Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গরমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিতে শিশুরাও, জেনে নিন করণীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৫ জুলাই ২০২২ ০৯:৪৫

ঢাকা: রাজধানীসহ সারাদেশেই বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমে অতিরিক্ত জনসমাগমে বাড়তে পারে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি। শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়ষ্করাই নয়, রোদের মাঝে দৌঁড়ঝাপে শিশুদেরও হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়তে পারে। শিশুরা যেন রোদের মধ্যে বেশি দৌঁড়ঝাপ করতে না পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখা প্রয়োজন।

বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) সারাবাংলাকে এসব কথা বলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ।

অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ বলেন, দেশে বর্তমানে কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। একইসঙ্গে বর্তমানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। তবে এই কয়েকদিন যে তাপপ্রবাহ দেখা যাচ্ছে, তাতে নানা রকমের অসুস্থতার পাশাপাশি তীব্র গরমের কারণে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।

তিনি বলেন, হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি বয়স্কদের। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তারা যেন রোদের মধ্যে বাইরে না বের হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন। যদি বাইরে যেতে হয় তবে যেন ছাতা ব্যবহার করেন। বাইরে কোনো কাজে বের হলে সঙ্গে বিশুদ্ধ পানির বোতল রেখে সেটা অল্প অল্প করে পান করা যেতে পারে। কোনোভাবেই যেনো পানিশূণ্যতায় না ভুগেন সেটি অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এখন ইদুল আজহার বন্ধের কারণে অনেক স্কুলেই ছুটির সময় চলছে। কিন্তু গ্রামের বাড়িতে বা বাসায় শিশুরা যেন বেশি রোদের মধ্যে দৌঁড়ঝাপ না করে সেদিকটায় লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। তারাও যেন পর্যাপ্ত পানি পান করে সেদিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন।

অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহ বলেন, ইদের বন্ধ শেষে অনেকেই কাজে যোগ দিচ্ছেন। এর মাঝে রয়েছে আমাদের শ্রমিক শ্রেণি যাদের মূলত বাইরেই কাজ করতে হয়। তবে একটানা কাজ না করে যদি তারা মাঝে মধ্যে ছায়াতলে অবস্থান করতে পারেন তা খেয়াল রাখা প্রয়োজন। এ সময় তাদেরও পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করার পাশাপাশি ওরস্যালাইন— সেটা না পেলে হালকা লবনযুক্ত পানি অথবা ডাবের পানি পান করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক গার্মেন্টস ও অন্যান্য বড় বড় শিল্পকারখানা আছে যেখানে অনেকে কাজ করেন। তীব্র গরমের মাঝে যারা কাজ করেন, তাদের সবারই হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। এক্ষেত্রে তাদেরও খোলা বাতাসযুক্ত স্থানে বসার ব্যবস্থা করে দেওয়া যেতে পারে। যারা রাস্তায় বসে কাজ করেন, তাদের উপরে ছাতা বেঁধে তার নিচে বসে কাজ করার পরামর্শ দেন তিনি।

এছাড়াও রিকশা চালানো শ্রমিক বা অন্যান্য কাজের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরাও যেনো কাজের ফাঁকে ছায়াযুক্ত স্থানে বিশ্রাম নিতে পারে সেটা খেয়াল রাখা প্রয়োজন বলেও মনে করেন অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহ।

তিনি বলেন, তীব্র গরমে খুব বেশি টাইট পোশাক পরা আসলে ঠিক হবে না কোনোভাবেই। এক্ষেত্রে শরীর থেকে ঘাম কম বের হয়। আর তাই ঢিলেঢালা পোশাক পরাটাই ভালো। তবে প্রয়োজন না থাকলে খুব একটা বেশি বাইরে না বের হলেই ভালো সবার জন্যে।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে যায় তবে তাকে প্রাথমিকভাবে দ্রুত ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। আর যদি কেউ ঘরে আক্রান্ত হয়ে থাকে তবে তাকে দ্রুত ঠান্ডা স্থানে নিতে হবে। কাপড় ভিজিয়ে শরীর মুছে দেওয়া যেতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে বেশিমাত্রায় পানি পান করানোর পাশাপাশি ফলমূলের সরবত পান করাঙও যেতে পারে।

তবে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার যদি কমে যায়, প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে, পালস কমে অজ্ঞান যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গেই তাকে হাসপাতালে নিতে হবে বলেও জানান অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ।

উল্লেখ্য, মানুষের দেহে স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। তবে প্রচণ্ড গরমে মানুষের শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে হিট স্ট্রোক হয়।

সারাবাংলা/এসবি/এএম

টপ নিউজ হিট স্ট্রোক


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর