Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তুলির মরদেহ উদ্ধার: সাংবাদিক রফিকুল রঞ্জুকে জিজ্ঞাসাবাদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৪ জুলাই ২০২২ ২১:০১

ঢাকা: সাংবাদিক সোহানা পারভীন তুলির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় দৈনিক সমকালের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক রফিকুল রঞ্জুকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। আরও তথ্য জানার জন্য তার এবং তুলির মোবাইল ফোনের ফরেনসিক প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বুধবার (১৩ জুলাই) হাজারীবাগ থানাধীন রায়ের বাজার শেরেবাংলা রোডের ২৯৯/৫ বাসার দ্বিতীয় তলা থেকে সোহানা পারভীন তুলির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই বাসার কেয়ারটেকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী— সাংবাদিক রফিকুল রঞ্জু মোটরসাইকেল নিয়ে তুলির বাসায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন।

বিজ্ঞাপন

তুলির মৃত্যুর পেছনে রফিকুল রঞ্জুর কোনো প্ররোচনা আছে কি না— সে বিষয়টি সামনে রেখে তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই ঘটনায় ‘আত্মহত্যা’র সুস্পষ্ট নমুনা মিললেও এর পেছনের কারণ খতিয়ে দেখছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুন- তুলির মরদেহ উদ্ধার: মোটরসাইকেলে আসা যুবককে খুঁজছে পুলিশ

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র সারাবাংলাকে জানায়, মোটরসাইকেলটির মালিকানা নিশ্চিত হওয়ার পর রফিকুল রঞ্জুকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। তার কাছ থেকে সোহানা তুলির বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য মিলেছে।

কেয়ারটেকার আজিমুদ্দিনের ভাষ্য অনুযায়ী—তুলির বাসায় গত কয়েক মাস ধরে রফিকুল রঞ্জু আসা-যাওয়া করতেন। তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে ওই বাসায় যেতেন। সেই মোটরসাইকেলে তুলিও মাঝে মধ্যে বেরিয়ে যেতেন বলে সারাবাংলাকে জানান আজিমুদ্দিন।

তুলির মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে ওই বাসার কেয়ারটেকারের কাছ থেকে বুধবার (১৩ জুলাই) একটি মোটরসাইকেলের নম্বর পায় পুলিশ। মোটরসাইকেলের নিবন্ধন নম্বরটি (৫১৫৬০৭) যাচাই-বাছাইয়ের জন্য বিআরটিএ’তে পাঠানো হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- সাংবাদিক সোহানা তুলির ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) বিআরটিএ থেকে সরবরাহ করা দু’টি নম্বর ( ঢাকা মেট্টো হ-৫১৫৬০৭ ও ঢাকা মেট্টো ল-৫১৫৬০৭) পায় পুলিশ। দু’জন ব্যক্তির নাম-ঠিকানাও জানা যায়। সেই নম্বর ও নাম ধরে ওই বাসার কেয়ারটেকারের শরণাপন্ন হয় পুলিশ। কেয়ারটেকার আজিমুদ্দিন ঢাকা মেট্টো ল-৫১৫৬০৭ নম্বরের মোটরসাইকেলটি শনাক্ত করেন। সেটির মালিক সাংবাদিক রফিকুল রঞ্জু।

এই নম্বরের মোটরসাইকেলটি কেয়ারটেকারের বর্ণনা অনুযায়ী মিলে যায় এবং তিনি তা শনাক্ত করেন। একইভাবে ওই মোটরসাইকেলের মালিক রফিকুল রঞ্জুকে কেয়ারটেকারের সামনে আনা হলে কেয়ারটেকার তাকে চিনতে পারেন।

এরপর বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে রফিকুল রঞ্জুকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে— রফিকুল রঞ্জুর মোবাইলে বেশকিছু কথোপকথন পাওয়া গেছে। আরও কথোপকথন উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। কিছু ক্ষুদে বার্তা পাওয়া গেছে। আর কিছু ক্ষুদে বার্তা তিনি ডিলিট করে দিয়েছেন।

কথোপকথন অনুযায়ী আত্মহত্যার প্ররোচনা পেয়েছেন কি না— জানতে চাইলে একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে যাতায়াতের বিষয়টি রফিকুল রঞ্জু স্বীকার করেছেন। তাদের মধ্যে একটি সম্পর্ক চলছিল সেটিও বলেছেন। বেশ কিছু ঝগড়ার রেকর্ড পাওয়া গেছে। সবশেষ ইদুল আজহার একদিন পর গত মঙ্গলবার (১২ জুলাই) তুলির বাসায় যান রঞ্জু। সেখান থেকে বের হওয়ার পর একাধিকবার মোবাইলে কল করেছেন তুলি। রঞ্জু ওই দিন কল ধরেননি, এমনকি কল ব্যাকও করেননি।’

আরও পড়ুন- সাংবাদিক সোহানা তুলির মৃত্যুতে ডিএসইসি’র উদ্বেগ

ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, এরপর তুলি কিছু একটা লিখে মেসেজ পাঠিয়েছিলেন যা রফিকুল রঞ্জু তার মোবাইল থেকে ডিলিট করে দিয়েছেন। কী মেসেজ দিয়েছিলেন, তা জানতে ফরেনসিক প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তবে মেসেজের বিষয়ে খোলসা করে কিছু বলেননি রঞ্জুও।

তদন্ত সূত্র আরও জানিয়েছে—প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর রঞ্জুকে পুলিশ বাসায় পাঠিয়েছে। এ ছাড়া তাকে ঢাকার বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনে যেকোনো সময় ডাকলে রফিকুল রঞ্জুকে হাজির হতে বলা হয়েছে।

তুলির পরিবারের সদস্য এবং সহকর্মীদের দাবি- আত্মহত্যার পেছনে কোনো প্ররোচনা থাকলে সেক্ষেত্রে যেন তুলি ন্যায় বিচার পান। সে জন্য সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা।

এদিকে, ময়নাতদন্তের পর বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) বিকেলে সোহানা তুলির মরদেহ যশোরে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হাজারীবাগ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে।

সারাবাংলা/ইউজে/একে

টপ নিউজ সাংবাদিক সোহানা তুলি সোহানা পারভীন তুলি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর