‘জিএম কাদের-রিজভী অশিক্ষিতের মতো বক্তব্য দিচ্ছেন’
১৫ জুলাই ২০২২ ১৯:১২
ঢাকা: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং বিএনপির রুহুল কবির রিজভী শিক্ষিত মানুষ বলে জানতাম। তারা শিক্ষিত হয়েও অশিক্ষিতের মত বক্তব্য দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমাদের বৈদেশিক ঋণের বিপরীতে সুদের ব্যয় জিডিপির মাত্র দুই শতাংশ। সরকারি ঋণ জিডিপির ৩৬ শতাংশ। জিডিপির ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত সরকারি ঋণ নেওয়া যায়। সেখানে আমাদের ঋণ মাত্র ৩৬ শতাংশ। যা ৫৫ শতাংশের চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ কম। আমাদের বৈদেশিক ঋণ জিডিপির ১৬ শতাংশ। জিডিপির ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণ নিরাপদ। এই অর্থনৈতিক ইনডেক্সগুলো যে সমস্ত রাজনীতিবিদরা পড়েন না, তাদের কী বলবো?
শুক্রবার (১৫ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে বাংলাদেশ শ্রীলংকা হতে পারে জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের এমন বক্তব্য ও বাংলাদেশের রিজার্ভ এখন সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে গেছে বলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
এর আগে, স্যাটেলাইট টেলিভিশন এটিএন বাংলার ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন মন্ত্রী।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ আর শ্রীলংকা এক জিনিস নয়। বাংলাদেশ আজ পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধে কখনো দেরি করেনি। সময়মতো ঋণ পরিশোধ করার ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ওপরের দিকে। জিএম কাদের সাহেব শিক্ষিত মানুষ বলে জানতাম। তিনি কেন উদ্ভ্রান্ত এবং বিএনপির রিজভীর মতো কথা বললেন কিংবা অশিক্ষিত মুর্খের মতো কথা বললেন সেটি আমার বোধগম্য নয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, কদিন আগে কানাডাভিত্তিক সংবাদ প্রতিষ্ঠান রিজিওনাল ক্যাপিটালিস্ট ব্লুমবার্গ ডাটা নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ঝুঁকিপূর্ণ ইনডেক্স প্রকাশ করছে। সেখানে তালিকায় ২৫টি দেশের নাম দেওয়া হয়েছে। সেই তালিকায় অনেক বড় বড় দেশ আছে। কিন্তু বাংলাদেশের নাম নেই। এই সংবাদগুলো কি এই সমস্ত রাজনীতিবিদরা পড়েন না? না পড়েই তারা যে সমস্ত বক্তব্য রাখছেন, এগুলো তো গুজব রটানোর সামিল। আমি আশা করবো, শিক্ষিত মানুষগুলো যেন অশিক্ষিতের মতো কথা না বলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেবরা তো আদালতের রায় মানে না জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির আইজীবীরাই তো আদালতে প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথি মেরেছিল। অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রধান বিচারালয়ে তারা লাথি মেরেছিল। তারা তো আইন-আদালত কোনটাই মানে না, আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায়।
তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসন আছে বিধায় আওয়ামী লীগের অনেক এমপিকে আদালতের রায়ে জেলে যেতে হয়, আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার হয়। বিএনপি আইন আদালত মানে না, সেজন্য তারা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায়, আদালতের সঙ্গে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। শাস্তি পাওয়া সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তার প্রশাসনিক ক্ষমতা বলে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। সেজন্য মির্জা ফখরুলের উচিৎ বিবৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো।
নির্বাচন কমিশনের সংলাপে বিএনপি যাবে না এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমত বিএনপি তো নির্বাচনকেই ভয় পায়। নির্বাচনকে যেহেতু ভয় পায়, সেজন্য নির্বাচন কমিশন সংলাপে যাবে না বলে খবর বেরিয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। আশা করবো, তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে, তারা ইসি সংলাপে যাবে। সেখানে গিয়ে তাদের ওজর-আপত্তি থাকলে সেটা জানিয়ে আসবে।
বিএনপির রিজভীর বক্তব্যের জবাব দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না জানিয়ে সাংবাদিকদের তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি সবসময় উদভ্রান্তের মতো কথা বলেন। পদ্মাসেতু নির্মাণের সময় উদভ্রান্তের মতো কথা বলেছেন। সেতু নির্মিত হয়ে যাওয়ার পর ওনাদের উদভ্রান্তির মাত্রা আরও কয়েক ডিগ্রি বেড়ে গেছে। করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার সময় নানান গুজব রটানোর সঙ্গে তারা যুক্ত ছিল।
সারাবাংলা/আরডি/একেএম